
ছবি : মেসেঞ্জার
ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় বকেয়া বেতনের দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন একটি তৈরী পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। বুধবার (১২ মার্চ) বেলা দেড়টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া এলাকায় নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়ক অবরোধ করে তারা এ বিক্ষোভ করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা জানান, কথা দিয়েও আশুলিয়ার বাড়ইপাড়ার তৈরি পোশাক কারখানা মাহমুদ ফ্যাশনের শ্রমিক ও স্টাফদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করতে পারেনি কারখানা কর্তৃপক্ষ। আজ তারা বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানা থেকে বের হয়ে কারখানার অদূরে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাড়ইপাড়ায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান। শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরে যাওয়ার জন্য বলেন তারা। বিকাল চারটার দিকে কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করা হয়। তখন শ্রমিকরা সড়ক থেকে সরে যান।
বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের অভিযোগ, বেতন বকেয়া থাকায় তাদের মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে। আজ তাদের বকেয়া বেতন পরিশোধের কথা থাকলেও মালিকপক্ষ তা পরিশোধ করেনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার এক নারী শ্রমিক বলেন, অনেক কষ্টে আছি আমরা। বাচ্চাদের খাবার কিনে দিতে পারি না। বেতন না পাইলে আমরা কীভাবে সংসার চালাব। বেতন-বোনাস কিছুই পাই না। মালিকও খোঁজ নেয় না। খালি তারিখ দেয়, কিন্তু পরিশোধ করে না।
অপর এক পুরুষ শ্রমিক বলেন, আমাদের শ্রমিকদের গত মাসের বেতন এখনো দেওয়া হয়নি। সামনে ঈদ। ঈদের বোনাস ও বকেয়া বেতনের দাবি জানানো হয়েছে। স্টাফদের তিন মাসের বেতন বকেয়া আছে। সে বেতনও আজ দিবে বলছিল। কিন্তু দেয় নাই। আমাদের দাবি সবার বেতন, ঈদের বোনাস ও পাওনা ছুটির টাকা দিতে হবে। পুলিশ টিয়ার শেল মেরে আমাদের সরিয়ে দিছে। অনেকে আহত হইছে।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেন বলেন, তিনি শুনেছেন কারখানাটির শ্রমিকদের দুই মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বকেয়া বেতনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন শ্রমিকেরা।
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। মহাসড়ক ব্যবহারকারীদের দুর্ভোগ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে শ্রমিকদের একাধিকবার সড়ক থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু তারা রাজি না হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে কয়েক রাউন্ড টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে তাদেরকে সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
মেসেঞ্জার/নোমান/তুষার