ছবি : মেসেঞ্জার
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, সাতক্ষীরার মানুষ শুধু চিংড়ি রপ্তানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে না। সাতক্ষীরার তরুণ উদ্যোক্তারা ঘরে বসে সেবা রপ্তানি করে এবং আউটসোর্সিং করে ডলার, পাউন্ড এবং ইউরো আয় করছে।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্মার্ট উপহার বিশ্ব জয়ের হাতিয়ার দিয়েই তারা এই কাজ করছে। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারী। তাদের বাদ দিয়ে দেশকে উন্নয়নের শিখরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম নারীদের বিশেষ কোটায় চাকরির ব্যবস্থা করেছিলেন। চাকরিতে ১০ শতাংশ কোটা দিয়ে নারীদের এগিয়ে নিয়েছিলেন। সংসদের সংরক্ষিত আসনের পদ্ধতি বঙ্গবন্ধু চালু করেছিলেন।
তিনি আরো বলেন, সাতক্ষীরার সংরক্ষিত আসনের লায়লা পারভীন সেঁজুতি আপা যেমন সংসদে এবং বাইরে কাজ করার সুযোগ পেয়ে দেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন। নাগরিক সনদপত্রে বাবার পাশাপাশি মায়ের নাম যুক্ত করে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগে শুধুমাত্র পুরুষ শিক্ষক ছিলো। এখন নারী শিক্ষক বেশি দেখা যায়। নেপোলিয়নের প্রখ্যাত উক্তি করেছিলেন তুমি আমাকে শিক্ষিত মা দাও, আমি তোমাকে শিক্ষিত জাতি দেব।
বর্তমান সরকার নারীদের শিক্ষিত ও স্মার্ট হিসে গড়ে তুলেছেন। শেখ হাসিনা ৬০ শতাংশ কোটা দিয়ে প্রাইমারিতে চাকরির সুযোগ দিয়েছেন এইচএসসি পাশ হলে প্রাইমারি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে পারতো। আগে কন্যা সন্তানের জন্ম হলে দুর্ভাগা মনে করতো।
প্রধানমন্ত্রী নারী মর্যাদার দেওয়ার পর সেটা এখন কেউ মনে করে না। আগে যৌতুক প্রথা ভয়াবহ অবস্থা ধারণ করেছিলো কিন্তু বঙ্গবন্ধু কন্যা নারীদের বিচারালয় থেকে শুরু করে সব জয়গায় চাকরি সুযোগ করে দিয়েছেন। আমাদের মায়েরা এখন সম্পদে পরিণত হয়েছে।
নারীদের এগিয়ে নিতে বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছেন। তার মধ্যে হার পাওয়ার প্রকল্প একটি। এই প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ নিয়ে মাত্র ৫ মাসে যোগ্য এবং দক্ষ হয়ে উঠেছে আমাদের নারীরা। আগে যারা ঠিকমতো কম্পিউটারের মাউস ধরতে পারত না। তারা এখন আউটসোর্সিং করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করছে। সমাজের বোঝা হিসেবে বিবেচিত নারীদের বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্মার্ট নারী উদ্যোক্তায় পরিণত করেছেন।
শুক্রবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১১টায় সাতক্ষীরা জেলা শিল্প কলা একাডেমিতে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসন ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে হার পাওয়ার প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে স্মার্ট উপহার শিক্ষার্থীদের ল্যাপটপ বিতরণি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, পোস্ট অফিসকে ডিজিটালাইজেশন করে সকল সেবা দোড়গোড়ায় পৌছে দেওয়া হয়েছে। দুটি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নারীদের আমুল পরিবর্তন হয়েছে। সাতক্ষীরায় ১৩০ কোটি টাকা ব্যায়ে শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ইনকিভেশন সেন্টার করা হবে। বাকী উপজেলা এই প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে উচ্চ গতির ইন্টারনেট দেওয়া হবে।
তালার শিক্ষার্থী বোরহান উদ্দিনকে ফাইটার প্লেন বানাতে ৫ লাখ টাকার সরকারি আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দেন। তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজিব ওয়াজেদ জয়ের পক্ষ থেকে ল্যাপটব উপহার দেওয়া হয়।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী ডা: আফম রুহুল হক, সাতক্ষীরা ১ আসনের সদস্য সদস্য ফিরোজ আহমেদ স্বপন, সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশু, সাতক্ষীরা সংরক্ষিত আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়প্রাপ্ত লায়লা পারভীন সেঁজুতি, সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মুহাম্মদ মতিউর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি একে ফজলুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
বক্তরা বলেন, বর্তমান সরকার তথ্য প্রযুক্তি খাতে ব্যাপক গুরুত্ব দিয়েছে। সারাবিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে প্রযুক্তি খাতে এগিয়ে যাচ্ছে। আউটসোর্সিং বাংলাদেশ তরুণেরা অনেক এগিয়ে গেছে। এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীরা আরও এগিয়ে যায়ে।
বর্তমান সরকার নারীদের স্মার্ট নারী উদ্যোক্তা হিসেবে তৈরী করেছে। ল্যাপটপ দিয়ে জরুরী কাজ করে এই ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবে। সাতক্ষীরায় আইটি পার্ক তৈরীর দাবী করেন বক্তরা।
শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন টুম্পা, নাজমিন নাহার ও চম্পক লতা। কাজী তারানা পরিচালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন হার পাওয়ার প্রকল্পের উপ প্রকল্প পরিচালক নিলুফার ইয়াসমিন। এই প্রকল্পের আওতায় ২৪০ জন নারী প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে এ ল্যাপটপ বিতরণ করা হয়।
মেসেঞ্জার/আসাদ/আপেল