ছবি : মেসেঞ্জার
লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে ১০ টাকার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কাজে লাগছে না অধিকাংশ কৃষকের। কিছু কিছু ‘অগ্রগামী ও সচেতন কৃষক এ অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলেও বঞ্চিত হচ্ছেন অনেকে।
কৃষকদের অভিযোগ, প্রভাবশালীদের সঙ্গে যাঁদের সম্পর্ক ভালো, তাঁরাই এ সুবিধা পাচ্ছেন। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, অ্যাকাউন্টধারী কৃষকরা শুরুতে ভর্তুকি হিসেবে টাকা পেলেও এখন তা বন্ধ রয়েছে। তবে ব্যাংক থেকে ঋণের মাধ্যমে ওই কৃষকরা বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, রায়পুরে তালিকাভুক্ত কৃষি কার্ডধারী কৃষকের সংখ্যা প্রায় ৮ থেকে ১০ হাজার। এর মধ্যে কৃষি ব্যাংক ১০ টাকার অ্যাকাউন্টধারীর সংখ্যা ২ হাজার ৯২১। এছাড়াও বিভিন্ন সরকারি ব্যাংকে আরও ১ হাজার অ্যাকাউন্ট রয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তাদের দাবি, পরিমাণে কম হলেও ১০ টাকার অ্যাকাউন্টধারী অনেক কৃষকই সরকারি প্রণোদনা ও ভর্তুকি পেয়েছেন। সর্বশেষ ২০১৭- ১৮ অর্থবছরে কিছু কৃষক সেচ ও আগাছা দমনের জন্য পেয়েছেন সরকারি অর্থ।
উপজেলার বামনী, সোনাপুর ও চরমোহনা ইউনিয়নের কৃষক মোস্তফা, আনোয়ার, দেলোয়ার, আরিফ, রহমান, ইকবালসহ একাধিক কৃষক জানান, ১০ টাকার অ্যাকাউন্ট তাঁদের কোনো উপকারে আসেনি। এ অ্যাকাউন্ট খুলে এখন পর্যন্ত তাঁরা সরকারি বা বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা পাননি।
তাঁরা অভিযোগ করেন, হাতেগোনা কিছু কৃষক আছেন, যাঁদের সঙ্গে কৃষি কর্মকর্তা বা প্রভাবশালীদের ভালো সম্পর্ক তাঁরাই সরকারি সুবিধা পাচ্ছেন।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বলেন, সরকারি সুযোগ-সুবিধা পেতে হলে কৃষকদের অবশ্যই কৃষি বিভাগ ও জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। মূলত অগ্রগামী ও সচেতন কৃষকরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা বেশি পান।
চরবংশী ইউনিয়নের রহমান, আমিরুল ইসলামসহ কয়েকজন কৃষক জানান, তাঁরা এক সময় ১০ টাকার অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে এ পর্যন্ত কোনো সুযোগ-সুবিধা পাননি।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক তাহমিনা খাতুন বলেন, বর্তমানে প্রণোদনা বা ভর্তুকির অর্থ দেওয়া বন্ধ রয়েছে। ১০ টাকার অ্যাকাউন্টধারী কিছু কৃষকের মধ্যে বীজ ও সার বিতরণ করেছে সরকার। ভর্তুকি দিয়ে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হচ্ছে। তাঁরা ধান ও চাল সংগ্রহ অভিযানে অংশ নিতে পারছেন। অ্যাকাউন্টহীন কৃষকদের প্রত্যায়ন নিয়ে এ ধরনের সুবিধা ভোগের সুযোগ রয়েছে। বিভিন্ন কৃষক অফিসে এসে প্রত্যায়ন নিয়ে অ্যাকাউন্ট করে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।
কৃষি ব্যাংকের রায়পুর শাখার ব্যবস্থাপক আসাদুজ্জামান জানান, কৃষি ব্যাংক রায়পুর শাখায় ১০ টাকার অ্যাকাউন্টধারী কৃষক প্রায় ২ হাজার ৯২১। অতিদরিদ্র কৃষকের সংখ্যা ২০৫। বাকিরা সাধারণ কৃষক। তবে আমাদের শাখায় ১০ টাকার অ্যাকাউন্টধারী ১ হাজার ৩৩০ কৃষকের অ্যাকাউন্ট সছল রয়েছে মাত্র। সাম্প্রতিক সময়ে প্রণোদনা বা ভর্তুকির টাকা এসব অ্যাকাউন্টে ঢোকেনি। তবে সচল অ্যাকাউন্টের বিপরীতে শর্তসাপেক্ষে ক্ষুদ্রঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও এই শাখায় বিভিন্ন ধাপে ৫ হাজার ৫০০ কৃষি ঋণের গ্রাহক রয়েছে।
মেসেঞ্জার/সুমন/আপেল
