
ছবি : মেসেঞ্জার
কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার আল্লারদর্গা আনোয়ারা বিশ্বাস মা ও শিশু হাসপাতাল থেকে ২ দিন বয়সী ছেলে নবজাতক চুরির চারদিন পর উদ্ধার করেছে র্যাব-১২। সেই সাথে চুরিতের জড়িত থাকা দুই জনকে আটক করা হয়েছে।
রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালীয়া ইউনিয়নের গোয়ালগ্রাম মোল্লাপাড়া এলাকা থেকে নবজাতক শিশুকে উদ্ধার করেছে র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের একটি টিম।
র্যাবের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, গত ৭ ফেব্রুয়ারি দুপুর অনুমান ১:৪০ ঘটিকায় আনোয়ারা বিশ্বাস মা ও শিশু হাসপাতাল থেকে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের এক অজ্ঞাত নারী সদস্য ৪৮ ঘন্টা বয়সী নবজাতক আরিয়ান, পিতা-মোঃ দীপু মন্ডলকে চুরি করে পালিয়ে যায়।
ঘটনার দিন ঐ অজ্ঞাতনামা বোরকা পরা নারী শিশুটির নানীর সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে কোলে নেয় এবং সু-কৌশলে শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে অটোরিকশা যোগে পালিয়ে যায়। উক্ত নবজাতক চুরির ঘটনাটি মিডিয়াসহ সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় ২০১২ সালের মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। নবজাতকটি চুরি হওয়ার পরপরই র্যাব শিশুটিকে উদ্ধার ও উক্ত ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে ব্যাপক গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের একটি আভিযানিক দল বিশেষ সোর্স, ঐ অজ্ঞাতনামা নারীর গতিবিধি ও অত্র এলাকার সিসি টিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে গত ১১ ফেব্রুয়ারি (রোববার) রাত ৮ টায় কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের গোয়ালগ্রাম মোল্লাপাড়ায় অভিযান পরিচালনা করে নবজাতক আরিয়ানকে সুস্থ স্বাভাবিক অবস্থায় উদ্ধার করে।
উক্ত চাঞ্চল্যকর নবজাতক চুরির ঘটনার প্রধান আসামি মোছাঃ পলি আরা খাতুন (২০) ও মোছাঃ মাফুজা (৪০) কে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা উক্ত চুরির সাথে তাদের সম্পৃক্ততার সত্যতা পায়।
উদ্ধার হওয়া শিশুর বাবার নাম দিপু ও মায়ের নাম সাফিয়া। দিপু ভেড়ামারা উপজেলার মহিষাডড়া গ্রামের মসজিদ পাড়ার নিহারুল ইসলামের ছেলে।
শিশুটির স্বজনরা জানান, গত বুধবার এক নারী প্রতারক হাসপাতালের এক রোগীর স্বজন পরিচয় ধারণ করে প্রতারণা করে। শিশু সন্তানটিকে তার নারীর কাছে থেকে প্রথমে কোলে নেন। এরপর শিশুটির নানী হাসপাতালের বাইরে পানি আনতে গেলে প্রতারক নারী শিশুটিকে চুরি করে পালিয়ে যায়। চুরির চারদিন পর র্যাব শিশুটিকে উদ্ধার করেছে। এসময় প্রতারক নারীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান শিশুর স্বজনরা।
হাসপাতালে রোগীদের স্বজন ও আশেপাশের লোকজনের দাবী, এই হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা সঠিক থাকলে এমন ঘটনা ঘটতো না। এই চোর চক্রের সাথে হাসপাতালে কেউ জড়িত থাকতে পারে বলে তাদের ধারনা। তাই সঠিক তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী তাদের।
সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, হাসপাতালের বাইরে কোনো সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়নি। গেটের বাহিরে সিসি ক্যামেরা লাগাতে হয় এটা আমাদের জানা ছিল না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বহির্বিভাগে বাচ্চা আসা-যাওয়া করলে তা লিপিবদ্ধ হয়না। গেটের নিরাপত্তারক্ষীরা শুধুমাত্র দেখে হাসপাতালে ভর্তি থাকা রোগীরা বিল পরিশোধ করে বের হচ্ছে কিনা তা।
মেসেঞ্জার/তুহিন/আপেল