ছবি : মেসেঞ্জার
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার শিকটা গ্রামে সৈয়দ আলী নামের এক বৃদ্ধকে তার শয়ন কক্ষে গলায় ছুরিকাঘাত করে হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের কনফারেন্স রুমে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম এ তথ্য জানিয়েছেন।
পুলিশ সুপার জানিয়েছে, আসামিরা দুই লাখ টাকা ওই ঘর থেকে নিয়ে যান। যার মধ্যে ৬২ হাজার ৫’শ টাকা উদ্ধার ও হত্যার কাজে ব্যবহৃত চাকু ঘর থেকে নিয়ে যাওয়া দলিলপত্র একটি পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বাকি টাকা আসামিরা খরচ করেছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন- কালাই উপজেলার পুনট ইউনিয়নের শিকটা গ্রামের আকামুদ্দিনের ছেলে হারুনুর রশিদ (৪০), একই গ্রামের আবু তালেব ফকিরের ছেলে সুজন মিয়া (২৩), মোবারক আলীর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (৩৫), মোহাম্মদ আলীর ছেলে নাজির হোসেন (৩৫)। এদের মধ্যে হারিনুর রশিদ হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী। আর সুজন মিয়া গ্রাম পুলিশ।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নূরে আলম বলেন, গত ১ ডিসেম্বর সকালে কালাই শিকটা গ্রামের সৈয়দ আলীর নিজ শয়ন কক্ষের মধ্যে তার গলা কাটা মরদেহ পরে আছে বলে সংবাদ পাওয়া যায়।
ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাতাপালের মর্গে পাঠানো হয়। পরে তদন্ত শুরু হয়। তদন্তে জানা যায় গত ৩০ নভেম্বর দিবাগত গভীর রাতে অজ্ঞাত আসামীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে কালাই থানায় মামলা হয়।
থানা পুলিশ এবং ডিবি টিমসহ মামলার তদন্ত কার্যক্রম এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান পরিচালনা শুরু করেন।
গোপন সূত্র ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় জানা যায়, সৈয়দ আলী হত্যার ঘটনার সাথে শিকটা গ্রামের হারুনুর রশিদ জড়িত আছে। তাকে গ্রেপ্তার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। পরে ঘটনার সাথে জড়িত সুজন মিয়া, মোস্তাফিজুর রহমান, নাজির হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আসামিরা পুনট বাজারে নাজির হোসেনের দোকানে পরিকল্পনা করে সৈয়দ আলী আকন্দের কাছে থাকা টাকা চুরি করবে এবং চুরির টাকা আসামি নাজিরকে দিলে সে ব্যবসা করে তাদের লাভ দিবে। সেই পরিকল্পনায় তারা ধারালো ছুরি সহ ওই বাড়িতে যায়। বাড়ির ভিতর থেকে গেট লাগানো থাকায় হারুন গেটের পাশে কাঁঠাল গাছ বেয়ে বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে গেট খুলে দিলে সুজন, ওয়াজেদুল বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে।
ভিতরে প্রবেশ করে তারা দেখতে পায়, ঘরের মেইন গেট ও ঘরের দরজা খোলা এবং লাইট জ্বালানো। তখন তারা সৈয়দ আলীর ঘরে প্রবেশ করে লাইটের সুইচ বন্ধ করার শব্দে সৈয়দ আলীর ঘুম ভেঙ্গে যায়, ঘরের মধ্যে কে বলে চিৎকার করার চেষ্টা করলে আসামিরা গামছা দিয়ে সৈয়দ আলীর মুখ বেঁধে ফেলে। পরে দুই পা চেপে ধরে। ঘরের স্ট্রিলের বাক্সের তালা ভেঙ্গে দুই লক্ষ টাকা এবং একটি ব্যাগের ভিতর থাকা দলিল সহ ব্যাগ নিয়ে নেয়।
ওই সময় ভিকটিম সৈয়দ আলী চিৎকার করার চেষ্টা করিলে সুজন মিয়া ছুরি দিয়ে সৈয়দ আলীর গলার কণ্ঠ নালীর নিচে আঘাত করলে কণ্ঠ নালী কেটে গিয়ে সৈয়দ আলী নিস্তেজ হয়ে পরে। তখন টাকা ও দলিলের ব্যাগ সহ দ্রুত পালিয়ে যায়।
মেসেঞ্জার/মামুন/আপেল
