ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
১৮ এপ্রিল ২০২৪

The Daily Messenger

মন আমার কত কথা বলে

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ১ নভেম্বর ২০২২

আপডেট: ০৯:০৩, ১ নভেম্বর ২০২২

মন আমার কত কথা বলে

দেখতে দেখতে সুইডেনে গ্রীষ্মের সময় ফুরিয়ে গেলো। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নতুন অনুপ্রেরণা নিয়ে ছাত্রছাত্রীদের আমন্ত্রণ এবং সেই সঙ্গে বরণ করছে। কর্মজীবনে কিক অফের (kick off) মধ্যদিয়ে ছোটবড় কোম্পানিগুলো কর্মচারীদের মোটিভেশন (motivation) ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন ধরণের এক্টিভিটিস (activates) বা টিম বিল্ডিংয়ের (team building) ব্যবস্থা করছে। রাজা এবং রাজ পরিবার সংসদ ভবন উদ্বোধন করেন প্রতি বছরই সুইডিশ ট্র্যাডিশন (tradition) অনুযায়ী। রাজা মাননীয় স্পিকারের অনুরোধে জাতীয় সংসদ উদ্বোধন করে থাকেন। মঙ্গলবার, ২৭ সেপ্টেম্বর, সংসদের (রিক্সডাগের) নতুন কার্যদিবস শুরু হয়েছে, জাতীয় সংসদ ২০২২/২৩।

নতুন প্রজন্মের অনেকের জন্য প্রথম স্কুল জীবন শুরু হয়েছে। কেউ নতুন কিছু পেলো কেউ আবার পুরনো কিছু হারালো। চারিদিকে বেশ পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে। সকালটা আর সূর্যের কিরণ দিয়ে শুরু হচ্ছে না। আকাশ মেঘে ঢাকা কিছুটা অন্ধকার এ সময়টিতে। খোলামেলা বা হাল্কা কাপড়ে চলাফেরা করার সময় শেষের পথে। হঠাৎ এক ঝলক সূর্যের আলো যখন গাছপালার ওপর পলক ফেলছে ঠিক তখন এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য সবার নজর কেড়ে নিচ্ছে। কারণ শরতের আবির্ভাব একটু একটু দেখা দিতে শুরু করেছে।

কমপক্ষে এক মাসের বেশি সময় নিখিলের সৌন্দর্য এত চমৎকার হবে যা শুধু ইউরোপে বিশেষ করে সুইডেনে পরিষ্কারভাবে অনুভব করা যাবে। গাছের পাতাগুলো তার রঙ পাল্টিয়ে রংধনুর মত সাত রঙে রাঙ্গিয়ে তুলতে শুরু করেছে। শিল্পীর তুলিতে আঁকা শরতের এই মনোমুগ্ধকর দৃশ্য কেড়েছে অনেক টুরিস্টের মন। সুইডেনের শরত সত্যিই এক মন জুড়ানো দৃশ্য যা না দেখলেই নয়। আমি কাছ থেকে দেখছি, আমি দূর হতে দেখছি আর মুগ্ধ হয়ে চেয়ে থাকছি আর অভিভূত হচ্ছি প্রতিক্ষণ।

আমি সৃষ্টিকর্তার প্রতি আমার প্রাণঢালা ভালোবাসা আর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি, তুমি আমাকে এই সুন্দর ভুবনের সবকিছু উপভোগ করার সুযোগ দিয়েছো। তুমি শ্রেষ্ঠ, তুমি মহান, তুমি পরম দয়ালু এবং করুণাময় রাব্বুল আলামিন। গ্রীষ্মের মতো শরতও এক সময় শেষ হয়ে যাবে। শুরু হবে হেমন্ত। সুইডেন চার ঋতুর দেশ (গ্রীষ্ম, বসন্ত, শরত এবং শীত) তাই হেমন্ত শরতের মধ্যেই পড়ে। গাছপালা তার পুরো সৌন্দর্য হারাবে। পুরো সুইডেনকে অন্ধকার গ্রাস করবে। আসবে শীত, বরফে ঢেকে যাবে সারাদেশ। নতুন জীবনের অপেক্ষায় আর প্রতীক্ষায় দাড়িয়ে থাকবে নানা ধরনের গাছপালা সাড়িসাড়ি। দেখে মনে হবে দেহ আছে, প্রাণ নাই।

শীতের শেষে আসবে বসন্ত আবার ফিরে। গাছপালা ফিরে পাবে নতুন জীবন। সেই আশা এবং প্রত্যাশা নিয়ে জীবন চলছে চলবে পৃথিবীর বুকে। বাংলাদেশেও শরত ঋতু সুইডেনের মতই সব সৌন্দর্যের চিরন্তন প্রতীক। বলা যেতে পারে শরতে বাংলাদেশ শুধু সুন্দর নয়, অপূর্ব, অতুলনীয় ও অসাধারণ সুন্দর। শরতে ঘুমের ঘোরে অনেকেই স্বপ্ন দেখবে আবার কেউ জেগে জেগে সোনার বাংলাকে তার মনের মত করে গড়বে এবং হয়তো সাজাবে সুইডেনের শরতের মত করে।

কেন যেন মনে হচ্ছে আমার সেই ছোট বেলার দিনগুলোর কথা। সেই শরতের বিকালে নীল আকাশের নিচে দোল খাওয়া শুভ্র কাশফুলকে। প্রকৃতির পালাবদলের খেলা তখন চলতো শরতের মাঝামাঝি সময়। এখনও কি বাংলাদেশের বাইরে প্রকৃতিতে চোখ রাখলে ধরা পড়ে শরত; -প্রকৃতির সেই মোহনীয় রূপ, কাচের মতো স্বচ্ছ নীল আকাশে গুচ্ছ গুচ্ছ সাদা মেঘের ভেলার ছোটাছুটি, নদীর বা বিলের ধারে কিংবা গ্রামের কোনো প্রান্তে মৃদু সমীরণে দোল খাওয়া শুভ্র কাশফুলের স্নিগ্ধতা, আর সেই বিল ও ঝিলের পানিতে শাপলা শালুক ফুলের সুন্দর মায়াবী দৃশ্যের সমারোহ! বাংলাদেশের শরতকে সুইডেনে বসে অনুভব করা সত্যি এক স্বপ্ন যা শুধু জেগে জেগে নয় ঘুমের ঘোরেও তাকে দেখি।

তবে বাংলাদেশের বাইরে যে প্রকৃতি কত বিস্তৃত এবং বিশেষ করে শরত, সে সম্পর্কে আমাদের জ্ঞানের মাত্রা আগে কতটা ছিল তা বলতে পারব না। গল্প-উপন্যাসে কতটা পড়েছি বা বুঝেছি তা আমার ঠিক মনেও নেই। বলা হয় বয়স বাড়লে বা যৌবনের আবির্ভাব হলে মানুষ প্রকৃতির প্রেমে পড়ে।

প্রেমে পড়েছি বলব না তবে প্রকৃতির অনেক না দেখা সৌন্দর্য আমি দেখেছি সুইডেনে। এ দৃশ্য যে কত বিশাল, তা এ দেশে না আসলে হয়তো দেখা হতো না। গাছের পাতার রং যে কত বাহারি হতে পারে, তা না দেখলে বিশ্বাসই করা কঠিন। প্রকৃতির ছাপ আমি শুধু হাঁটতে পথে নিজের চোখে দেখি না, দেখি এখানের প্রতিটি মানুষের চোখে। প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে এদের মনেও আলোড়ন ঘটে। তবে সুইডেনের প্রকৃতিতে বারো মাসই নতুন কিছু না কিছু ঘটে।

গ্রীষ্মের আমেজ, বসন্তের বাহার মানুষের দেহ মনকে ভরিয়ে রাখে শত রকমের অজানা ফুলের বাহারে। রমণীরা যেন রঙিন হয়ে ওঠে এক একটা ফুলের মতো। সূর্যের একটু আলো পেতে এবং শরীরের ফ্যাঁকাসে সাদা রং বাদামি করতে সব সৈকতে বসে রৌদ্রস্নান করে। লেক থেকে শুরু করে সব সমুদ্রের পাড়ে রমণীদের মেলা বসে। ভালোবাসার ছোঁয়া নিয়ে তারা যেন বসে আছে পথ চেয়ে কারো জন্য। তারপর হঠাৎ করেই যেন প্রকৃতি বদলাতে শুরু করে। অক্টোবর মাস আসতে না আসতেই শুরু হয় আকাশে-বাতাসে পরিবর্তন। বেশির ভাগ সময় আকাশ মেঘে ঢাকা, বিরহী রমণীর করুণ মুখ। হঠাৎ বৃষ্টি আসে ঠাণ্ডা ঝাপটা নিয়ে। সে বৃষ্টি ভালোবাসার কথা বলে না।

এই ভালোবাসার জায়গাটা দখল করতে শুরু করে তীব্র শীতের তুষার। কিন্তু উষ্ণতার পাশে হঠাৎ করে আসা শীতল হাওয়া প্রকৃতির মতোই যেন বিধ্বস্ত করে মানুষের মন। ঝলমলে নগরীও যেন কেমন বিষণ্ণ হয়ে ওঠে। আর এটি আমি বিগত প্রায় চল্লিশ বছর ধরেই লক্ষ্য করছি হ্যালোউইনের সঙ্গে সঙ্গে পুরো নগরী ঝোড়ো বাতাসে ভুতুড়ে হয়ে ওঠে। রাতের অন্ধকারে পথ চলতে কেমন গা ছম ছম করে।

জীবন ফুল শয্যা নয় এখন বুঝি তা হাঁড়ে হাঁড়ে। অল্প বয়সী থেকে বয়স্ক কর্মজীবী মানুষের জীবন এমন কাছে থেকে দেখলে বোঝা যায় জীবন কতটা কষ্টের! আবহাওয়া যাই থাক, কাজ করতে হয় সবাইকে। প্রচণ্ড শীত এক সময় সহ্য হয়ে, স্বাভাবিক হয়ে ওঠে, কিন্তু মৌসুমের এ বদল হতে একটু সময় লাগে। ব্যস্ত নগরীর মানুষ কষ্ট উপেক্ষা করে প্রকৃতির মতোই চলছে নিজের ভাগ্য বদলাতে। সব আছে তবু কি যেন নেই মনে হয়।

চোখের সামনে সুন্দর সাজানো গাছগুলোর পাতা ফলের মতোই যেন পেকে গেল। কখনো লাল, কখনো বেগুনি, কখনো তীব্র হলুদ, তারপর উত্তাল বাতাসে ঝিরঝির করে পাতা গুলো পড়তে শুরু করছে। একটু দাঁড়ালেই দেখা যাচ্ছে বৃষ্টির মতো ঝরছে। প্রতিটা গাছে পাতাও প্রচুর। সব পাতা যখন পড়ে যাবে দেখবো চারিপাশে শুধু পাতাবিহীন গাছ, নিদারুণভাবে গাছগুলো পাতা-নিঃস্ব হয়ে যাবে। মনে হবে প্রেম ছাড়া জীবন আর পাতা-নিঃস্ব গাছ। প্রকৃতির পরিবর্তনের সঙ্গে ক্ষণিক বিরহ লেগে থাকে মানুষের চোখে মুখেও। বিবর্ণ প্রকৃতির সঙ্গে সঙ্গে বিবর্ণ হতে থাকে মানুষের মন। চলতে থাকবে প্রস্তুতি দীর্ঘ বিরহ, দীর্ঘ শীতের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার এক সময়। তখন আর হাল্কা কাপড় থাকবে না কারো গায়ে। শরীরে কাপড়ের পরিপূর্ণতায় ভরে যাবে।

যাই হোক না কেন শরতের এই প্রকৃতির বাহারে চিত্রশিল্পীরা আছে মেতে আঁকাঝোকার মাঝে। আমি প্রতিদিন একবার হলেও ঘরের বাইরে যাচ্ছি। হাঁটছি কখনও প্রিয় সঙ্গিনীর সাথে কখনও বা একা। দেখছি এবং উপভোগ করছি মন প্রাণ হৃদয় ভরে শরতের এই বাহার। স্রষ্টার সৃষ্টির অপূর্ব সৌন্দর্য যার বর্ণনা করার মত ভাষা আমার জানা নেই, তবে অনুভব করার মত মন মানসিকতা রয়েছে, তাই মানবতা ও মনুষ্যত্বের উপর কিছু কথা বলতে চাই। মানবতা কী এবং কীভাবে তা সনাক্ত করা সম্ভব? আমরা পৃথিবীর যা কিছু মহাকল্যাণকর তার সব কিছুতেই আমাদের ভূমিকা রেখেছি। আমরা হয়েছি বিখ্যাত, আমরা হয়েছি কুখ্যাত। এই বিখ্যাত ও কুখ্যাত এর সমন্বয়ে গড়েছি এই পৃথিবীকে। আমরা ভালো-মন্দ কাজে পারদর্শী এবং বেশ সহজেই উপসংহার দিতেও পাকা।

সুইডেনে সন্তানের জন্মের সাথে সাথে বাবা-মা দুজনই ১০ দিনের জন্য সন্তানের সাথে সময় কাটাতে পারে, কোন রকম অর্থনৈতিক সমস্যা ছাড়া। তারপর বাবা-মার যে কেউ ১৮ মাস সন্তানের লালন পালনের জন্য পুরো বেতনে বাচ্চার সাথে থাকে বা থাকতে পারে, তবে এর ব্যতিক্রম ঘটতে পারে তা নির্ভর করছে বাবা-মার উপর। পরে বাচ্চাকে কিন্ডারগার্টেন দেওয়া থেকে শুরু করে ১৮ বছর অব্দি সময়টুকু বাবা-মার সমন্বয়ে সমাজের সব ধরণের সুযোগ-সুবিধার মধ্য দিয়ে সন্তানকে গড়ে তোলা হয় একটি সাধারণ পরিবারের ক্ষেত্রে। ব্যতিক্রম আছে যেমন সেপারেশন বা ডিভোর্সের ক্ষেত্রে বা অন্য কোন জটিলতার কারণে সোশ্যাল ফেয়ার্স ইন্টারফেয়ার করে থাকে সন্তানের বা পরিবারের সব ধরনের কেয়ার টেকার হিসাবে। 

সুইডেন গণতন্ত্রের বেস্ট প্রাকটিসে বিশ্বের শীর্ষস্থানে সে বিষয়ে সন্দেহ না থাকারই কথা পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনায়। সুইডেনে সবাই ট্যাক্স (খাজনা) পে করে এবং এখানে ট্যাক্স ফাঁকি দিলে এবং ধরা খেলে শাস্তির বিষয়টি ১০০% নির্ধারিত। একজন মানুষ খুন করা প্রসঙ্গত বলতে হবে সহজ তুলনামূলকভাবে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার থেকে। 

এদের চিন্তায় এরা মনে করে ঘুস, দুর্নীতি, ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া এসব লোভ লালসার কারণে ঘটে, এখানে শাস্তি অবশ্যই হওয়া উচিত কিন্তু মানুষ হয়ে মানুষকে খুন করা এটা কখনো সম্ভব নয় যতক্ষণ পর্যন্ত সে মানুষ। এদের চিন্তায় এরা মনে করে মানুষ যখন দানব বা অসুস্থতায় ভোগে তখন সে খুন করার মত জঘন্যতম  কাজ করতে পারে। তাই এদেরকে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মানসিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। কর্মজীবন শেষে মানুষ বৃদ্ধ বয়সে পেনশন পেয়ে থাকে বিধায় সমাজ, পরিবার, ছেলে-মেয়ে কারো কোন দায় নেই যেমনটি ছিল জীবনের শুরুতে বাবা-মা হিসাবে সন্তানের ওপর, বিধায় এখানে একজন বৃদ্ধ তাঁর সময় কাটতে পারে দেশ বিদেশ ঘুরে, বৃদ্ধাশ্রমে বা সমন্বয়ে বসবাস করে। 

ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক সচ্ছলতা মানুষের জীবনের শুরু থেকে শেষ সময়টুকু কী ভাবে কাটবে এর জন্য দায়ভার নিয়ে থাকে। এখন বাংলাদেশে যেহেতু গণতন্ত্রের বেস্ট প্রাকটিসের অভাব। পৃথিবীর মধ্যে হাতে গোনা দরিদ্র দেশের মধ্যে একটি। পারিবারিক বা সামাজিক কোনভাবেই সুইডেনের সাথে তুলনা করার মত অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা নেই, সাথে দেদারছে চলছে দুর্নীতি, অনীতি, ঘুষ, খুন, রাহাজানি, হয়রানী সারা দেশজুড়ে। একই মানুষ অর্থের অভাবে তার পরিচয় হারিয়ে হয়েছে চাকর, মুচি, মেথর কিন্তু তাঁরা করছে সমাজের সবচেয়ে নিচু কাজটি কিছু বড়লোকের জন্য, যাদেরকে সুইডেনে আমরা অমানুষের চোখে দেখি যদি সেই জনগোষ্ঠী দুর্নীতি, ঘুষ বা ট্যাক্স ফাঁকি দিয়ে অর্থের প্রাচুর্য গড়ে থাকে। 

মানুষ যখন অর্থের অভাবে স্বার্থ খোঁজে সে অন্যায়, আর যে বিলাসের স্বার্থে অন্যায় করে এ অন্যায় কি এক? তুলনা করার আগে আমাদের ভাবতে হবে। তাই মনে হয় বৃদ্ধাশ্রম নিয়ে বিশ্বের অন্য দেশের সাথে তুলনা করার আগে আমাদের নিজেদের দেশের ভেদাভেদ নিয়ে ভাবা উচিত আগে। বিশিষ্ট অভিনেতা, পাঁচ বা এক সন্তানের পিতা এটা বড় কথা নয়, বড় কথা চাকর থেকে শুরু করে সমাজের যারা সবচেয় কঠিন কাজগুলো করছে কী ব্যবহার জাতি হিসাবে আমরা করছি তাদের সাথে?

আসুন আমরা মানুষের কথা ভাবতে শুরু করি, জীবনের শেষটি না দেখে যেতে পারলেও বৃদ্ধাশ্রমে ভালোবাসা দেখে যেতে পারব। মনুষ্যত্বের ভারসাম্য হারালেই মানবতার  অবক্ষয় হয়। আসুন বাড়ির কাজের লোকের সাথে, বাড়ির গাড়ি চালকের সাথে এক টেবিলে বসে চা-কপি, ভাত খেতে শুরু করি। তাহলে কিছু না হলেও প্রাকটিসটা থাকবে যদি এমনটি হয় জীবনের শেষ সময়। 

মনের ভেতরের খারাপ অনুভূতি কিছুটা কমবে বই বাড়বে না, কারণ প্রাকটিস মেকস এ ম্যান পারফেক্ট। মানুষের প্রতি ভালোবাসা, কাজের লোকের প্রতি রেসপেক্ট দেখানো, তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করা, এসব দৈনিক শিক্ষার মধ্যে পড়ে এবং এসব শিক্ষা জীবনের শুরুতে বাড়িতেই হয়, তার প্রমাণ আমি নিজে। আমরাও তো বাইরে থাকি তাই বলে কি দেশকে বা বাব-মাকে ভুলেছি? না। জন্মেছি যখন মানুষ হয়ে, মরণ যেন না হয় দানবের মত। হৃদয় আমার সুন্দরও মমতায়, ভালোবাসার মাঝে ঝরিয়া পড়িতে চাই।

লেখক: রহমান মৃধা, সাবেক পরিচালক, ফাইজার, সুইডেন, [email protected]

ডিএম/এমআরএস

dwl
×
Nagad