ছবি : মেসেঞ্জার
দেশের উত্তরের জেলা নীলফামারীতে প্রচন্ড তাপপ্রবাহের পর গত তিন দিনের টানা বৃষ্টিতে তাপমাত্রা কমেছে অনেকটাই। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকালে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫০ দশমিক শূন্য মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে জেলার ডিমলা আবহাওয়া অধিদফতর। ডিমলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সবুর মিয়া।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাত থেকেই কখনও ভারী, কখনও মাঝারি, এ ছাড়াও ঝিরঝির বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে।
শুক্রবার পর্যন্ত তিন দিন ধরে আশ্বিনের বৃষ্টিতে আয় রোজগার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এতে দিনমজুর, জুতার কারিগর, ভ্যানচালক, রিকশাচালকসহ এ শ্রেণির খেটে খাওয়া মানুষজন টানা বৃষ্টির কারণে কাজে যেতে পারছেন না। অনেকেই বাধ্য হয়ে জীবিকার তাগিদে ছুটছেন শহরের দিকে।
নীলফামারী সদরের খোকশাবাড়ী ইউনিয়নের হালির বাজার গ্রামের রিকশাচালক মহব্বত আলী (৪৮) জানান, সাত সদস্যের পরিবারে ভ্যানখানা একমাত্র রোজগারের পথ। ছেলেমেয়েদের খাবারের জোগান দিতে প্রতিদিন শহরে যেতে হয়। কিন্তু গত চার দিনে বৃষ্টির কারণে হাত গুটিয়ে বসে আছেন তিনি। আয় রোজগার না থাকায় অভাবে আছেন সেটাও জানালেন অকপটে।
তিনি বলেন, ‘সকাল থেকে এখন পর্যন্ত ৫০ টাকার ভাড়া পেয়েছি। তা দিয়ে সংসারের কিছুই হবে না। বাধ্য হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’ একই কথা বলেন টুপামারী ইউনিয়নের পুলিশ লাইন এলাকার রিকশাচালক রফিকুল ইসলাম।
সদরের লক্ষীচাপ ইউনিয়নের নৃসিংহ ব্রাহ্মণপাড়ার বিকাশ চ্যাটার্জি বলেন, ‘এই আবহাওয়া দীর্ঘমেয়াদি হলে শাকসবজির (লাল শাক, ধনেপাতা, মুলা শাক, লাউ শাক) ব্যাপক ক্ষতি হবে। বাজারমূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে। এ ছাড়াও ড্যাশা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।’
এদিকে, গত তিন দিনে বৃষ্টি হওয়ায় তাপমাত্রা কমেছে। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার সকালে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ২৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। নীলফামারী হিমালয়ের পাদদেশে থাকায় এ অঞ্চলে আগাম শীতের আগমন ঘটে। গেলো প্রচন্ড তাপপ্রবাহে সকালে ও রাতের শেষভাগে ঘন কুয়াশা দেখা দিয়েছিল। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক (মিটার রিডার) নুরুল ইসলাম জানান, তিস্তা ব্যারাজ এলাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় গড় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ১৩৯ দশমিক শূন্য মিলিমিটার ও বাতাসের গতিবেগ ৬ দশমিক শূন্য কিলোমিটার ও আর্দ্রতা ৯৩ শতাংশ বিরাজ করছে।
ডিমলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সবুর মিয়া বলেন, ‘কয়েকদিন ধরেই প্রখর তাপপ্রবাহ যাচ্ছিল। গত সোমবার রাত থেকে এ অঞ্চলে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত (প্রায় ৬ ইঞ্চি পানি) রেকর্ড করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রেকর্ড করা হয়েছিল ২৫ মিলিমিটার। টানা বৃষ্টিপাতে তাপমাত্রা যেমন কমেছে তেমনি এই বৃষ্টিপাতের ফলে শীতের আগাম আমেজ দেখা দিতে পারে।’
মেসেঞ্জার/রিপন/আজিজ