![রাজশাহীতে লিজকৃত বিলের ৫০ মণ মাছ লুটের অভিযোগ রাজশাহীতে লিজকৃত বিলের ৫০ মণ মাছ লুটের অভিযোগ](https://www.dailymessenger.net/media/imgAll/2022February/Untitled-21-2312081248.jpg)
ছবি : মেসেঞ্জার
রাজশাহীর মোহনপুরে নৌকার সমর্থকদের বিরুদ্ধে স্থানীয় মৎস্যজীবী সমিতির লিজকৃত বিলমাইল শুটকির বিলের ৫০ মণ মাছ লুটের অভিযোগ পাওয়া গেছে। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় উপজেলার ঘাসিগ্রাম ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন বকুলের নেতৃত্বে মাছ লুট করা হয় বলে সমিতির সভাপতি অনিল কুমার হালদার শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহীতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মোহনপুর উপজেলার মেলান্দি গ্রামের বাসিন্দা ও বড়দেওপুর মেলান্দি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি অনিল কুমার হালদার মাছ লুটের পুরো ঘটনা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় মোহনপুর থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। তবে তার অভিযোগ মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়নি।
অনিল হালদার বলেন, স্থানীয় ঘাসিগ্রাম ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন বকুলের পরিকল্পনা ও নেতৃত্বে ৫০/৬০ জন মিলে প্রকাশ্যে দিবালোকে তার সমিতির লিজকৃত বিলের অন্তত ৫০ মণ মাছ লুট করে নিয়ে যান।
এর আগে গত বুধবার (৬ ডিসেম্বর) রাতে নৌকার প্রচারণার নাম করে সাবেক চেয়ারম্যান বকুল ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া ও গোয়ালপাড়ায় নিজেদের সমর্থকদের ডেকে বিলের মাছ লুটের ঘোষণা দেন। তার ওই ঘোষণা মোতাবেক পরদিন বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ৮টায় দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া তথা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টির মধ্যে সাবেক চেয়ারম্যান বকুল ও তার ৫০/৬০ জন সহযোগী বেড়াজাল, কারেন্টজাল, খেপলাজাল দিয়ে বিলে মাছ ধরতে শুরু করেন।
খবর পেয়ে তিনি পুলিশের জরুরী সেবা ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। কিন্তু প্রায় আড়াই ঘন্টা পর বেলা ১১টার দিকে মোহনপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। ততক্ষণে বকুল চেয়ারম্যান ও তার সহযোগীরা বিলের লুণ্ঠিত মাছ মিনি ট্রাকে তুলে নিয়ে পালিয়ে যান।
অনিল হালদার জানান, তারা ১৯৬২ সাল থেকে বংশ পরস্পরায় মাছ ধরে ও মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে তারা ভুমি মন্ত্রণালয় থেকে ৩৭ একর আয়তনের ‘বিলমাইল শুটকির বিল’ ‘বড়দেওপুর মেলান্দি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি’র নামে লিজ নিয়ে মাছ চাষ করছেন। তখন থেকেই বকুল ও তার সহযোগীরা চাঁদার দাবিতে হয়রানি করছেন।
আসন্ন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তন হওয়ায় বকুল ও তার সহযোগীরা আবারো মোটা অংকের চাঁদা দাবি করেন। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আফজাল হোসেনের নেতৃত্বে মাছ লুটের ঘটনা ঘটে।
এদিকে মোহনপুর থানায় দাখিল করা অভিযোগে অনিল কুমার হালদার বলেন, ঘটনায় আফহাল হোসেন বকুলের নেতৃত্বে মাছ লুটের ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মী মাসুদ, মুনতাজ, জিৎ, জালাল ও শহিদুল সহ অজ্ঞাত আরও ৫০-৫৫ জন জড়িত।
এ বিষয়ে মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হরিদাশ মণ্ডল বলেন, মাছ লুটের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। কিন্তু তার আগেই অভিযুক্তরা পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি অনিল কুমার হালদারের লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্যদিকে মাছ লুটের বিষয়টি জানা নাই বলে জানান রাজশাহী-৪ (পবা-মোহনপুর) আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ। তিনি বলেন, ‘কে বা কারা মাছ লুট করেছে তা তো আমি বলতে পারব না। এমনও হতে পারে, এলাকার সাধারণ মানুষ বিলে মাছ ধরেছে’।
মেসেঞ্জার/আনিসুজ্জামান/আপেল