ঢাকা,  রোববার
১৩ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

কেন্দুয়ায়

গ্রাম্য সালিশকে কেন্দ্র করে যুবককে অমানবিক নির্যাতন

ময়মনসিংহ ব্যুরো

প্রকাশিত: ১৩:২৮, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪

গ্রাম্য সালিশকে কেন্দ্র করে যুবককে অমানবিক নির্যাতন

ছবি : মেসেঞ্জার

নারী সংক্রান্ত একটি গ্রাম্য সালিশকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের বিরোধের জেরে বজলু নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক আহত করার অভিযোগ ওঠেছে প্রতিপক্ষের লোকজনের বিরুদ্ধে। 

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার আমতলা রোয়াইলবাড়ী ইউনিয়নে গত ৩ সেপ্টেম্বর সকালে কলসহাটি গ্রামে নারী সংক্রান্ত একটি সালিশ অনুষ্ঠিত হয়। পরে ৪ সেপ্টেম্বর দুপুরে স্থানীয় বঙ্গবাজারে শেখ নাজমুল হকের উপস্থিতে ওই সালিশকে কেন্দ্র করে কলসহাটি গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম মধুর সাথে একই গ্রামের দিদারুল হক বজলুর কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে দুজনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়।

এ সময় দিদারুল হক বজলুকে রফিকুল ইসলাম মধু নিচে ফেলে দিলে বজলু তার হাতে থাকা মোটরসাইকেলের চাবি দিয়ে মধুর পেটে ও মুখে আঘাত করলে মধু রক্তাক্ত আহত হন। পরে তাকে কেন্দুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং এ ঘটনায় মধু থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। 

পরবর্তীতে গত ৭ সেপ্টেম্বর দুপুর বেলায় মধুর লোকজন বজলুকে তার বসতঘর থেকে মারপিট করতে করতে ধরে নিয়ে যান তারা। পরে রফিকুল ইসলাম মধুর চাচা গোমেজ আলীর বাড়িতে নিয়ে গিয়ে বজলুকে দড়ি দিয়ে বেধে বেদড়ক মারপিট করে। এ সময় বজলুর বৃদ্ধ পিতা ইছব আলীও আহত হন।

এদিকে বজলুকে মারপিটের পর ওইদিন পার্শ্ববর্তী কুতুবপুর গ্রামের ইউপি সদস্য হারেছ মিয়া স্থানীয় রোয়াইল বাজারে যাওয়ার পথে আহত বজলুকে পড়ে থাকতে দেখে দ্রুত ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। বিষয়টি নিয়ে কথা হলে ইউপি সদস্য হারেছ মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আমতলা রোয়াইলবাড়ী ইউনিয়নের কলসহাটি গ্রামের ইছব আলীর ছেলে দিদারুল হক বজলু (৩৫) ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসাধীন বজলুর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে-তিনি জানান একই গ্রামের শেখ নাজমুল হক ও মোস্তফা কামাল বাবলুর নির্দেশে মধুর নেতৃত্বে তার ওপর এ নির্যাতন করা হয়েছে। তার ওপর অমানবিক নির্যাতন করে হাত ও পা ভেংগে দেওয়ায় চিকিৎসা শেষে থানায় এসে সে লিখিত অভিযোগ দায়ের করবে। 

আহত দিদারুল হক বজলুর পিতা ইছব আলী বলেন, আমার ছেলেকে রফিকুল ইসলাম মধুসহ ১০-১২ জন লোক এসে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যায় এবং মারধর করে ফেলে রাখে। আমার একটা মাত্র ছেলে। কেউ তাকে ফেরাতেও যায়নি। তার ডান হাত ও পায়ের একাধিক স্থানের হাড় ভেঙে গেছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলসহাটি গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এমন অন্যায় ও অমানবিক ঘটনা এর আগে আমরা আমাদের কলসহাটি গ্রামে কখনও দেখিনি। নিজের ঘর থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে বর্বরভাবে মারপিট করার বিষয়টিকে আমরা নিন্দা জানাই।

এ বিষয়ে বজলুর প্রতিপক্ষ রফিকুল ইসলাম মধু বলেন, বজলু বাড়িতে থেকে আমাদের বিরুদ্ধে বাজে কথা বার্তা বলতেছিল। তাই আমাদের লোকজন উত্তেজিত হয়ে তাকে মারধর করেছে। 

বিষয়টি নিয়ে কথা হলে কেন্দুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান আকন্দ বলেন, আগের ঘটনায় থানায় একটা অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারা বলল মীমাংসা করবে তাই এফআইআর হয়নি। দ্বিতীয় ঘটনাটি মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মেসেঞ্জার/নজরুল/আজিজ