ঢাকা,  শনিবার
২৭ জুলাই ২০২৪

The Daily Messenger

আশুলিয়ায় প্রেমের টানে ছুটে এলেন সাইপ্রাসের তরুণী

সাভার (ঢাকা) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৬:৪৯, ২ ডিসেম্বর ২০২৩

আশুলিয়ায় প্রেমের টানে ছুটে এলেন সাইপ্রাসের তরুণী

ছবি : মেসেঞ্জার

কয়েক হাজার মাইলের দূরত্ব পেরিয়ে প্রেমের টানে বাংলাদেশে ছুটে এসেছেন সাইপ্রাসের তরুণী। আট বছর আগে বাংলাদেশের তরুণ শামীম আহমেদ স্টুডেন্ট ভিসায় সাইপ্রাসে গেলে প্রথম দেখায় ভালোলাগার সম্পর্ক গড়ে ওঠে ওই তরুণীর সাথে।

আগ্রহী হয়ে ওঠেন একে অপরের দেশীয় সংস্কৃতি জানতে, এরপর দীর্ঘ পাঁচ বছর একে অপরের সাথে ভালোবাসার গভীর সম্পর্কে জড়িয়ে যান তারা।

কিন্তু ভিসার মেয়াদ শেষে শামীম দেশে চলে এলে ভালোবাসার টানে দেশের দূরত্ব আটকে রাখতে পারেনি সাইপ্রাসের তরুণীকে। শামীমকে চমকে দিয়ে কিছুদিনের মধ্যেই হঠাৎ বাংলাদেশে চলে আসার কথা জানান এবং কালক্ষেপণ না করেই চলে আসেন সাইপ্রাসের তরুণী আন্থি তেলেবান্তো।

গত ২৭ নভেম্বর আশুলিয়ায় শামীমের বাড়িতে ছুটে আসেন সাইপ্রাসের তরুণী আন্থি তেলেবান্তো। পরে ৩০ নভেম্বর ঢাকা জজকোর্টে বাংলাদেশের আইন অনুসারে বিয়ে করেন আন্থি শামীম।

ঢাকার আশুলিয়ার দক্ষিণ গাজীরচট আয়নাল মার্কেট এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা (মরহুম) ফিরোজ আহমেদের বড় ছেলে শামীম আহমেদ এবং ইউরোপের দেশ সাইপ্রাসের ইয়ান্নিস তেলেবান্তোর চার ছেলে মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে আন্থি তেলেবান্তো।

শনিবার ( ডিসেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান শামীম আহমেদের স্ত্রীকে ঘিরে চলছে উৎসবের আমেজ। এরই মধ্যে শ্বশুরবাড়ি, আত্মীয়স্বজন আর প্রতিবেশীদের মন জয় করে নিয়েছেন ভিনদেশী এই তরুণী।

পরদেশী এলাকার বউ পেয়ে দারুন খুশি শামীমের পরিবারও। আত্মীয়স্বজন আর পাড়াপ্রতিবেশীরা ছুটে আসছেন ভীনদেশী বউকে একনজর দেখতে। সাইপ্রাসের নাগরিক আন্থি তেলেবান্তো যেন সবাইকে আপন করে নিয়েছেন।

আন্থির সাথে তার পরিচয় প্রণয়ের বিষয়ে শামীম আহমেদ বলেন, স্টুন্ডেন্ট ভিসায় ২০১৫ সালে আমি সাইপ্রাস চলে যাই। সেখানে সিডিএ কলেজে ভর্তি হওয়ার পর লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি প্রতিষ্ঠানে পার্টটাইম চাকরি নেই। একই প্রতিষ্ঠানে কাজের সুবাদে আন্থির সাথে আমার পরিচয় হয়। একসময় আমরা দু'জন দু'জনকে পছন্দ করা শুরু করি। পরে তা প্রণয়ে রূপ নেয়।

সাইপ্রাসের লিমাসোল শহরে আন্থির বাসায় আমার যাওয়া-আসা শুরু হয়। ওর পরিবারের সাথেও আমার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়। এরপর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসলে আমি দেশে ফিরে আসি। তারপরও আন্থি এবং আমার মধ্যে অনলাইনে যোগাযোগ হতো। আমার পরিবারের সাথে ভিডিও কলে কথা বলতো।

অনেক আগে থেকেই সে বাংলাদেশে আমার বাড়িতে আসার জন্য উদগ্রীব থাকতো। এরপর গত ২৭ নভেম্বর সে বাংলাদেশে চলে আসে। উভয় পরিবারের সম্মতিতে ৩০ নভেম্বর আমরা দুজন ঢাকা জজকোর্টে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হই।

শামীম আরও বলেন, আমার পরিবারের সাথে আন্থি নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। আটদশটা বাঙ্গালী বউদের মতোই সবার সাথে মিশতেছে। তার কথায় বাঙ্গালী বউ হওয়ার ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। পরিবার আত্মীয়স্বজন সবাইকে মাতিয়ে রাখছে সে।

সাইপ্রাসের তরুণী আন্থি তেলেবান্তো অল্প কিছু বাংলা শব্দ শিখলেও এখনো পুরোপুরি বাংলায় কথা বলতে পারে না। আন্থি তেলেবান্তো বলেন, বাংলাদেশের মানুষ অতিথি পরায়ণ এবং বাংলাদেশকে অনেক ইনজয় করছি।

শামীমকে কেন ভালো লেগেছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ওই তরুণী বলেন, আমরা দুজন একসাথে কাজ করেছি। তারপর বন্ধু হয়েছি এবং আমি তাকে ব্যক্তিগত ভাবে একজন ভালো চরিত্রের মানুষ হিসেবেই জানি। শামীম একজন হেল্পফুল মানবিক মানুষ।

এককথায় অসাধারণ একটি মানুষ আমি তার মানবিকতা হেল্পফুল মানসিকতা দেখে প্রেমে পড়েছি। সে অনেক দায়িত্ববান মানুষ সে আমাকে অনেক ভালোবাসে। আমার পরিবার শামীমকে অনেক পছন্দ করে। তারাও আমাদের এই সম্পর্ককে মেনে নিয়েছে। আমি বাংলাদেশের মানুষের আতিথীয়তায় মুগ্ধ।

শামীম আহমেদের চাচা ফরিদ উদ্দিন বলেন, বিদেশী মেয়ে হলেও ওর সাথে আমাদের পারিবারিক সম্পর্ক হয়ে গেছে। গত তিন দিন ধরে যখনই সে আমার সামনে আসছে ঘোমটা পরে আসছে, বাঙ্গালি মেয়েদের মতো। সে আমাদের মতোই শাকসবজি, তরকারি খাচ্ছে। আমাদের পুত্রবধূকে নিয়ে কোন সমস্যা পরিবারে নাই।

মেসেঞ্জার/নোমান/আপেল