ঢাকা,  শুক্রবার
২৯ মার্চ ২০২৪

The Daily Messenger

রাউজানে নিখোঁজের পঞ্চম দিনে তিন সন্তানের জননীর গলিত লাশ উদ্ধার

রাউজান(চট্টগ্রাম)প্রতিনিধি:

প্রকাশিত: ১৭:০৭, ২ ডিসেম্বর ২০২২

রাউজানে নিখোঁজের পঞ্চম দিনে তিন সন্তানের জননীর গলিত লাশ উদ্ধার

চট্টগ্রামের রাউজানে নিখোঁজের পঞ্চম দিনে বসত ঘরের পেছনে টয়লেটের সংলগ্ন নালা হতে তিন সন্তানের জননীর গলিত লাশ উদ্ধার করেছেন রাউজান থানার পুলিশ। ১ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১০টায় রাউজান থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে লাশ উদ্ধার করেন।নিহত নারীর নাম রোকসানা আকতার (২৮)। তিনি রাউজান উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের পাঠান পাড়া আশরাফ খান মাতব্বরের বাড়ির মুহাম্মদ আজম (৪০) স্ত্রী।

স্থানীয় ইউপি সদস্য উদয় দত্ত অর্ক বলেন, বিকাল ৫টার দিকে খবর পেয়ে চুয়েট ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আরিফুর রহমান সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দেখি বাড়ির সীমানা প্রাচীরের ভিতরে বসত ঘরের পেছনে টয়লেট সংলগ্ন নালার একপাশে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এই সময় নালা উপর হতে স্লেভ সরিয়ে দেখি নারীর গলিত লাশ। তবে লাশের কোন চেহারা দেখা যাচ্ছে না।
নিহতের চাকরিজীবী বোন তাহমিনা আকতার বলেন, আমি শুক্রবার বোনের বাড়িতে বেড়াতে আসি।

এই সময় আমার বোন বলেছিলেন তার মামা শাশুড় ইছহাক, ননদ ফেরদৌসি আক্তার, ননদের স্বামী সোহেল প্রায় সময় নির্যাতন করেন, তারা সম্পত্তি বিক্রির টাকা আত্মসাৎ করতে চাই। আমি বোনকে সান্ত্বনা দিয়ে পরের দিন শহরে চাকরিতে ফিরে যায়। সোমবারে বোনের মোবাইলে বারবার ফোন দিয়ে সংযোগ না পেয়ে ননদের স্বামী সোহেলের নম্বরে ফোন দিলে তিনি বলেন আমার বোন পালিয়েছে। তার কোন খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।পরের দিন মঙ্গলবারে আমরা বোনের বাড়িতে এলে মামা শাশুড়সহ স্থানীয় চারজন ছেলে আমাকে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং আমাদের মারধর করেন।

আমার বোন কোন পরপুরুষ সাথে পালিয়েছেন বলে নানান কটুকথা বলেন। আমাদের আটকে রাখেন। পরে স্থানীয় মেম্বার আমাদের উদ্ধার করলে আমি চলে যায়। পরের দিন আমার মামা সাদ্দাম হোসেন থানায় জিডি করেন। আজ পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি আমার বোনের লাশ পাওয়া গেছে। আমার বোনের স্বামী সহজ সরল।  তেমন কোন কাজ কর্ম করতে পারে না। তাদের সম্পত্তি আত্মসাতের আমার বোনকে তার মামা শাশুড়,  ননদ ও ননদের স্বামী মিলে হত্যা করেছে।নিহতের ননদ ফেরদৌস আকতার বলেন, গত রবিবার আমার ভাবী নিহত হয়েছেন বলে সংবাদ পেয়ে কদলপুর শাশুড় বাড়ি হতে এখানে আসি। আজ বিকালে টয়লেটে গেলে পাশের নালা হতে গন্ধ আসলে গিয়ে দেখি স্লেভের নিচে নালায় আমার  ভাবির লাশ।

পরে মামাসহ অন্যান্যদের মাধ্যমে মেম্বরকে ফোন দিলে পুলিশসহ এখানে আসেন। আমার ভাই মোহাম্মদ আজম এবং মা রিজিয়া বেগমকে পুলিশ নিয়ে গেছেন।ঘটনাস্থলে আনোয়ারা পুলিশ সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির, রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল হারুন, চুয়েট ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আরিফুর রহমানসহ রাউজান থানার পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিলেন। এই বিষয়ে পুলিশ কোন মন্তব্য করতে রাজি হয় নি। রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ১১টা) পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণের প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত ৮বছর পূর্বে  ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিলে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা পোমরা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের তিন সৌদিয়া প্রজেক্ট এলাকার মোহাম্মদ মফিজের মেয়ে রোকসানা আক্তারের সাথে আজমের বিয়ে হয়। তাদের তিন পুত্র সন্তান রয়েছে। বড় ছেলের মাহফুজ (৭), মেঝ ছেলে কায়েস( ৫) এবং ছোট ছেলে আট মাসের মোহাম্মদ রমজান।

ডেইলি মেসেঞ্জার/এএইচএস

dwl
×
Nagad