ঢাকা,  রোববার
১৩ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

বর্ণবাদ ঠেকাতে রেফারিকে বিশেষ ক্ষমতা দিচ্ছে স্পেন

মেসেঞ্জার স্পোর্টস

প্রকাশিত: ২১:৩৯, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বর্ণবাদ ঠেকাতে রেফারিকে বিশেষ ক্ষমতা দিচ্ছে স্পেন

ছবি : সংগৃহীত

স্পেনের ক্লাব ফুটবলে ২০২৩ সালে বেশ কয়েকবার বর্ণবাদী আচরণের শিকার হয়েছিলেন রিয়াল মাদ্রিদের ব্রাজিলিয়ান তারকা ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। এ ছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে এমন ঘটনা দেখা যায় খেলার মাঠে। এমন ঘৃণ্য আচরণ রুখে দিতে লা লিগা ও স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন (আরএফইএফ) নতুন উদ্যোগ নিয়েছে। এর মাধ্যমে রেফারিদের মাধ্যমে প্রয়োগকৃত ফিফার ‘নো রেসিজম’ নীতিমালা অনুসরণের অনুমোদন দিয়েছে স্পেনের ঘরোয়া ফুটবলে।

চলতি বছরের মে মাসে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত এক সভায় ফিফা ‘ক্রস আর্ম’ প্রতীকের অনুমোদন দিয়েছিল। যা এবার স্পেনেও প্রয়োগ করার সম্মতি দিয়েছে স্প্যানিশ ফেডারেশন ও লা লিগা কর্তৃপক্ষ। এর মাধ্যমে বর্ণবাদের অভিযোগ ওঠা কিংবা রেফারির নজরে আসার পর ‘ক্রস আর্ম’ বা দুই হাত ওপরের দিকে আড়াআড়িভাবে ধরে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

রেফারি সিদ্ধান্ত নেবেন তিনটি পদক্ষেপে– বর্ণবাদী ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে প্রথমে ম্যাচ থামানো, (অভিযুক্তকে) বহিষ্কার এবং পুরো ম্যাচটিই বাতিল করে দেওয়া। বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) সে নিয়মটিই নিজেদের বর্ণবাদবিরোধী বিধানে অন্তর্ভূক্ত করার সম্মতি দিয়েছে লা লিগা ও আরএফইএফ। যদি কোনো রেফারি এ ধরনের কোনো কাজ দেখেন বা জানতে পারেন, তখনই তিনি ‘ক্রস আর্ম’ প্রতীক দেখিয়ে পরবর্তী প্রক্রিয়ার দিকে আগাবেন।

তবে রেফারি তাৎক্ষণিকভাবেই বড় সিদ্ধান্তে যাবেন না। ম্যাচ থামিয়ে তিনি স্টেডিয়ামের স্পিকারে এ ঘটনার বিষয়ে প্রথমে সতর্কতা দেবেন, একইসঙ্গে সেখানে বলা হবে এমন ঘটনা আবারও ঘটলে মাঠ থেকে বের করে দেওয়া হবে। দ্বিতীয় ধাপে ম্যাচ অফিসিয়ালরা সাময়িকভাবে খেলা বন্ধ রাখবেন, ফলে ওই সময় প্রতিপক্ষ দুই দলের খেলোয়াড়রা ড্রেসিংরুমে চলে যাবেন। এরপরও তৃতীয় ধাপের প্রয়োজন হলে তখন বাতিল হয়ে যাবে ম্যাচটি। যা নিরাপত্তারক্ষী ও ক্লাব অফিসিয়ালদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

২০৩০ ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজক সত্ত্ব পেয়েছে যৌথভাবে তিনটি দেশ। যেখানে স্পেনের সঙ্গী আরও দুই ইউরোপীয় দেশ পতুর্গাল ও মরক্কো। সেই বিশ্বকাপকে সামনে রেখেই স্প্যানিশ দর্শকদের বর্ণবাদী আচরণ বন্ধের আহবান জানিয়েছেন ব্রাজিল ফরোয়ার্ড ভিনিসিয়ুস। ২৪ বছর বয়সী এই তারকার সঙ্গে এমন ঘটনার দায়ে গত জুনে ভ্যালেন্সিয়ার তিন সমর্থককে কারাগারে নেওয়া হয়েছিল। দেশটিতে বর্ণবাদী আচরণ বন্ধ না হলে স্পেন থেকে আয়োজক সত্ত্ব সরিয়ে নেওয়ার বিবেচনা করতে বললেন এই রিয়াল তারকা।

সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভিনিসিয়ুস বলেন, ‘২০৩০ সাল পর্যন্ত আমাদের সামনে লম্বা সময় রয়েছে। আমি আশা করি স্পেন তাদের অবস্থার উন্নতি ঘটাবে এবং তারা বুঝতে পারবে যে কারও গায়ের রঙ নিয়ে বাজে মন্তব্য করার বিষয়টি কতটা গুরুতর। যদি ২০৩০ সাল নাগাদ বিষয়টি উন্নত না হয়, আমার মনে আমাদের (বিশ্বকাপ) ভেন্যু পাল্টানো উচিৎ। কারণ কেউ যদি সেখানে খেলতে স্বস্তিবোধ না করে এবং বর্ণবাদের কারণে নিরাপদ মনে না করে, সেটি তার জন্য কঠিন ‍হয়ে উঠবে।’

মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এমন মন্তব্য ছড়িয়ে পড়লে, স্প্যানিশ মিডিয়ায় নতুন বিতর্ক ওঠে। মঙ্গলবার তাদের প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ভিনিসিয়ুসের মন্তব্য দেশটিকে রেসিস্ট হিসেবে ভুল পরিচয় দিচ্ছে। মাদ্রিদ এবং স্পেনের সাবেক গোলরক্ষক পাকো বুয়ো টিভি-শো ‘এল চিরিঙ্গাতো’তে বলেন, ‘ভিনিসিয়ুস ঢালাওভাবে আমাদের সবার ওপর অভিযোগ করেছে, যা আমাকে ব্যথিত করেছে।’ আরেক কলাম লেখক টমাস রনকারো আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ভিনিকে তার মন্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে বলেছেন।

মেসেঞ্জার/তারেক