ছবি : মেসেঞ্জার
ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশেন দেশের প্রাচীন সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে একটি। সিটি কর্পোরেশন উন্নয়নে সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন করে সদ্য সাবেক হয়েছেন মেয়র ইকরামুল হক টিটু। তিনি ময়মনসিংহ মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। রাজনীতি ও জনপ্রতিনিধি হিসাবে দায়িত্ব পালন করে বেশ আস্থা অর্জন করেছেন তিনি।
সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের পর ইকরামুল হক টিটু সাংবাদিকদের বলেন, আমরা চাই একটি স্মার্ট সমৃদ্ধ নগর গড়ে তুলতে। জলাবদ্ধতা নিরসন, যানজট নিয়ন্ত্রণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, পরিবেশের উন্নয়ন, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা শতভাগ নিশ্চিত করা, বেকারদের কর্মসংস্থান, আইনশৃঙ্খলার উন্নয়নে সহযোগিতা করা, মাদকমুক্ত সমাজ গড়ে তোলায় কাজ করা।
তিনি আরও বলেন, করোনা ও বৈশ্বিক সংকটের মধ্যেও আমরা সাধ্যমতো উন্নয়ন কাজ করার চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে প্রকল্পের ২০-২৫ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বাকিটা চলমান রয়েছে। অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত হলে ময়মনসিংহের চেহারা পাল্টে যাবে। যদি আগামী দিনে জনগণ আমাকে সুযোগ দেয়, আমার অবস্থান থেকে তাদের প্রত্যাশা পূরণে আপ্রাণ চেষ্টা করব। ময়মনসিংহ নগরী হচ্ছে আমার প্রাণ। নগরীর মানুষের সাথে আমার আত্মার সম্পর্ক আমৃত্যু আমি জনগনের সেবক হিসাবে থাকতে চাই।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অনেক কাজই গুছিয়ে এনেছি। এরই মধ্যে ৩৫৮ কিলোমিটার সড়ক ও ২৪৯ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ করেছি। পাশাপাশি নগরকে আলোকিত করতে ১৭১ কিলোমিটার সড়কে স্থাপন করা হয়েছে আধুনিক এলইডি সড়কবাতি। জলাবদ্ধতা নিরসনে অব্যাহত অভিযানে ১৬ কিলোমিটার খাল ইতোমধ্যে দখলমুক্ত করা হয়েছে।
ইকরামুল হক টিটু বলেন, আমরা প্রান্তিক ও দরিদ্র গোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে একটি নগর মাতৃসদন ও তিনটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র করেছি। যেখানে প্রায় আড়াই হাজার দরিদ্র মানুষ বিনামূল্যে সেবা পাচ্ছে। প্রতিদিন চার শতাধিক মা ও শিশু কম খরচে স্বাস্থ্যসেবা নিচ্ছেন। এছাড়া অনেক কাজই নগরজুড়ে চলমান রয়েছে। আমরা যে বরাদ্দ পেয়েছি তার মাঝে প্রায় ২০ ভাগ কাজ করতে পেরেছি। বাকি কাজ সম্পন্ন হলে নগরটি বিশালভাবে পরিবর্তিত হবে।
যানজন সমস্যার ব্যাপারে ইকরামুল হক টিটু বলেন, সিটি হওয়ার পর থেকে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে লোকজন নগরের দিকে আসছেন। এই জনগণের চাপকে সামাল দিতে বিভিন্ন ধরনের যান্ত্রিক-অযান্ত্রিক যানবাহন এই নগরে বেড়েছে।
তবে আমরা সেই পুরোনো বিলুপ্ত পৌরসভার সময়কার যে লাইসেন্স ছিল এখন পর্যন্ত আমরা গত কয়েক বছরে তা থেকে কমিয়ে নিয়ে আসছি। তার সাথে আমরা একটি বিকল্প ব্যবস্থা করে যানবাহন শ্রমিকদের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করছি। নগরবাসী আমার পাশে থাকলে আগামীতে আমরা যানজট সমস্যার সমাধান করতে পারব।
তিনি বলেন, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জলাবদ্ধতা নিরসন, স্বাস্থ্যসেবা আরও উন্নত করার বিভিন্ন পদক্ষেপ ইতোমধ্যে আমরা হাতে নিয়েছি। নগরীতে একটি শিশু পার্ক করার প্রস্তাব অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
এছাড়া বাস ও ট্রাক টার্মিনাল, সুপেয় পানির ব্যবস্থা, আলোকিত নগর, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতা উন্নয়ন ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন করার বিষয়ে আমাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ রয়েছে। এগুলো অনেকাংশে আমরা বাস্তবায়ন করতে পেরেছি। অনেক কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আমরা যে পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি সেগুলোর অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়ন করতে পারলে নগরীর চিত্রই পাল্টে যাবে।
নগরবাসী আবারও সেবা করার সুযোগ দেবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে টিটু বলেন, দীর্ঘদিন নাগরিকবৃন্দকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করে সামাজিক প্রত্যাশা পূরণের চেষ্টা করেছি। সেই দাবি নিয়েই আবারও প্রার্থী হয়েছি। নিশ্চয়ই আমার দীর্ঘদিনের কর্মের মূল্যায়ন নগরবাসী করবেন এবং আগামী দিনে আমাকে আবারও সেবা করার সুযোগ দেবেন।
উল্লেখ্য, তফসিল অনুযায়ী নির্বাচনের মনোনয়ন প্রত্যাহার ২২ ফেব্রুয়ারি ও প্রতীক বরাদ্দ ২৩ ফেব্রুয়ারি। আগামী ৯ মার্চ সিটি কর্পোরেশনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মসিক নির্বাচনে ৩ লাখ ৩৬ হাজার ৪৯০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। ভোট হবে ইভিএমে।
মেসেঞ্জার/আপেল