ঢাকা,  মঙ্গলবার
২২ অক্টোবর ২০২৪

The Daily Messenger

সুরমার পানি বিপদ সীমার নীচে

সুনামগঞ্জের নীচু এলাকার পানিবন্দী ৯ লাখ মানুষ দুর্ভোগে

দ্বিপাল ভট্টাচার্য্য, সুনামগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৯:১৩, ২৪ জুন ২০২৪

সুনামগঞ্জের নীচু এলাকার পানিবন্দী ৯ লাখ মানুষ দুর্ভোগে

ছবি : মেসেঞ্জার

বৃষ্টি না হওয়ায় ও পাহাড়ি ঢলের পানি কম আসায় সুনামগঞ্জের সুরমা নদীর পানি হ্রাস পেয়ে বন্যা পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়ে উচুঁ স্থান থেকে পানি নামতে শুরু করলে ও শহরের কালীপুর,পূর্ব নতুনপাড়া, পশ্চিম নতুনপাড়া, বাধঁনপাড়া, বড়পাড়াসহ ১২টি উপজেলার নীচু এলাকা হতে ধীরগতিতে পানি নামতে শুরু করায় চরম দূর্ভোগে রয়েছেন প্রায় ৯ লাখ পানিবন্দী মানুষ। 

এখনো ঐ সমস্ত নীচু এলাকার রাস্তাঘাট ও বাসাবাড়ি থেকে ধীরগতিতে পানি নামতে শুরু করায় পানিবাহিত ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন নিম্নআয়ের মানুষজন।

সোমবার (২৪ জুন) সকালে সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘরস্থ সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ৩৯ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে,ছাতক উপজেলায় সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার এখনো ২৩ সেন্টিমিটার উপর  দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং গত ২৪ ঘন্টায় ৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।  এখনও বন্যার দুর্ভোগে আছেন জেলার ২১ উপজেলার প্রায় ৯ লাখ মানুষ। বন্যা কবলিত এলাকার লোকজন বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকটসহ নানান পানিবাহিত রোগভোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এদিকে জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার খাসিয়ামারা ও চেলাই নদীর বাধঁ ভেঙ্গে বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী লাখো মানুষ,ছাতকে ও সুরমা নদীর পানি বিপদ সীমার ২৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবািহিত হওয়ার ফলে শহরের বিভিন্ন পাড়ার বাসাবাড়ি পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে । এখন পানি নামতে শুরু করলে পানি ধীরগতিতে নামছে ফলে লাখো মানুষ বিভিন্নভাবে বন্যার পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। অপরদিকে বিশ্বম্ভরপুর,তাহিরপুর,দিরাই,শাল্লা,শান্তিগঞ্জ জগন্নাথপুর,মধ্যনগর ও ধর্মপাশা এসব উপজেলার নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করায় আরো বেশ কয়েক লাখ মানুষসহ মোট ৯ লাখ মানুষ এই জেলায় পানিবন্দী জীবনযাপন করছেন। 

এদিকে উচুঁ এলাকায় পানি কমতে শুরু করলেও নীচু এলাকায় হানা দিচ্ছে মানুষজনের বসতবাড়িতে। গত ২দিন ধরে সূর্যের দেখা মিলায় সাধারন মানুষের মনে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন। 

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়,ইতিমধ্যে গতকাল শনিবার রাত পর্যন্ত বন্যায় জেলার ৩ টি পৌরসভা, ৮৮ টি ইউনিয়নের ১৩০৬ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। প্রায় ৯ লাখ মানুষ বন্যা কবলিত হয়েছে। ৬৯৪ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এখনো বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে ১৩ হাজার ৬৪৯ মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আছেন। ইতিমধ্যে জেলা সদরসহ ১২টি উপজেলায় সরকারের তরফ থেকে জি আর ক্যাশ হিসেবে ৩০ লাখ ৯০ হাজার টাকা,শিশু খাদ্য বাবত ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা,গোখাদ্য বাবত ৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা,শুকনো খাবার বাবত ৫ হাজার প্যাকেট এবং জিআরের চাল ১০৪৯.৫০০ মেট্রিকটন বরাদ্দকৃত চাল বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হচ্ছে। 

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, ভারী বৃষ্টি না হওয়ায় সুরমা নদীর পানি হ্রাস পেয়েছে। তবে আপাতত বৃষ্টিপাতের কোন সম্ভাবনা নেই। 

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, জেলায় ৬৯৪ টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে তাদের খাদ্য ও ত্রাণ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বন্যার্তাদের স্বাস্থ্যসেবায় ৯৯ টি মেডিকেল টিম কাজ করছে। 

মেসেঞ্জার/শাহেদ