
ছবি : সংগৃহীত
বরিশালের বাকেরগঞ্জে ইয়াবা সেবনে বাধা দেওয়ায় বৃদ্ধা রিজিয়া বেগমকে (৬০) পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২০ এপ্রিল) দিনগত রাতে বাকেরগঞ্জের মধ্যকাটাদিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। রোববার (২১ এপ্রিল) জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম।
অন্তত ৭ মাস আগে অভিযুক্তরা গলায় কাপড় পেঁচিয়ে হত্যা করে বৃদ্ধার বসতঘরে লাশ মাটি চাপা দিয়ে রাখে বলে জানিয়েছে পুলিশ। বৃদ্ধার একমাত্র ছেলে রাসেল গাজী চাকরীর সুবাদে স্ত্রী নিয়ে ঢাকায় থাকার সুবাদে ৬ মাস আগে সবশেষ মায়ের সঙ্গে কথা হয় বলে জানিয়েছেন।
গ্রেফতার যুবকরা হলেন, বাকেরগঞ্জের মধ্যকাটাদিয়া গ্রামের মৃত আইউব আলীর ছেলে মো. ফয়সাল (৩৫) ও একই এলাকার মৃত কালাম হাওলাদার কালুর ছেলে লালচাঁন (৩২)।
সংবাদ সম্মেলন পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ইউনিয়নের মধ্য কাটাদিয়া গ্রামের মৃত জয়নাল গাজীর স্ত্রী রিজিয়া একাই বসবাস করতেন। প্রায় সাত মাস পূর্বে নিখোঁজ হয় রিজিয়া বেগম।
গত (১৩ এপ্রিল) রাতে বৃদ্ধার ছেলে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে আসলে ঘরের ভিতরে কবর সাদৃশ্য মাটির স্তুপ দেখে পুলিশে খবর দেয়।
এরপর আদালতের নির্দেশে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
এ ঘটনায় ১৩ এপ্রিল রিজিয়ার ভাই হাওলাদার মাসুদ অজ্ঞাত আসামি করে বাকেরগঞ্জ থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার সূত্র ধরে তদন্তে নামে বরিশাল জেলা পুলিশ।
পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম আরও বলেন, প্রযুক্তির ব্যবহার করে এ ঘটনায় জড়িত দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার দুই যুবক বৃদ্ধার বসতঘরের পাশেই ইয়াবা সেবন করতো।
ইয়াবা সেবনে বাধা দেওয়ায় ঘটনার দিন অর্থাৎ প্রায় সাত মাস আগে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটায় ফয়সাল ও লালচাঁন।
এরপর বৃদ্ধার ঘরেই মাটি খুঁড়ে লাশ চাপা দেয় তারা। গ্রেফতার দু’জনই মাদকসেবী। তাদের আদালতের মাধ্যমে রোববার (২১ এপ্রিল) কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার।
এ বিষয়ে নিহতের ছেলে রাসেল গাজী জানান, আমি ও আমার স্ত্রী চাকরির জন্য ঢাকাতে থাকি। সর্বশেষ ছয় মাস আমার মায়ের সঙ্গে কথা হয়। এরপর আর আমাদের সঙ্গে তার কোনো যোগাযোগ ছিল না।
এবার রোজার ঈদে বাড়িতে এসে দেখি মায়ের বসতঘর তালাবদ্ধ। তারপর ঘরের একাংশ ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে দেখি মেঝেতে একটি অংশ লেপ ও কাঠের গুঁড়ির কিছু অংশ দিয়ে ঢেকে রাখা।
এতে আমার সন্দেহ হলে তা সরিয়ে কবর সাদৃশ্য কিছু দেখতে পাই। পরে আমরা মাটি খুঁড়ে আমার মায়ের লাশের সন্ধান পাই।
মেসেঞ্জার/মিরাজ/তারেক