ঢাকা,  শনিবার
২৭ জুলাই ২০২৪

The Daily Messenger

স্কুল সভাপতির বিরুদ্ধে ৫ পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:৫৩, ৯ নভেম্বর ২০২৩

স্কুল সভাপতির বিরুদ্ধে ৫ পদে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ

ছবি : মেসেঞ্জার

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ইনসাফনগর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি মেহেদী হাসানের বিরুদ্ধে ৫ পদে লাখ লাখ টাকার নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। ঐতিহ্যবাহী স্কুলটি উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চরাঞ্চল বকমারীর চরে অবস্থিত। বিদ্যালয়টির মাধ্যমে চরাঞ্চলবাসীর শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন।

কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে বিদ্যালয়টির পাঁচটি পদে নতুন নিয়োগ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার মুখে রয়েছেন বিদ্যালয়টির বর্তমান ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ভাগযোত তালতলা এলাকা নিবাসী নজরুল ইসলামের ছেলে মেহেদী হাসান। এতে করে অনেকটা চাপের মুখে পড়েছে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক বজলুর রশিদ।

সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ বাণিজ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সঠিক শিক্ষা কার্যক্রম।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়টির সভাপতি মেহেদী হাসানের মামাতো ভাই কান্দির পাড়া গ্রামের পালু মণ্ডলের ছেলে নান্টুকে অফিস সহায়ক পদে, শম্পা খাতুন কে আয়া পদে, ইনসাফনগরের সুজাউদ্দিনের ছেলে রায়হানকে নিরাপত্তা প্রহরী, কান্দির পাড়া গ্রামের আলেক এর ছেলে আবু তালেবকে পরিচ্ছন্ন কর্মী পদে নিয়োগ দিয়েছেন। 

এছাড়াও দাড়ের পাড়া গ্রামের নিবাসী আব্দুল আল মামুন সেন্টুর স্ত্রী সুরাইয়া ইয়াসমিনকে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে বর্তমান সভাপতি। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, যাদেরকে সভাপতি একক সিদ্ধান্তে অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ দিতে চাচ্ছে তারা সবাই সভাপতি মেহেদী হাসানের পরস্পর নিকটাত্মীয়।

তাছাড়াও পরিচ্ছন্ন কর্মী হিসেবে নিয়োগ দেয়া হবে বলে মুকুল মোল্লার ছেলে আসাদুলের কাছ থেকেও মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও অসংখ্য ব্যক্তির কাছ থেকে ওই সকল পদে তাদের নিয়োগ দেয়া হবে বলে হাতিয়ে নিয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। 

এমন অবস্থায় উপজেলার তারাগুনিয়া এলাকায় বসবাসকারী চাকরি প্রত্যাশী এক ব্যক্তি জানতে পারে যে বিদ্যালয়টির বর্তমান সভাপতি মেহেদী হাসান পাঁচটি পদে চাকরি দেবে বলে এলাকার অনেক লোকজনের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে। পরবর্তীতে সে কোন উপায় না পেয়ে তারাগুনিয়া এলাকায় মেহেদী হাসানকে পেলে তাকে আটকে রেখে তার টাকা উদ্ধার করে নেয়।

এ সকল বিষয় নিয়ে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক বজলুর রশিদের সাথে প্রতিবেদক কথা হলে তিনি জানান, এই বিদ্যালয়ে আমি নতুন প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেছি। এখনো আমার বেতন স্কেল চালু হয়নি। আর আমার বেতন স্কেল চালু হতে প্রয়োজন সভাপতির স্বাক্ষর। সেই স্বাক্ষর না করে সভাপতি মেহেদী হাসান আমাকে অনেকটাই জিম্মি করে রেখে তার পছন্দের প্রার্থীদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। 

অন্যদিকে এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়টির বর্তমান সভাপতি মেহেদী হাসান বেপরোয়া অবস্থানে থেকে বিদ্যালয়টির পাঁচটি পদে টাকার বিনিময়ে নিজস্ব আত্মীয়-স্বজনদের নিয়োগ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। পাশাপাশি ওই সকল পদেই চাকরি দিবে বলে ইউনিয়ন ব্যাপী বিভিন্ন এলাকার চাকরি প্রত্যাশী লোকজনের কাছ থেকেও টাকা নিয়েছে বলে জানা গেছে। যার কারণে বিদ্যালয়টির নিয়োগ পরীক্ষার তারিখ একাধিকবার পিছিয়েছে। আজ পর্যন্ত আর কোন সমাধান আসেনি।

এলাকাবাসীর দাবি সুষ্ঠু নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্য ব্যক্তিদের বিদ্যালয়টিতে নিয়োগ দেওয়া হোক। যেখানে কোন অভিযোগ থাকবে না নিয়োগ বাণিজ্যের।  এ সকল বিষয় নিয়ে বিদ্যালয়টির সভাপতি মেহেদী হাসানের মুঠোফোনে কল দিলে তার নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়।

দৌলতপুর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সরদার মোঃ আবু সালেক অবসরজনিত কারণে দপ্তরের বাইরে থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

মেসেঞ্জার/রাজু/আপেল