
ছবি: সংগৃহীত
সুইডেনে মসজিদের সামনে ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন পোড়ানোর ঘটনাকে ইসলামবিদ্বেষ বা মুসলিম-বিরোধী মনোভাব বলে অভিহিত করেছে সুইডেন সরকার। এ ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে এক বিবৃতি দিয়েছে দেশটির সরকার।
গত সপ্তাহে স্টকহোমের প্রধান মসজিদের বাইরে পবিত্র কোরআনের একটি কপি পোড়ানোর ওই ঘটনা ঘটে। রোববার (২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুইডেনের সরকার স্টকহোমের প্রধান মসজিদের বাইরে পবিত্র কোরআন পোড়ানোর নিন্দা করেছে এবং এটিকে ‘ইসলামোফোবিক’ বা ইসলামবিদ্বেষমূলক কাজ বলে অভিহিত করেছে। আন্তর্জাতিক ইসলামি সংস্থা মুসলমানদের পবিত্র গ্রন্থের ভবিষ্যৎ অবমাননা এড়াতে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানোর পরে সুইডিশ সরকার এই মন্তব্য করল।
সুইডেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার এক বিবৃতিতে বলেছে, সুইডেনের সরকার পুরোপুরি বোঝে যে, সুইডেনে বিক্ষোভের নামে কিছু ব্যক্তির সংঘটিত ইসলামফোবিক কর্মকাণ্ড মুসলমানদের জন্য আক্রমণাত্মক হতে পারে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘আমরা এই কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই এবং এসব কাজ কোনোভাবেই সুইডেন সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটায় না।’
আল জাজিরা বলছে, ভবিষ্যতে পবিত্র কোরআনের অবমাননা এড়াতে মুসলিম দেশগুলোর জোট অর্গানাইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) থেকে সম্মিলিত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বানের পর সুইডিশ সরকারের পক্ষ থেকে এই নিন্দা করা হয়েছে।
গত বুধবার সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের কেন্দ্রীয় মসজিদের বাইরে এক ইরাকি যুবক ও তাঁর সহযোগী ঘোষণা দিয়ে পবিত্র কোরআনের একটি কপিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তাঁদের এই ন্যক্কারজনক কাজ করার অনুমতি দেয় একটি সুইডিশ আদালত। কোরআন অবমাননা করার জন্য ওই ইসলামবিদ্বেষী ব্যক্তিরা পবিত্র ঈদুল আজহার দিনটিকে বেছে নেয়।
ওই ঘটনার জেরে প্রতিক্রিয়া জানাতে ৫৭-সদস্য দেশের সংস্থা ওআইসি জেদ্দা সদর দপ্তরে বৈঠকে বসে এবং ভবিষ্যতে পবিত্র কোরআনের অবমাননা এড়ানোর জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানায়। বৈঠকের পরে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পবিত্র ‘কোরআনের অবমাননা করার ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে ওআইসি তার সদস্য দেশগুলোকে ঐক্যবদ্ধ ও সম্মিলিত ব্যবস্থা গ্রহণ করার’ আহ্বান জানিয়েছে।
পরে সুইডিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, কোরআন বা অন্য কোনো ধর্মীয় গ্রন্থ পোড়ানো খুবই আপত্তিকর ও অসম্মানজনক কাজ এবং স্পষ্ট উসকানি। বর্ণবাদ, জেনোফোবিয়া এবং এই ধরনের অসহিষ্ণুতার কোনো স্থান সুইডেন বা ইউরোপে নেই।
একই সময়ে সুইডেনে ‘সমাবেশ, মতপ্রকাশ এবং বিক্ষোভ করার স্বাধীনতা সাংবিধানিকভাবে সুরক্ষিত’ রয়েছে বলেও সুইডিশ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
আল জাজিরা বলছে, পবিত্র কোরআন পোড়ানোর ঘটনার প্রতিবাদে ইরাক, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মরক্কোসহ বহু দেশ সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেছে। সুইডিশ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় তারা তদন্ত শুরু করেছে।
যদিও বাকস্বাধীনতা সুরক্ষার কথা বলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে এই ধরনের কাজ করার অনুমতি দিয়েছিল সুইডেনের পুলিশ।
টিডিএম/এনএম