ঢাকা,  শনিবার
২৭ জুলাই ২০২৪

The Daily Messenger

নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলায় ড. সৌমিত্র শেখর

ময়মনসিংহ ব্যুরো

প্রকাশিত: ১৭:০৩, ২৫ মে ২০২৪

আপডেট: ১৭:০৫, ২৫ মে ২০২৪

নিউইয়র্কে আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলায় ড. সৌমিত্র শেখর

ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জ্যামাইকা পারফর্মিং আর্টস সেন্টারে শুক্রবার (২৪ মে) শুরু হয়েছে নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা ২০২৪। ‘যত বই তত প্রাণ’ স্লোগানকে ধারণ করে চারদিনব্যাপী এই আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলার আয়োজন করেছে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন।

এই আয়োজনে বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হয়ে যোগদান করেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর।

চারদিনব্যাপী এ মেলার বিভিন্ন আয়োজনে স্বশরীরে উপস্থিত থাকবেন উপাচার্য। বইপিপাসু শিক্ষক ও গবেষকদের সঙ্গে মত বিনিময় ও মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন।

মেলার উদ্বোধনী অধিবেশন শুরু হয় শুক্রবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায়। আমন্ত্রিত অতিথিদের মঞ্চে আমন্ত্রণ জানান মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের সভাপতি ড. নুরন নবী ও নিউইয়র্ক আন্তর্জাতিক বাংলা বইমেলা ২০২৪-এর আহ্বায়ক হাসান ফেরদৌস।

উদ্বোধনী সঙ্গীত ‘বাংলাদেশের হৃদয় থেকে’ পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যক্রম শুরু হয়। মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরসহ আমন্ত্রিত অন্য অতিথিরা ফিতা কেটে ও মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্জ্বালন করে বইমেলার উদ্বোধন করেন।

চারদিনব্যাপী এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের মাননীয় রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন এমপি, বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য প্রফেসর ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারোয়ার আলী, বিশ্বভারতীর প্রফেসর ড. প্রহ্লাদ রায়, কথা সাহিত্যিক ও চ্যানেল আইয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফরিদুর রেজা সাগরসহ অন্যরা।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, বাংলাকে নিয়ে আমরা যারা কাজ করি তাদের অনেক দায়িত্ব। আমাদের দেশের ৫৬ হাজার বর্গমাইলের মধ্যে বাংলাকে আবদ্ধ রাখলে চলবে না। বরং বাংলাকে আমাদের ছড়িয়ে দিতে হবে। আমি নিউইয়র্কের মেট্রোরেলে বাংলা লেখা দেখেছি। এটা দেখে গর্বে আমার বুকটা ভরে গেছে।

এর কারণ- এখানকার বাংলাভাষী মানুষগুলো ভেতরে ভেতরে বাংলাকে লালন করে যাপন করে। এই যে, লালন ও যাপন এটিকে আরো বেশি ধরে রাখতে হবে। তাহলে বাংলাকে নিয়ে একুশে ফেব্রুয়ারিতে সালাম, বরকত যে স্বপ্ন দেখেছিল সেটিকে বাস্তবায়ন করতে পারবো।

বাংলা ভাষার বিশ্বায়নে আন্তজার্তিক বইমেলার অবদানের কথা তুলে ধরে ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমি মনে করি যে, এটি বাংলার বিশ্বায়ন। বাংলাকে ছড়িয়ে দিতে হবে, বাংলা নিয়ে ছাড়িয়ে যেতে হবে। ১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ব্রিটিশ ভারতের একটি আঞ্চলিক ভাষাকে সারা বিশ্বের বুকে ছড়িয়ে দিয়েছিল।

১৯৭৪ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তিনি বাংলাকে জাতিসংঘে উচ্চারণ করে বলেছিলেন এটিই আমাদের ভাষা। এরপর নিউইয়র্কে আর্ন্তজাতিক গ্রন্থমেলা বাংলাকে বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে গুরুত্বপূর্ণ ও ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করবে।

তিনি আরও বলেন, আমরা যখন ৫০ বছর পরে বাংলার বিশ্বায়ন নিয়ে কথা বলবো তখন এ মেলার কথা নিশ্চয়ই আলোচিত হবে। তখন মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের নাম আসবে। আয়োজক কমিটির নাম আসবে। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চে রবীন্দ্রনাথের গান, নজরুলের গানসহ দেশাত্ববোধক সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়। বহ্নিঃশিখা সঙ্গীত পরিষদ, উদীচীসহ চারটি সংগঠন গান পরিবেশন করেন। এরপর মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের সৌজন্যে গণহত্যার চিত্রপ্রদশনী হয়। প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের ট্রাস্টি ডা. সারোয়ার আলী।

এছাড়াও ‘যতদূর বাংলা ভাষা ততদূর বাংলাদেশ’ শিরোনামে কবিতা পাঠ হয়। ‘আমরা নতুন যৌবনের দূত’ শিরোনামে গীতি আলেখ্য পরিবেশিত হয়। আবৃত্তি ও সঙ্গীত পরিবেশন করে প্রখ্যাত রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, লিলি ইসলাম, তুষার মাহবুবসহ অন্যরা। এভাবে রাত্র ১১টার সময় প্রথমদিন সমাপ্ত হয়।

মেসেঞ্জার/আপেল