ঢাকা,  বুধবার
২৮ মে ২০২৫

The Daily Messenger

সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

মেসেঞ্জার অনলাইন

প্রকাশিত: ১৫:৫৩, ১৮ জুলাই ২০২৪

আপডেট: ১৬:২০, ১৮ জুলাই ২০২৪

সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

‘বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকুয়াকালচার এন্ড সীফুড শো-২০২৪’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্টল পরিদর্শনকালে প্রধানমন্ত্রী। ছবিঃ সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ব্লু ইকোনমি’কে আরো সমৃদ্ধ করার জন্য বিস্তীর্ণ সমুদ্র এলাকায় সামুদ্রিক সম্পদ আহরণে বিনিয়োগের জন্য বিদেশি ও স্থানীয় বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি মাছের রপ্তানি বাড়াতে মাছের সংগ্রহ, বিতরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে যথাযথ মান বজায় রাখতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশ দেন। কারণ বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত হবে মাছ।

প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ’বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকুয়াকালচার এন্ড সীফুড শো-২০২৪’এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।

তিনি বলেন, যারা বিনিয়োগকারি তাদেরকেও আমরা আহবান জানাব। কারণ, আমাদের যে সমুদ্র সম্পদকে ব্যবহার করে আমাদের ‘ব্লু ইকোনমি’কে আরো সমৃদ্ধশালী আমরা করতে পারবো। সীউইড, শামুক, ঝিনুক, মুক্তা প্রভৃতি আহরণ এবং সমুদ্রের পানি থেকে লবন উৎপাদন হচ্ছে। পাশাপাশি সমুদ্রের পানি থেকে বিদ্যুৎ. হাইড্রো ইলেকট্রিসিটি উৎপাদনেও গবেষণা চলছে। ইনশাআল্লাহ আমরা সেটাও করতে পারবো।

সরকার প্রধান বলেন, সমুদ্র সম্পদের বহুমুখি ব্যবহার আমাদের অর্থনীতি ’ব্লু ইকোনমি’কে আরো সমৃদ্ধশালী করবে। সেক্ষেত্রে আমি আশাকারি যারা বিনিয়োগকারি, যারা বাংলাদেশে এসেছেন বা যারা আমাদের দেশি বিনিয়োগকারি, আপনারা যৌথভাবে এই বিনিয়োগের ক্ষেত্র আবিস্কার করে এখানে আরো বিনিয়োগ করতে পারেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিডা একটা বিরাট ভূমিকা রাখে। আপনারা তাদের কাছ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পেতে পারেন এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা অনেক বেশি সুবিধা দিয়ে থাকি। সেখানে যে কেউ বিনিয়োগ করতে পারেন। তার যে লভ্যাংশ সেটা খুব সহজেই তারা নিয়ে যেতে পারেন। পাশাপাশি ব্যাংকের লেনদেনটাও আমরা অনেক বেশি সহজ করে দিয়েছি। সেখানে আপনি অর্থ জমা করে প্রয়োজনে সেটাও নিয়ে যেতে পারেন। অফশোর অ্যাকাউন্ট খোলারও সুযোগ আছে। সেই সুবিধাও সরকার করে দিয়েছে। সেখানে উচ্চহারে সুদও পেতে পারেন। আবার এখানে বিনিয়োগও করতে পারেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাজেই আমি দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারিদের সবাইকে আহবান করবো আপনারা আসেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেন। এই সম্পদ আমাদের আরো কাজে লাগান। এটাকে যাতে আমরা আরো বেশি কাজে লাগাতে পারি সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

সরকার প্রধান বলেন, আজকের এই ‘অ্যাকুয়া কালচার ও সীফুড শো’ নীতি নির্ধারক, রপ্তানিকারক, স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ীদের মধ্যে পারষ্পরিক ব্যবসায়ী সংলাপ এবং নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার একটি প্রাণবন্ত প্লাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে। যা পারষ্পরিক বোঝাপড়া, অংশীদারিত্ব, জ্ঞান প্রভৃতি আদান প্রদানের ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভুমিকা রাখবে বলেই আমি মনেকরি এবং আশাকারি আমাদের যুব সমাজও আরো বেশি এগিয়ে আসবে। প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে মাছ উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের সাথে আমাদের যুব সমাজ যতবেশি যুক্ত হবে ততই এই খাতটি আরো এগিয়ে যাবে। এক্ষেত্রে এসএমই ফাউন্ডেশন থেকে সহজ শর্তে ঋণ প্রদানেরও উল্লেখ করেন তিনি।

অনুষ্ঠানে অ্যাকুয়াকালচার ও সীফুড রপ্তানির সম্ভাবনার আলোকে একটি প্রামান্য চিত্রও প্রদর্শিত হয়।

মৎসও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি শ ম রেজাউল করিম ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব সৈয়দ মাহমুদ বেলাল হায়দার স্বাগত বক্তৃতা করেন। জার্মান ভিত্তিক প্লানকোয়াডর‌্যাট এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মার্টিন গেসকেস এবং বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।

আলোচনা পর্ব শেষে প্রধানমন্ত্রী ‘অ্যাকুয়া কালচার ও সীফুড শো’ এর বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখেন।

১৭জুলাই থেকে ১৯ জুলাই পর্যন্ত ঢাকার বঙ্গবন্ধু আর্ন্তজাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাকুয়াকালচার এ্যান্ড সীফুড শো শুরু হয়েছে। তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে অ্যাকুয়াকালচার ও সীফুড সম্পর্কিত বিভিন্ন সেশন অনুষ্ঠিত হবে যেখানে বাংলাদেশের মৎস্য খাতের সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে আলোচনা হবে। এই আয়োজনে ১২টি দেশের ৫৪ টি স্টল রয়েছে।

মেসেঞ্জার/নিশাত