ঢাকা,  বুধবার
১৮ জুন ২০২৫

The Daily Messenger

গাইবান্ধায় তন্ত্র-মন্ত্রের পাতা খেলা দেখতে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় 

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:১১, ১১ জুন ২০২৩

আপডেট: ১৬:১১, ১১ জুন ২০২৩

গাইবান্ধায় তন্ত্র-মন্ত্রের পাতা খেলা দেখতে দর্শকদের উপচে পড়া ভিড় 

ছবি: টিডিএম

খেলাটিকে মূলত বলা হয়ে থাকে পাতা খেলা বা জাদু খেলা। এটি এক ধরনের ব্ল্যাক ম্যাজিকের চর্চার অংশ নির্ভর খেলা বলে জানা যায় অংশগ্রহণকারী দলসমূহের কাছ থেকে। তন্ত্র-মন্ত্র দিয়ে নিজেদের দলের প্রতি পাতাদের আকৃষ্ট করে দর্শকদের মনোরঞ্জন করাই এই খেলার মূল উদ্দেশ্য ।  হাজার-হাজার দর্শকদের মাঝে খেলোয়াড়দের মনোমুগ্ধকর মন্ত্র সাধনার মাধ্যমে এমন খেলা সকলের দৃষ্টি কেড়েছে।

সেই সাথে মাঠের চারপাশে দর্শকদের মাঝে সাংস্কৃতিক উন্মাদনাও তৈরি হয়। গত এক সপ্তাহ যাবৎ গাইবান্ধার সাত উপজেলার  বিভিন্ন গ্রামে বাংলার ঐতিহ্যবাহী ‘পাতা খেলা’ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।  স্থানীয়দের আয়োজনে দীর্ঘদিন পর এই খেলা দেখতে মাঠে ভিড় করে হাজারো মানুষ।

শনিবার (১১ জুন) গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের বালুয়া বাজার এলাকায় ঐতিহ্যবাহী এই খেলা অনুষ্ঠিত হয় । এসময় আশেপাশের গ্রাম থেকে প্রায় কয়েক হাজার দর্শক উপস্থিত হয়। বিকেল  থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই খেলা চলে। আশপাশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সাতটি তান্ত্রিক দল আসে। নিজ নিজ মন্ত্র দিয়ে পাতারূপী মানুষকে মাঠের মাঝখান থেকে নিজের দিকে টানার প্রতিযোগিতা করেন তারা।

যে দল তাদের তন্ত্র মন্ত্রের মাধ্যমে মানুষ নামের পাতাকে নিজের দিকে টানতে পারবে, সেই দলই পয়েন্ট পাবে। পরে পয়েন্ট হিসাব করে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। ঐতিহ্যবাহী পাতা খেলার জন্য বছরে কোন নির্দিষ্ট সময় না থাকলেও প্রতিবছর জৈষ্ঠ্য মাসের মাঝামাঝি থেকে শুরু হয় । 

এই খেলা উপভোগ করতে দর্শকদের কোন টিকিট কাটতে হয় না । তাই সব বয়সের মানুষেরাই দর্শক হিসেবে উপস্থিত থাকে । তবে খেলায় অংশগ্রহণের জন্য দল নেওয়ার ক্ষেত্রে আয়োজক কমিটি ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা পর্যন্ত নিয়ে থাকে ।

পাতা হিসেবে অংশগ্রহনকারী সাইফুল ইসলাম জানান, এটি অনেক পুরাতন একটি খেলা। এই খেলায় পাতা হিসেবে মনস্ত্রিরটা ঠিক রাখতে হয়। ওঝা বা তান্ত্রিকরা যখন মন্ত্র পড়ে বসে আনতে চায় তখন নিজের মনস্ত্রিরটা স্বাভাবিক রাখতে হয়। তবে খুব কঠিন হয়ে যায় মনস্ত্রির ঠিক রাখা। এমন খেলায় অংশগ্রহন করতে পেরে যেমন নিজের আয় হচ্ছে তেমনি মানুষকে আনন্দ দিতে পেরেও ভালো লাগছে ।

পাতা খেলার প্রধান স্বমন্বয়কারী রাব্বি মিয়া বলেন, সাংস্কৃতিক উন্মাদনা তৈরি গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী ধরতে রাখতেই এমন আয়োজন আমাদের। আমরা চাই সামাজিক সম্প্রীতি অটুট রাখতে সহনশীলতার চর্চা অব্যাহত থাকুক। সাধারণ দর্শকরা অনেক আগ্রহের সাথে এই খেলা উপভোগ করে বলেই প্রতিবছর পাতা খেলার আয়োজন করা হয়।

টিডিএম/আরস