ঢাকা,  শনিবার
৩১ মে ২০২৫

The Daily Messenger

চিতলমারীতে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

বাগেরহাট প্রতিনিধি 

প্রকাশিত: ১১:১৩, ৩ আগস্ট ২০২৪

চিতলমারীতে নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

ছবি : মেসেঞ্জার

হাওড়, বাওড়, খাল, বিল ও নদীমাতৃক দেশ, বাংলাদেশ। ষড়ঋতু'র দেশ,বাংলাদেশ। বছর ঘুরে চলে আসে বর্ষা।বর্ষায় নদী, খাল বিল, হাওড় বাওড়ে বাড়ছে পানি।আর এই বর্ষা মৌসুমে বাগেরহাটের নিম্মাঅঞ্চলের মানুষের একমাত্র বাহন নৌকা। তাই নৌকা তৈরির কাজে কারিগররা পার করছেন ব্যস্ত সময়।

বর্ষা মৌসুমে বাগেরহাটের নিম্মাঅঞ্চলের মানুষের বাহন হিসেবে নৌকার ব্যবহার আবহামান কালের ইতিহাস ঐতিহ্যের সাথে জড়িত। বর্ষা কালে নিচু এলাকার মানুষের চলাচলে একমাত্র বাহন নৌকা ও  মৎস্যজীবীরা মাছ ধরার কাজেও নৌকার ব্যবহার করে।নিম্মাঅঞ্চলের মানুষের কাছে অতি গুরুত্বপূর্ণ নেীকা।

দিনরাত হাতুড়ি-বাটালের ঠুকঠুকানিতে মুখর বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার নালুয়া বাজার। এ বাজারে অনেকেই নৌকা তৈরীর কাজ করে তাদের সংসার চলে। নৌকা তৈরির কারিগর ও ব্যবসায়ীরা বলছে, বর্ষাকাল আসলেই আমরা নৌকা তৈরী করি আর বিক্রি করি। নৌকার তৈরী ও বিক্রি আয়ের উৎসও ভাল।

নৌকা তৈরির কারিগর হাফিজুল শেখ বলেন, প্রতি সপ্তাহে আমরা ৩০ খানা নৌকা গড়াই। দৈনন্দিন যে মুজুরী পাই তাতে আমাদের পরিবার সাচ্ছন্দে চলতে পারে। বর্ষা মৌসুমেই নৌকা তৈরীর কাজে দিন-রাত ব্যস্ত থাকি।

নৌকা তৈরির কারিগর মোঃ রেজাউল ইসলাম বলেন,আমি আট থেকে দশ বছর ধরে আমি নৌকা তৈরী কাজ করি।প্রতি বছর বর্ষাকাল আসলেই আমরা নৌকার কাজ করি। আমরা সাত-আট জনে মিলে প্রতি দিন আট থেকে নয় খান নৌকা গড়াই। নৌকা তৈরী করে আমাদের সংসার ভালই চলে।

 তিনি আরও জানান, আকার ভেদে ছোট ডিঙি নৌকা তৈরির মজুরি হিসেবে ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকা নেই। কাঠসহ অন্যান্য সরঞ্জাম নৌকার মালিক দেন। কাঠের গুনগত মান ও আকৃতি বুঝে ৫ হাজার থেকে ৭ হাজার টাকা করে প্রতিটি নৌকার খরচ পড়ছে। কাঠ, লোহাসহ অন্যান্য সরঞ্জামের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের চেয়ে খরচ বেশি লাগছে।

নৌকা কিনতে আসা রাসেল হাওলাদার বলেন, আমাদের গ্রামের প্রায়িই মানুষ বর্ষাকালে নৌকা ব্যবহার করে । সামান্য বর্ষাতেই ছোট ছোট  রাস্তাঘাট তলিয়ে যায়। বর্ষার সময় একমাত্র বাহন হচ্ছে নৌকা। তাই নৌকা কিনতে এসেছি। তবে এ বছর নৌকার দাম একটু বেশি। নৌকার এক ব্যাপারির বলেন, আমি ১০ থেকে ১৫ বছর এই নৌকার ব্যাবসা করি। আমি বর্তমানে এখান থেকে নৌকা নিয়ে দেশের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে বিক্রি করি। এই নৌকা বিক্রি করে আমি অনেক ভালো আছি, আমার পরিবার নিয়ে।

নালুয়া বাজারে নৌকার ব্যবসায়ী রমজান শেখ বলেন, তৈরির কারখানার মালিক জানান, আমরা অর্ডার নিয়ে নৌকা তৈরি করছি। আমার কারখানায় কারিগরসহ আট-দশ জন কাজ করে। ‘সিরিজ,কড়ই, হিজল ও মেহগনির কাঠ দিয়ে বেশিরভাগ নৌকা তৈরি করি। এছাড়া আলকাতরা, বাঁশ, তারকাঁটাসহ বিভিন্ন উপকরণ লাগে। বেশিরভাগ ছোট ডিঙি নৌকা যার অধিকাংশই মাছ ধরার কাজে ব্যবহার করা হয়। অনেকে আবার মাছের ঘেরের কাজেও নৌকা নেয়।

তিনি আরো বলেন, দুরদুরান্তের হাট বাজারের ব্যাপারিরা চিতলমারী নালুয়া বাজার থেকে পাইকারি দামে নৌকা কিনে নিয়ে যান। আট থেকে দশ হাত দৈর্ঘ্যরে নৌকা চার-পাঁচ হাজার টাকায় বিক্রি হয়। নৌকা বড় হলে দামও বাড়ে। সেগুলোর মূল্য চুক্তি মোতাবেক ১৩ থেকে ১৫ হাজার টাকার মধ্যে তৈরি করে দেয়া হয়। এখান থেকে পাইকারি এবং খুচরা হিসাবে নৌকাগুলো বিক্রি করা হয়।

মেসেঞ্জার/রিফাত/আজিজ