ঢাকা,  বৃহস্পতিবার
১৯ জুন ২০২৫

The Daily Messenger

কাদা-জলে মাখামাখি!

সরকার মাজহারুল মান্নান (রংপুর)

প্রকাশিত: ১৯:০৫, ৪ জুন ২০২৩

কাদা-জলে মাখামাখি!

ছবি : টিডিএম

তীব্র তাপদাহ আর লোডশেডিংয়ে তান্ডবে অতিষ্ঠ রংপুরের মানুষকে কিছুটা হলেও স্বস্তি দিলো ১৫ মিনিটের বৃষ্টি। এই সময়ে বৃষ্টির সাথে মাঠে মাঠে কাদা-জেলা মাখামাখি করতে দেখা গেছে সব বয়সি মানুষকে।

রোববার ( জুন) বিকেল টা থেকে ৪টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত বৃষ্টি নেমেছিল রংপুর অঞ্চলে।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের তথ্য মতে, বুধবার রংপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় বেলা টায় ৩৬ দশমিক ডিগ্রি সেলসিয়াস। এসময় বাতাসের আদ্রতা ছিল ৩২ শতাংশ। এর আগে জুন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক , জুন ৩৮ দশমিক এবং লা জুন ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। ফলে তীব্র তাপদাহে উত্তপ্ত রংপুরের প্রতিটি প্রান্তর।

এরমধ্যে রয়েছে ঘন্টায় ঘন্টায় লোডশেডিং। ২৪ ঘন্টায় থেকে ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ পাওয়া যায় না। যদিও নেসকোর রংপুর বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী জাকির হোসেনের দাবি রংপুর মহানগরীতে কমবেশি ১২৮ মেগাওয়াট চাহিদার বিপরীতে ১০৮ এবং রংপুর বিভাগের আট জেলায় ৮৪২ মেগাওয়াটের বিপরীতে ৭৩১ মেগাওয়াট সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে। যদি নেসকোর এই তথ্য সঠিক হয়, তাহলে আট ঘন্টা নয় লোডশেডিং হওয়া কথা ঘন্টা।

এমন পরিস্থিতিতে জনজীবনে তৈরি হয়েছে নাকাল অবস্থা। মাঠে,ঘাটে, অফিসের কাজে কর্মে দেখা দিয়েছে নজীরবিহীন স্থবিরতা। মানুষের হাপিত্যেস বেড়েছে বহুগুন। অস্থিরতার মধ্যে কাটছে সর্বজনের জীবন। এমন মুহুর্তে রোববার বিকাল টায় রংপুর অঞ্চলে শুরু হয় বৃষ্টি।

সরেজমিনে দেখা গেছে, বৃষ্টি শুরু হওয়ার সময় যারা মাঠে,ঘাটে, রাস্তায় ছিলেন, তারা বষ্টি থেকে বাঁচতে আশ্রয়ে নেননি। যে যেখানেই দাড়িয়ে ছিলেন সেখানেই সবাই বৃষ্টিতে আলিঙ্গন করেছেন। মাঠে মাঠে সব বয়সি মানুষকে দেখা গেছে বৃষ্টির পানিতে খেলতে। স্বস্তির পরশ নিতে।

রংপুর মহানগরীর গুপ্তপাড়ার বুদু বাবুর খেলার মাঠে দেখা গেলো বৃষ্টির মধ্যেই বিভিন্ন ধরণের খেলায় মেতে উঠেছেন পাড়ার শিশু, গৃহবধু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সি মানুষ। গোসলও সেরে নেন অনেকে। অনেকে বৃষ্টিতে হওয়া কাদায় মেতে উঠেন খেলায়। কাদা-জলে একাকার হয়ে যায় মাঠে।

ওই মাঠে খেলায় অংশ নেয়া নুর আলম (৩২) নামের এক মোটরসাইকেল মেকানিক জানান, গরম তার ওপর বিদ্যুৎ নাই। দোকানে থাকা যাচ্ছে না। তাই বাসার সামনে বসেছিলাম। বৃষ্টি আসার সাথে সাথেই পাড়ার ছেলেদের সাথে মাঠে খেললাম। এখন বৃষ্টির পানিতে গোসল করলাম। কি যে শান্তি বলে বোঝানো যাবে না। নুসরাত নাজিহা () নামের এক শিশু শিক্ষার্থী জানালেন, স্কুল, বাসা কোথাও শান্তি নাই। আল্লাহর রহমতের বৃষ্টি পড়া শুরু করেছে দেখে আমি মাঠে খেলতে নামি।

অনেকেই খেলতে নেমেছে। আরও বৃষ্টি হোক, লোডশেডিং না হোক। তা না হলে বাঁচা যাবে না। রিয়াজ (১৮) নামের এক কলেজ ছাত্র জানালেন, ভ্যাপসা গরমে আমরা থাকতে পারছি না। পড়তে পারছি না। বৃষ্টি আসায় খুব স্বস্তি হলো। অনেকদিন পর বৃষ্টিতে ভিজলাম। বৃষ্টি অব্যাহত থাকুক। আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা।

লাল মিয়া (৫৬) নামের এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা জানালেন, আল্লাহ রহম করেছেন। তিনি সামান্য হলেও বৃষ্টি দিলেন। আমরা গরমের তাপের সাথে লোডশেডিংয়ের ভয়াবহতায় অস্থির হয়ে পড়েছি। বৃষ্টি কিছুটা হলেও আমাদের রক্ষা করলো।

রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, রোববার ১৫ মিনিটে এই অঞ্চলে ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে কিছুটা হলেও প্রকৃতি শীতল হয়েছে। বৃষ্টি হওয়ার আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মানুষ।

তিনি আরও বলেন, আগামী জুন পর্যন্ত আবহাওয়া উত্তপ্ত থাকবে। এরপর বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।

টিডিএম/এএম