ঢাকা,  বুধবার
১৬ জুলাই ২০২৫

The Daily Messenger

গাইবান্ধায় ভর্তুকির কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন ব্যবহারে অনিহা কৃষকদের 

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৩:১২, ১৪ মে ২০২৩

আপডেট: ১৩:১৩, ১৪ মে ২০২৩

গাইবান্ধায় ভর্তুকির কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন ব্যবহারে অনিহা কৃষকদের 

ছবি : টিডিএম

গাইবান্ধায় ভর্তুকি মূল্যে দেওয়া সমন্বিত ধানমাড়াই যন্ত্র (কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন) ফেলে রেখে হাতে তৈরি যন্ত্রে (থ্রেসার মেশিন) ধান মাড়াই করা হচ্ছে। এতে সরকারিভাবে দেওয়া ওই যন্ত্র পড়ে থেকে অকেজো হয়ে যাচ্ছে। 

কৃষকেরা বলছেন, ধানের খড় গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু ভর্তুকির যন্ত্রে ধান মাড়াই করলে খড় আস্ত থাকে না,গুঁড়ো হয়ে যায়। তাই হাতে তৈরি স্থানীয় বাজার থেকে কেনা যন্ত্র দিয়ে তাঁরা ধান মাড়াই করছেন। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, কৃষি ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ধানমাড়াইয়ে জেলায় ৯৭টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭৪টি মেশিন চালু রয়েছে। বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হওয়ায় অন্য যন্ত্রগুলো বন্ধ রয়েছে। বাজারে একটি যন্ত্রের মূল্য ২৯ থেকে ৩০ লাখ টাকা। তবে সরকার অর্ধেক (শতকরা ৫০ ভাগ) ভর্তুকিতে কৃষকদের এসব ধানমাড়াই যন্ত্র সরবরাহ করে। বেশির ভাগ কৃষক দলবদ্ধ হয়ে এসব যন্ত্র কিনেছেন। অনেকে এককভাবে কিনেছেন। এই যন্ত্র ব্যবহার করলে মজুরি খরচ সাশ্রয় হয় এবং কম সময়ে বেশি ধান মাড়াই করা যায়। 

সম্প্রতি জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বোরো ধান মাড়াইয়ের ব্যস্ততা। কোনো এলাকায় ধান কাটা হচ্ছে, কোনো এলাকায় বাড়ির উঠানে ধানমাড়াই চলছে। নারীরা ধান শুকাচ্ছেন। অনেকে ধান থেকে খড় পরিষ্কার করছেন। কৃষকেরা হাতে তৈরি যন্ত্র দিয়ে ধান মাড়াই করছেন, যা স্থানীয়ভাবে থ্রেসার মেশিন নামে পরিচিত।

গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের আরিফখা বাসুদেবপুর গ্রামের কৃষক জিল্লুর রহমান (৪৫) বলেন, তারা কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে মাড়াই করছিলেন। এতে বেশির ভাগ খড় নষ্ট হয়ে যায়। এতে গরুর খাদ্যের সংকট দেখা দেবে। এ কারণে তাঁরা ওই যন্ত্র ব্যবহার করছেন না। স্থানীয়ভাবে হাতে তৈরি যন্ত্র দিয়ে বোরো ধান মাড়াই করছেন। 

একই গ্রামের কৃষক আবদুর গফফার (৪২) বলেন, হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান মাড়াই করলে পল (খড়) ছোট ছোট হয়ে যায়। এরপর খড় পচে নষ্ট হয়। খড়ই যদি গরুকে খাওয়াতে না পারি, তবে এ মেশিন দিয়ে মাড়াই করে কী হবে? ধান বিক্রি করে তো পল কেনা যাবে না। 

এদিকে খড় নষ্ট না হওয়ার কারণে গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকায় থ্রেসার মেশিনের জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এসব মেশিন ভাড়ায় চালানো হচ্ছে। এ মেশিনে ধান ছাড়াতে শ্রমিক খরচ কমেছে, সময়ও সাশ্রয় হচ্ছে। কোনো কোনো এলাকার অবস্থাপন্ন কৃষকেরা কিনেছেন থ্রেসার মেশিন। এতে কৃষক বেশি লাভবান হচ্ছেন। গাইবান্ধা শহরে প্রায় ৩০টি থ্রেসার মেশিন তৈরির কারখানা রয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধানমাড়াইয়ে খড় ছোট হয়ে যায় ঠিক। এতে গরুর খাদ্যের সমস্যা হয়। তাই এসব অঞ্চলের কিছু কৃষক কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন ব্যবহার করছেন না। তবে যাঁরা এ মেশিন কিনেছেন, তাঁদের বেশির ভাগই ব্যবহার করছেন।

টিডিএম/এসএনই