
ছবি : টিডিএম
সারাদেশে সরকারেরে পক্ষ থেকে দেওয়া হয় ২,৭২০ ভূমিহীন ও অসচ্ছল মুক্তিযোদ্ধার জন্য ‘বীর নিবাস’ নামে একতলা বাড়ি বানানোর উদ্যোগ নেয় সরকার। এর মধ্যে নীলফামারীর চার উপজেলায় রয়েছে ৮৮ টি ‘‘বীর নিবাস’’ ডিমলায় ৩৪, ডোমারে ২৬, সদর উপজেলায় ১৭, সৈয়দপুরে ১১ টি। চলিত বছরের জুন মাসে উপকারভোগীদের হাতে হস্তান্তরের কথা থাকলেও এখনো হয়নি হস্তান্তর। তার আগেই ভবণে দেখা দিয়েছে ফাটল।
জানা গেছে, প্রতিটি বাড়ির ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রতিটি নিবাসের আয়তন ৭৩২ বর্গফুট। একতলার এই বাড়িতে দুটি শয়নকক্ষ, একটি বসার কক্ষ (ড্রয়িংরুম), একটি খাবারঘর (ডাইনিংরুম), একটি রান্নাঘর, একটি প্রশস্ত বারান্দা ও দুটি শৌচাগার থাকছে। প্রতিটি বাড়িতে থাকছে একটি উঠান, একটি নলকূপ এবং গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি পালনের জন্য পৃথক শেড। বাড়িটি নির্মাণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে ‘‘সনি টেডার্স’’ এর স্বত্বধিকারী মো.মোরশেদ হাসান সনি।
সরেজমিনে বাড়িটির চারদিক ঘুরে দেখা যায়, পূর্ব দিকের দেওয়াল, উত্তরের দেওয়াল ও বাড়িতে প্রবেশ গেটে লম্বালম্বি ফাটল ধরেছে। বাড়ির বাহিরের দেওয়ালের প্লাস্টার কোনো রকমে দায় সারাভাবে করেছেন। ভবন জুড়ে নেই কোনো আরসিসি ঢালাই। মেজেতে ইটের খোয়ায় করলেও উঠে আসছে ঢালাই। ভিতরের প্লাস্টারের কোনো স্থানে ধ্বসে পড়েছে। মুক্তিযুদ্ধের লোগো সম্বলিত ফলকের রং উঠে লোগো বুঝাই যাচ্ছে না। ‘‘বীর নিবাস’’ এর ফলকে মুজিব লেখা আগেই উঠে গেছে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুর রহমান জানান, ১ জুন আমার বাড়িতে আগুণ লেগে সকল থাকার ঘর ও সকল কাগজ পত্র পুড়ে যায়। পরে ইউএনও সাহেবের সাথে কথা বললে তিনি, ঠিকাদারের সাথে কথা বলে নির্মিত বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু এই বাড়িটি চলিত বছরের জুন মাসেই আমাদের কাছে হস্তান্তরের কথা থাকলেও ঠিকাদার আর ইউএনও জানান, মন্ত্রনালয়ের টাকা না আসার করনে ঠিকাদার কাজ সম্পূর্ণ করতে পারছেন না।
তিনি আরও জানান, দেওয়ালের বিষয়ে ঠিকাদার কে একাধিক বার জানানো হয়েছে তিনি এসে দেখে কাজ করে দিতে চেয়েছেন কিন্তু আসলও না দিলো ও না। মেঝের ঢালাই উঠে যাচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের লোগো উঠে গেছে, তারা যদি আমাদের বাড়ি নির্মাণে এতো হয়রানির শিকার করায় তাহলে অন্য কাজে কি করেন? ইউএনও বলে ছিল ঠিকাদার এসে ঠিক করে দিবেন কিন্তু দিলো না।
এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বধিকারী মোরশেদ হাসান সনি সাথে কথা হলে তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানের এখনো অনেক কাজ বাকি রয়েছে। আর এতো কম টাকায় কাজ কি আর করব। তার মধ্যে ৩/৪ লাখ টাকার কাজ করবে মন্ত্রনালয়। মেঝে ঢালাই যেটা দেওয়া হয়েছে টাইলস বসালে কোনো সমস্যা হবে না। আর মন্ত্রনালয়ের বাজেটও কম, আসছে আমাদের এখনো পুরো টাকাই পরিশোধ করেনি। ফাইল ধরলে তো বাড়ি ভেঙ্গে যেত কিন্তু যায়নি তো।
এ বিষয়ে ডিমলা উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)'র কর্মকর্তা শফিউল ইসলামকে একাধিক বার ফোন করা পরেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বেলায়েত হোসেন জানান, ভবণ যদি ফাটল ধরে তাহলে আমরা তাদের কাছে থেকে সেই ভবণ গ্রহণ করবো না। আর ভবণ হস্তান্তরের কোনো নির্দেশনা নেই, তবে জুন মাসে করলে ভালো হতো। আমি ইঞ্জিনিয়ারকে পরিদর্শনের জন্য পাঠিয়ে দিচ্ছি। রিপোর্ট আসলেই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
টিডিএম/এনএম