ছবি: মেসেঞ্জার
পটুয়াখালীতে স্ত্রীর হাতে স্বামী খুন হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পৌর শহরের কলাতলার মীম আক্তার (১৯) নামের স্ত্রী তার স্বামী রাকিব (৩০) গলা কেটে হত্যার পর থানায় আত্মসমর্পন করেন। মীমকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়ার পাশাপাশি রাকিবের দেহ ময়নাতদন্তেরর জন্য মর্গে পাঠান হয়েছে। মীম সদর উপজেলার ইটবাড়িয়া গ্রামের মোঃ জুয়েলের কন্যা। রাকিব ভোলার লালমোহন উপজেলার ফুলবাগিচা গ্রামের মোঃ নজরুল ইসলামের পুত্র। নজরুল ইসলাম ঔষধের হকারি পেশায় দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে পটুয়াখালী শহরে কলাতলার আকন বাড়ি এলাকায় বসবাস করতেন।
শুক্রবার (১ মার্চ) রাতে থানায় গিয়ে রাকিবের স্ত্রী মীম পুলিশকে জানায়, প্রেমের বিয়ের পর থেকে স্বামীর বেকারত্বে দাম্পত্য কলহ,পারিবারিক অশান্তি, সারাক্ষন মারপিট, ঘন ঘন বাবার বাড়ী পাঠিয়ে সেখানে গিয়েও নির্যাতন, শশুড় বাড়ীর লোকজন সুরক্ষা না দেয়ায় সে অতিষ্ঠ হয়ে বটি দিয়ে কুপিয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে। তাকে হেফাজতে নিয়ে পরে পটুয়াখালী শহরের কলাতলা (৩য় লেন) আকন বাড়ী সড়কের ভাড়া বাসা থেকে স্বামী রাকিবের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, রাকিবের বাবার ভাড়া বাসায় ওঠার পর থেকেই পারিবারিক কলহ শুরু হয়। এক পর্যায়ে রাকিবের মা বাসা ছেড়ে অন্য ছেলের বাসায় চলে যায়। মাদক ব্যবসা ও মাদকাসক্তিসহ নানা অভিযোগ ও গুঞ্জন আছে মীম রাকিবের বিরুদ্ধে। মীমের এর আগেও বিয়ে হয়েছিল, তার বাবা-মাকে নিয়েও আছে নানা গুঞ্জন অভিযোগ। আগের দিন ঝগড়া করে বাবার বাড়ী চলে গেলে শুক্রবার বিকেলে মীমকে নিয়ে বাসায় ফেরে রাকিব।
রাকিবের বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আসরের সময় রাকিব ও মীম বাসায় আসছে। আমি আসরের নামাজ পড়তে গেছি। নামাজ পরে এসে দেখি তারা বাসায়। আমার ছোট ছেলে এসে বলে বড় ভাইয়ের (রাকিব) গলার মধ্যে কেমন যেন শব্দ করে। এ খবর শুনে আমি মীমদের ঘরে গেলে মীম জানায় রাকিব ঘুমাচ্ছে। এ কথা শুনে ফিরে আসি। পরে আমি মাগরিবের নামাজ পরে ফিরে আসার পর ছোট ছেলে জানায়, রাকিবকে মেরে ফেলছে।
এদিকে শুক্রবার দূপুরে বাবা মারা যাওয়ার খবরে শনিবার সকালে তার মরদেহ দাফনে ভোলা যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন রাকিবের বাবা। এরই মধ্যে সন্ধায় ছেলে খুন হওয়ায় শোকে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন নজরুল ইসলাম। একই দিনে পিতা-পুত্রকে হারিয়ে শোকে দিশেহারা নিহতের বাবা। রাকিবের বাবা নজরুল ইসলাম এ ঘটনায় মীমের ফাঁসি দাবি করেন।
পটুয়াখালীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আহমাদ মাঈনুল হাসান বলেন, ‘হত্যার বিষয়টি আশেপাশের লোকজন টের পায়নি। খুন হওয়া ব্যক্তির ছোট ভাই ঘটনাস্থলের একটু দূরে মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, তিনিও টের পাননি। কেন কি কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তা জানার চেষ্টা চলছে। খুনের স্বীকারোক্তি দিলেও এর পেছনে অন্য কারনও থাকতে পারে তাই মীমকে স্বীকারোক্তির জন্য আদালতে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদনসহ এসব নানা বিষয়ে তদন্ত করবে পুলিশ।
মেসেঞ্জার/সাদিয়াল/ফারদিন