ঢাকা,  রোববার
১৯ জানুয়ারি ২০২৫

The Daily Messenger

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শুধু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ শিষ্টাচার বহির্ভূত : নাছির

জবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:০৩, ১০ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শুধু বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ শিষ্টাচার বহির্ভূত : নাছির

ছবি : মেসেঞ্জার

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ এর জন্য একটি সংগঠন থেকে প্রতিনিধি নেয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সব ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধি দেখা করতে পারবে। একটা মাত্র সংগঠন সব শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি করতে পারেনা। সব সংগঠনকে আমন্ত্রণ না জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের আয়োজিত এক মানববন্ধনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন।

নাছির উদ্দীন নাছির বলেন,বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা অবশ্যই দেখা করতে পারে কিন্তু কোনো প্রেস নোটের মাধ্যমে তা হবে না। আমরা ক্রিয়াশীল ছাত্রসমাজের ২৮ টি সংগঠনকে আমন্ত্রণ দিয়েছিলাম সভার জন্য। কিন্তু বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে দাওয়াত দিইনি কারণ তারা তাদের নিজেদের রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠন মনে করে না। প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যারা দেখা করেছেন তা শিষ্টাচার বহির্ভূত বলে আমরা মনে করি।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির শিবিরকে ইঙ্গিত করে বলেন, আরেকটি সংগঠনকে দাওয়াত দিইনি বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে, আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এই ছাত্র সংগঠনটি অতীতে গোপন আতাতের মাধ্যমে রাজনীতি করেছে। খুনী সংগঠন ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়ার পর তারা এবার প্রকাশ্যে এসে রাজনীতি করছে। তাই আমরা সব সংগঠনের সঙ্গে তাদের আমন্ত্রণ জানায়নি। এরকম একটি ছাত্র সংগঠনকে দাওয়াত জানানো মানে হলো গোপন রাজনীতিকে প্রাসঙ্গিক করে গড়ে তোলা। তাদের রাজনীতির ধরণের কারণে এই সংগঠনটিকে শিক্ষার্থীরা ঘৃণা করে। গত ৫ আগস্টে ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর খুনী ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে মিলেমিশে রাজনীতি করে এখন প্রকাশ্যে এসেছে।

ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাছির আরও বলেন, দুনিয়া কাঁপানো ২৪ এর গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদলের ১০০ এর অধিক নেতাকর্মী খুনি হাসিনার দ্বারা নিহত হয়েছে। তাছাড়া সারাদেশে অন্য কোনো সংগঠনের এত নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে কেও দেখাতে পারেনি। জাতীয়তাবাদ ছাত্রদলের প্রথম শহীদ ওয়াসিমকে আমরা ভুলে যায়নি। ৫০০০ এর অধিক নেতাকর্মী সেসময় গ্রেপ্তার হয়েছিলো। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বিশ্বাস করে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্ব যে আন্দোলন গত ৫ আগস্ট তার প্রাথমিক ফলাফল পেয়েছে। ৫ আগস্টের পূর্বে সবথেকে নির্যাতিত সংগঠন ছিলো ছাত্রদল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন নেতাকর্মী এখন পর্যন্ত গুম রয়েছে। তাদেরকে এখনও খুনী হাসিনা থেকে ফেরত পাইনি। আমরা স্পষ্ট ভাবে বলতে চাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ইতিবাচক রাজনৈতিক পরিবেশের সূচনা হয়েছে। ২১ শতক উপযোগী হিসেবে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে জাতীয়তাবাদ ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারেক রহমান। এ লক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থীদের মতামত নেয়া হচ্ছে। কিন্তু আগে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর সব চাপিয়ে দিতো। এখন শিক্ষার্থীদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভবিষ্যতে ছাত্রদলের রাজনীতি পরিচালিত হবে।

এসময় নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আমরা দাবি জানাতে চাই খুনী ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সকল নেতাকর্মীকে আইনের আওতায় আনতে হবে দ্রুত।

মানববন্ধনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, ফ্যাসিস্ট সংগঠন আওয়ামী লীগ দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠিয়ে ও তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলা দিয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছিলো। খুনি হাসিনা পুরো দেশকে একটি বৃহৎ কারাগারে পরিণত করেছিলো। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে তাদের রক্ষীবাহিনী দ্বারা সন্ত্রাসের অভায়রণ্য করে রেখেছিলো। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দেশে আয়নাঘর বানিয়ে আমাদের ভাই ছাত্রদলের রাসেল, রানা, আল আমিনকে আজও গুম অবস্থায় রেখেছে। প্রতিটি মায়ের আহাজারি তারা তাদের সন্তানকে ফেরত চায়। প্রতিটি ছাত্রদলের সহকর্মী তাদের ফেরত পেতে আহাজারি করছে। আমরা আমাদের গুম হওয়া সহকর্মীকে ফিরে পেতে আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে সংগ্রামকে ত্বরাণিত করে আন্দোলন চালিয়ে যাবো দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরও ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি কাজী জিয়া উদ্দিন বাসেত, সিনিয়র সহ-সভাপতি ইব্রাহিম কবির মিঠু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান হিমেল, মো. মাহমুদুল হাসান খান ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল আরেফিনসহ শাখা ছাত্রদলের অসংখ্য নেতাকর্মী।

মেসেঞ্জার/ইমরান/তুষার