ঢাকা,  শনিবার
২৭ জুলাই ২০২৪

The Daily Messenger

ভালোবেসে শিবচরের যুবককে বিয়ে করলেন ইন্দোনেশীয় তরুনী

মাদারীপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

ভালোবেসে শিবচরের যুবককে বিয়ে করলেন ইন্দোনেশীয় তরুনী

ছবি : মেসেঞ্জার

ভালোবেসে শিবচরের যুবককে বিয়ে করলেন ইন্দোনেশীয় তরুণী। শুক্রবার(২৩ ফেব্রুয়ারি) ধুমধাম করে সম্পন্ন হলো তাদের বিয়ের আয়োজন। রাত অবধি বিয়ের নানা আয়োজনে মুগ্ধ ইন্দোনেশীয় তরুণী ইফহা। মাদারীপুর জেলার শিবচরের কুতুবপুর ইউনিয়নের বড় কেশবপুর গ্রামের মো.লাল মিয়া মাদবরের মেঝ ছেলে শামীম মাদবরের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন এই তরুনী।

বাংলাদেশী শামীম এবং ইন্দোনেশীয় ইফহা উভয়ই কাজের সুবাদে সিঙ্গাপুর থাকেন। গত ৬ বছর ধরে শামীম সিঙ্গাপুরে রয়েছেন। এবং ইফহাও সেখানে কসমেটিকস এর ব্যবসায় করছেন। কাজের সুবাদেই তাদের সিঙ্গাপুরে থাকা। সেখানেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রথম পরিচয় হয়। এর পর সখ্যতা বাড়ে, দেখা-সাক্ষাত হয়। সম্পর্ক গড়ায় প্রেমে। অতঃপর দুই বছরের প্রেমের সম্পর্ক থেকে বিয়ে করেন এই যুগল।

পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সিঙ্গাপুরে থাকা অবস্থাতেই শামীম তার পরিবারকে বিষয়টি জানান। বিদেশী তরুনীকে বিয়ের ব্যপারে শামীমের পরিবার প্রথম দিকে রাজি হয়নি। অন্যদিকে ইফহার পরিবারও এই সম্পর্ক বিয়েতে গড়াক তা চাননি। উভয় পরিবারকে বোঝাতে সক্ষম হলে গত ৩০ জানুয়ারি বাংলাদেশে আসেন শামীম। এরপর গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ইন্দোনেশীয় তরুনী ইফহাও আসেন বাংলাদেশে। শামীম মাদবরের পরিবার স্বানন্দে গ্রহন করেন ওই তরুণীকে। শুক্রবার রাত পর্যন্ত চলে বিয়ের অনুষ্ঠান।

শামীমের পরিবারের সদস্যরা জানান, স্বাভাবিক ভাবেই ভীনদেশী মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ে হোক এটা পরিবার মেনে নিতে চায় না। কিন্তু ওরা পরস্পরকে গভীরভাবে ভালোবাসে। মেয়ের পরিবারকেও মেয়েটি ম্যানেজ করেছে। আমরা ওদের সুখের কথা ভেবে রাজি হয়েছি। মেয়ের পরিবারের সাথেও কথা বলেছি। ওরাও মুসলিম। মেয়েটি খুবই ভালো, হাসিখুশি। সব মিলিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানও ধুমধামের সাথে হয়েছে।

সালমা আক্তার নামে প্রতিবেশী বলেন, 'বিদেশী মেয়ের সাথে বিয়ে হচ্ছে, গ্রামের লোকজন সকাল থেকে দেখতে আসছে। সবার মধ্যে কৌতুহল। বিদেশী হলেও টুকটাক বাংলা বলতে পারে। মেয়েটি খুবই হাসিখুশি থাকে। সবার সাথে আনন্দ নিয়ে আছে এখানে।'

এদিকে বিদেশী তরুনীর বিয়ের অনুষ্ঠান দেখতে ভিড় জমায় এলাকাবাসী। প্রায় ৮ শতাধিক মানুষের খাবার আয়োজনের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয় বিয়ের অনুষ্ঠান।

প্রতিবেশীরা বলেন,'বিদেশী মেয়ের সাথে বিয়ের ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। মেয়েকে দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন এসে ভিড় করে।'

শামীম মাদবরের বাবা লাল মিয়া মাদবর বলেন, 'বিদেশী মেয়েকে আমার ছেলে পছন্দ করেছে। মেয়েও ছেলেকে পছন্দ করে। আমরা ওই মেয়ের পরিবারের সাথে কথা বলেছি। তারাও বিয়েতে রাজি হয়েছেন। শামীম আসার কিছুদিন পর বিদেশী মেয়েও বাড়িতে আসে। শুক্রবার শামীম ও আমার ছোট ছেলে সুমনের একত্রে বিয়ে দিয়েছি। এক সাথে অনুষ্ঠান করেছি। সবাই আনন্দিত। এখন ওরা ভালো থাকুক এই দোয়া করি।'

শামীম বলেন, 'ইফহা ইন্দোনেশীয়ান তরুনী। তবে সিঙ্গাপুর থাকে। ওখানে থাকা অবস্থাতে প্রথম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় হয়। পরে দেখা-সাক্ষাত হয়। ঘণিষ্টতা বাড়ে। সম্পর্কে প্রেমে গড়ায়। আমাদের কারো পরিবারই রাজি ছিল না। আমরা পরস্পরের পরিবারকে বুঝিয়েছি। পরে তারা বিয়েতে রাজি হয়। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি বিয়ের জন্যই ইফহা বাংলাদেশে আসে।'

তিনি আরও বলেন, 'আমি আর ইফহা বিয়ের সিদ্ধান্তে আসার পর থেকেই ভেবে রেখেছি বিয়েতে আমরা পরিবারের কাছ থেকে কোন টাকা নেবো না। নিজেরা বিয়ের আয়োজনের জন্য টাকা জমিয়েছি। আমরা দুজনই সিঙ্গাপুরে নিজ নিজ কাজ করি,উপার্জন করি। পরস্পরের মধ্যে বোঝাপড়াও ভালো। দোয়া করবেন বাকী জীবন যেন সুখে কাটে।'

ইফহা বলেন,'আমি খুবই খুশি শামীমকে পেয়ে। ও খুবই ভালো মনের মানুষ। আমরা সিঙ্গাপুর যাবো। ওখান থেকে ইন্দোনেশীয়া বেড়াতে যাবো বাবা-মায়ের কাছে।'

মেসেঞ্জার/ফারদিন