ঢাকা,  সোমবার
২০ মে ২০২৪

The Daily Messenger

ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ে ভক্তদের মিলনমেলা

বগুড়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:৩৬, ৯ মে ২০২৪

আপডেট: ১৮:৪২, ৯ মে ২০২৪

ঐতিহাসিক মহাস্থানগড়ে ভক্তদের মিলনমেলা

ছবি : মেসেঞ্জার

বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে ঐতিহ্যবাহী মহাস্থানে গঞ্জিকাসেবীদের মহা মিলনমেলা। ঐতিহাসিক মহাস্থান গড়ে হযরত শাহ সুলতান বলখী (রঃ) এর বিজয় দিবস বা বৈশাখের শেষ বৃহস্পতিবার।

যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালন হওয়ার কথা থাকলেও, পুলিশ প্রশাসনের কোন বাধাই তারা মানছে না। বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরের মধ্যে লক্ষাধিক নারী-পুরুষের সমাগম ঘটেছে। তবে,সকল প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা উপজেলা প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর কঠোর নজরদারি রয়েছে।

ইল বাবা ইল, দমে দমে গিল। নাচ গান আর গাঁজা সেবনের মধ্যে দিয়ে পালন করে বৈশাখের শেষ বৃহস্পতিবার। প্রতি বছরের ন্যায়, পুন্ড্র বর্ধনের রাজধানী প্রাচীন ঐতিহ্যের বাহন হিন্দু-মুসলিমদের তীর্থ স্থান, বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থান গড়ে হযরত শাহ্ সুলতান বল্খী মাহীসওয়ার (রহঃ) এর মাজার এলাকায়,বৈশাখ মাসের শেষ বৃহস্পতিবার এ মেলা বসেছে ।

মহামারী করোনার কারনে গততে দুই বছর এই মেলা হয়নি। ঐহিতাসিক মহাস্থান গড়ে লাখো নারী পুরুষের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার (৯ মে) পালিত হলো গাঁজা সেবীদের মিলন মেলা।

বেশকয়েকদিন আগেথেকেই শুরু হয় গন্জিকাসেবীদের মিলন মেলা তবে বৃহস্পতিবার (৯ মে) দিন শেষে সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে মহাস্থান গড়ে অবস্থিত হযরত শাহ সুলতান বলখী মাহমুদ মাহীসওয়ার (রঃ) এর মাযার ও এর আশপাশের এলাকায় শরিয়ত, মারিফত, তরিকত, হাকিকত, মুরশীদি, ভাওইয়া, ভাটিয়ালীসহ বিভিন্ন ধরনের গান নেচে গেয়ে রাত কাটিয়েছে ভক্তরা।

এ উপলক্ষে দেশ ও দেশের বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার জটাধারীদের আগমন ঘটে এখানে। জটাধারী নারী পুরুষ গানের ফাঁকে ফাঁকে মনের সুখে গাঁজার কলকিতে টান দেয় আর বিভিন্ন ধরনের সিকলি বলে।

গাঁজার ধুঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে মহাস্থান গড় এলাকার আকাশ বাতাস। এসব দৃশ্য দেখতে দেশের বিভিন্ন এলাকার লাখো জনতা হুমড়ি খেয়ে পড়ে এখানে।

মহাস্থান এলাকায় গাঁজার ধুঁয়া বন্ধ করতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও প্রশাসন কঠোর অবস্থান নিয়েছিল। বগুড়া পুলিশের একটি সূত্র জানায়, এবার শেষ বৈশাখিতে মহাস্থান গড় এলাকায় গাঁজা সেবন তথা সম্পূর্ন মাদকমুক্ত পরিবেশ এবং সার্বিক আইনশৃংখলা বজায় রাখতে সার্বক্ষনিক ম্যাজিস্ট্রেট, বিপুল পরিমান পোষাক ও সাদা পোষাকে পুলিশ, র‌্যাব, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন দায়িত্ব পালন করেন।

তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, মাজার এলাকা সম্পূর্ন গাঁজা মুক্ত পরিবেশে এবারের শেষ বৈশাখ পালিত হচ্ছে। পুলিশ ও র‌্যাব সদস্যরা অত্যান্ত সতর্ককতার সাথে মহাস্থানে আগত হাজার হাজার মানুষদের তল্লাশী করার চেষ্টা করেছে। মহাস্থান গড় এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সারা দিন ও রাতের কিছু অংশ গোটা এলাকা ছিল উৎসবমুখর।

এলাকার ব্যবসায়ী রহেদুল ইসলাম জানান,  প্রতিবছরের মতো এবারো লক্ষাধিক জিয়ারতকারীর পাশাপাশি জটাধারী পাগলা-পাগলী গঞ্জিকাসেবিদের আগমন ঘটে এই পুর্ণ্যভূমিতে।

হাজার হাজার নারী পুরুষের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে মহাস্থান মাজার ও তৎসংলগ্ন এলাকা। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছিল ভক্তরা। মাজার-মসজিদ এলাকায় জিকির মিলাদ মাহফিল ও নফল নামাজ নিয়ে মুসুলি¬গণ ব্যস্ত থাকছেন। 

বৈশাখী উৎসব উপলক্ষ্যে মহাস্থানগড়ের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকা জুড়ে সহস্রাধিক স্থায়ী ও ভ্রাম্যমান দোকানী তাদের পসরা খুলে বসেছে। বিক্রিও হয়েছে প্রচুর। মহাস্থানগড়ের ঐতিহ্যবাহী কটকটি ভান্ডার গুলিতে বিক্রি হয়েছে বেশ। 

আশেপাশের গ্রামগুলোতে জামাইদের আগমন ছিল লক্ষ্যণীয়। এ উপলক্ষে মাযারের বিশাল এলাকা জুড়ে মেলা বসে। বৃহস্পতিবার দুপুরে পর্যন্ত  লক্ষাধিক নারী-পুরুষের সমাগম ঘটে। রাত যত বেশি হয় মানুষের স্রোত আরো বাড়তে থাকে।  

তবে বিকেল থেকেই মহাস্থান গড় এলাকা ও এর আশপাশে প্রকাশ্য গাঁজার আসর বসে। গত কয়েক বছর আগে থেকে মহাস্থান মাজার মসজিদ কর্তৃপক্ষ গাঁজা সেবনকারীদের মিলন মেলার পরিবর্তে এদিনকে হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (রহঃ) এর বিজয় দিবস ঘোষনা করেছে।

এদিন দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত মুসুলি¬দের রাতভর জিকির আজগার, মাজার জিয়ারত ও নফল ইবাদত করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়ে থাকে।

হযরত শাহ সুলতান মাহমুদ বলখী (রহঃ) এর বিজয় দিবস উপলক্ষে মাযার মসজিদের খতিব ও ঈমাম  মসজিদে আগত হাজার হাজার মুসুলি¬দের ইসলাম ধর্মের দীক্ষা দিয়ে থাকেন।

সুপ্রাচীন ঐশ্বর্যেও লীলাভূমি, আর মহাকাল-চক্রে বিলীন অতীত পুন্ড্রবর্ধন নগরীর ধ্বংসস্তুপের উপর সসীম শুন্য নীলাকাশের নীচে মায়াবী বাংলার বুকে ছায়া-ঘেরা, পাখী ডাকা সবুজ শ্যামলী মায়ার নিকুঞ্জে মহাকালের ঐতিহাসিক মহাস্থানের।

মেসেঞ্জার/আলমগীর/তারেক

Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 768