ঢাকা,  শনিবার
২৭ জুলাই ২০২৪

The Daily Messenger

ঝিকরগাছায় জামিনে এসে প্রতিপক্ষের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের অভিযোগ, আটক ২

ঝিকরগাছা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৯:৫১, ১৩ নভেম্বর ২০২৩

ঝিকরগাছায় জামিনে এসে প্রতিপক্ষের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের অভিযোগ, আটক ২

ছবি: ডেইলি মেসেঞ্জার

জামিনে মুক্তি পেয়ে বাড়ি ফিরে প্রতিপক্ষের বাড়িতে আগুন দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে বাদীপক্ষ। গতকাল রোববার (১২ নভেম্বর) রাতে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার সাদিপুর গ্রামে ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, গত বৃহষ্পতিবার বিকালে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে পিতাপুত্রকে কুপিয়ে জখম করেছে সোনাকুড় শেখপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ তার পরিবারের সদস্যরা। ঘটনায় পুলিশ জনকে আটক করে শনিবার আসামিদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। কিন্তু ওইদিনই জামিন নিয়ে বাড়ি চলে আসে তারা। বাড়ি ফিরে রোববার রাতে আসামিরা প্রতিপক্ষের বাড়িতে আগুন দেয়। ঘটনায় পুলিশ আবারও দুই জনকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে।

মামলা স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুকুর পাড়ের কলাগাছ কাটাকে কেন্দ্র করে সোনাকুড় শেখপাড়া গ্রামের আব্দুস সামাদ সাদিপুর গ্রামের অর্জুন মন্ডলের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। সময় আব্দুস সামাদ, তার স্ত্রী দুই পুত্র জোরপূর্বক কলাগাছ কাটা শুরু করে। অর্জুন মন্ডল তাদের কলাগাছ কাটায় বাঁধা দিতে গেলে আব্দুস সামাদের বড় ছেলে আলাউদ্দীন গাছি দা দিয়ে অর্জুন মন্ডলের মাথার কোপ মারে। গাছি দার কোপে সে পানিতে পড়ে গেলে অর্জুন মন্ডলের পুত্র অপূর্ব মন্ডল, ভাই নকুল মন্ডল স্ত্রী লিপিকা মন্ডল ছুটে আসলে আব্দুস সামাদসহ তার দুই ছেলে স্ত্রী তাদেরকে মারপিট শুরু করে। অপূর্ব মন্ডলকেও গাছি দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করে।

ঘটনায় শুক্রবার ঝিকরগাছা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অর্জুনের ভাই নকুল মন্ডল। অভিযোগের ভিত্তিতে ঝিকরগাছা থানা পুলিশ আব্দুস সামাদ, তার স্ত্রী শাহিদা বেগম, দুই পুত্র আলাউদ্দীন সালাউদ্দীনকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করেন। কিন্তু দিনই তারা জামিন পেয়ে বাড়ি ফিরে আসে এবং রোববার রাতে আসামিরা প্রতিপক্ষের বাড়িতে আগুন দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন বাদিপক্ষ।

সাদিপুর গ্রামের অমিত কুমার মন্ডল জানায়, রোববার রাত টার দিকে আমরা মহল্লাবাসী অর্জুন মন্ডলের সাহায্যের জন্য আলোচনায় বসেছিলাম। আলোচনার মধ্যে শংকর কুমারের স্ত্রী দৌড়ে এসে জানায় অর্জুনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। সকলে গিয়ে পানি দিয়ে আগুন নেভানো হয়। তবে বড় আকারের কোনো ক্ষতি হয়নি বা কোনো হতাহত হয়নি। পরে বাঁকড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র শিত্তরদাহ পুলিশ ফাঁড়ি থেকে পুলিশ এসে বিষয়টি তদন্তপূর্বক আব্দুস সামাদের দুই পুত্র আলাউদ্দীন সালাউদ্দীনকে আটক করেছে। ব্যাপারে ঝিকরগাছা থানায় আরও একটি মামলা হয়েছে।

এদিকে ভারতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে অর্জুন মন্ডল। আর.জি কার হাসপাতালে তাকে অপরেশন করা হয়েছে। গত কয়েকদিনে তার জ্ঞান ফিরে আসেনি। অর্জুন মন্ডলের আহত ছেলে অপূর্ব মন্ডল ভারত থেকে মোবাইল ফোনে জানায়, কর্তব্যরত চিকিৎসক জানিয়েছেন অবস্থা আশংকাজনক। প্রায় দেড়মাস চিকিৎসাধীন থাকতে হবে এবং ভারতীয় ২০ থেকে ২৫ লক্ষ রুপী খরচ হবে।

ব্যাপারে অর্জুন মন্ডলের স্ত্রী লিপিকা মন্ডল জানান, আমরা খুবই নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমার স্বামী সন্তান কেউ আমার পাশে নেই। বাড়িতে আমি আমার মেয়ে ছোট বাচ্চা নিয়ে থাকি। আমার স্বামীর এখনও জ্ঞান ফিরিনি। আমাদের মানসিক অবস্থা খুবই খারাপ। তারপরও পুলিশ আসামি ধরছে কিন্তু দিনের দিন তারা জামিন নিয়ে বাড়ি আসছে। এসে আমাদের বাড়িতে আগুন দিয়েছে। গাছি দা নিয়ে পুকুরপাড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একেক করে সবাইকে মারবে বলে হুমকি দিচ্ছে। আমরা এখন কী করব?

ব্যাপারে মামলার আয়ু শিত্তরদাহ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই দেবব্রত ঘোষ দ্য ডেইলি মেসেঞ্জারকে জানান, আসামিদের জামিন দেওয়ার এখতিয়ার আদালতের। তবে পুলিশ ঘটনায় কঠোর অবস্থানে আছে। প্রথম ঘটনায় জনকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে এবং রোববার রাতে বাড়ি আগুন দেওয়ার ঘটনায় দুজনকে আটক করে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। ছাড়াও তদন্তপূর্বক আদালতে রিপোর্ট প্রেরণ করব।

মেসেঞ্জার/আলমগীর/আল আমিন