ঢাকা,  শনিবার
২৭ জুলাই ২০২৪

The Daily Messenger

লোকসানি এনার্জিপ্যাকের মাথায় ঋণের পাহাড়

নিজস্ব প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ২০:৩৮, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩

আপডেট: ২১:০৭, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩

লোকসানি এনার্জিপ্যাকের মাথায় ঋণের পাহাড়

ছবি : সংগৃহীত

ভালো মুনাফা দেখিয়ে ২০২১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি এনার্জিপ্যাক পাওয়ার ডিস্টিবিউশন পিএলসি। তালিকাভুক্ত হওয়ার মাত্র দুই বছর পার হতে না হতেই লোকসানের মুখে পড়েছে কোম্পানিটি। লোকসানের সঙ্গে ঋণও বেড়েছে পাহাড় সমান। কোম্পানিটির ৩০ জুন ২০২৩ সালের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।

কোম্পানির তথ্য অনুসারে, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার আগের দুই বছর অর্থাৎ ২০১৯ এবং ২০২০ সালে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) ছিল যথাক্রমে ৩.১৩ টাকা ও ৩.৮৩ টাকা। তালিকাভুক্ত হওয়ার বছরই ইপিএস আগের বছরের চেয়ে ০.৮০ টাকা কমে দাঁড়ায় ৩.০৩ টাকায়। এরপরের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালে আরও কমে যায় ইপিএস। ওই বছর নামমাত্র ০.৩৮ টাকা ইপিএস দেখিয়েছে কোম্পানিটি। আর চলতি বছরে লাভের পরিবর্তে শেয়ারপ্রতি লোকসান দেখিয়েছে কোম্পানিটি।

কোম্পানি কর্তৃপক্ষ তাদের আর্থিক প্রতিবেদনেই স্বীকার করেছে যে, এনার্জিপ্যাক পাওয়ার লিমিটেড জুলাই ২০২২ থেকে জুন ২০২৩ সালে মুনাফার পরিবর্তে শেয়ার প্রতি লোকসান করেছে ২.৩৬ টাকা। এতে কোম্পানির মোট লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৪ কোটি ৮৭ লাখ ৮৫ হাজার ১৮৯ টাকা।

এনার্জিপ্যাক যে শুধু লোকসানে পড়েছে তাই নয়, মাত্র ১৯০.২০ কোটি টাকার পরিশোধিত মূলধনী কোম্পানিটির স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী ঋণ রয়েছে ১,২৬০ কোটি টাকা। অর্থাৎ কোম্পানির মূলধনের তুলনায় ঋণের পরিমাণ সাড়ে ৬ গুণ বেশি। অথচ ২০২২ সালে কোম্পানির মুনাফা হয়েছিল ৭ কোটি ২২ লাখ ৬২ হাজার টাকা। ২০২১ সালে মুনাফা ছিল ৩৮ কোটি ৬০ লাখ ৩১ হাজার ৩২৮ টাকা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লোকসান ও ঋণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন কোম্পানি সচিব আলাউদ্দিন শিবলী। তিনি ‘দ্যা ডেইলি মেসেঞ্জার’কে বলেন, এককভাবে কোম্পানি মুনাফায় রয়েছে। তবে, সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠানের কারণে মুনাফা থেকে লোকসানে পড়েছে এনার্জিপ্যাক। কোম্পানির দুটি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শুধু এনার্জিপ্যাকই নয়, অন্যান্য কোম্পানিও এই বছর ডলার সংকটসহ নানা কারণে লোকসানে পড়েছে।

তবে, সার্বিকভাবে লোকসান হলেও গাড়ি বা ট্রাকের ব্যবসায় কোম্পানির কিছু মুনাফা হয়েছে। সেখান থেকে সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের ০.৫০ টাকা করে ৩ কোটি ৯৯ লাখ ৯১ হাজার ৭৫৬ টাকা লভ্যাংশ দেবে। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ১৯ কোটি ১ লাখ ৬৩ হাজার ২১৬টি। এর মধ্যে ১১ কোটি ১ লাখ ৭৯ হাজার ৭০৫টি শেয়ার রয়েছে কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালে আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে কোম্পানিটি। কথা ছিল উত্তোলিত টাকায় এলপিজি ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ ও আইপিও প্রক্রিয়ার খরচ নির্বাহে ব্যয় করবে কোম্পানিটি। এর ফলে একদিকে কোম্পানির ঋণ কমবে, অন্যদিকে ব্যবসাও বাড়বে। কিন্তু তালিকাভুক্ত হওয়ার পর কোম্পানিটির ঋণের পরিমাণ না কমে বরং আরো বেড়ে গিয়েছে। আর মুনাফা থাকা কোম্পানিটি পড়েছে লোকসানে। অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের মুনাফার পরিবর্তে এখন লোকসান পোহাতে হচ্ছে।

মেসেঞ্জার/সঞ্জয়/আপেল