ছবি : মেসেঞ্জার
গত সোমবার (২২ এপ্রিল) বাসের ধাক্কায় শান্ত ও তাওফিকের মৃত্যুর ঘটনায় তৃতীয় দিনের মত চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকাল নয়টার দিকে সড়কে গাছ ফেলে, টায়ার পুড়িয়ে, ব্যারিকেড দিয়ে অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করেন তারা।
এরই প্রেক্ষিতে, ২৩ এপ্রিল, মঙ্গলবার বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের কাছে দশ দফা দাবি তুলে ধরেন।
পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে চুয়েটের উপাচার্য ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম, সহ-উপাচার্য ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ, রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির উপস্থিত হন।
এসময় শিক্ষার্থীদের কাছে তাদের দাবি দাওয়া অনুসারে প্রসাশনের নেওয়া পদক্ষেপ গুলো সম্পর্কে অবহিত করেন। শিক্ষার্থীরা দাবি মানার বিষয়ে লিখিত আকারে প্রকাশ করার শর্তে সাময়িক ভাবে কাপ্তাই সড়ক হতে অবরোধ তুলে নেন। তবে সব দাবি আদায় না হওয়ায় পুনরায় আজ সকাল আটটায় আবারও অবরোধ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, প্রশাসন কিছু দাবি মেনে নিলেও সব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তফা খালিদ বিন শামস আরিয়ান বলেন, ‘আমাদের সব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। তৌফিক ও শান্ত ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না।
এদিকে বাস মালিক সমিতি মাত্র দুই লাখ টাকা করে দিবে বলেছে যা নিতান্তই লজ্জাজনক। শাহ আমানত ও এবি ট্রাভেলসকে এদের কাপ্তাই সড়কে রুট পারমিট বাতিল করতে হবে।
এছাড়াও চুয়েট এম্বুল্যান্স ও বাসের সংখ্যা বৃদ্ধির দাবিও মেনে নেয়া হয় নি। চারটি অ্যাম্বুল্যান্স ও পাঁচটি বাসের বদলে একটি করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে যা হতাশাজন‘।
তিনি আরও জানান, ‘সাধারণ জনগণ ও পণ্যবাহী ট্রাক এ রাস্তায় চলাচল করে। সেসব দিক বিবেচনা করে আজ রাতের মধ্যেই আমরা এ রাস্তা ছেড়ে দিতে চাই। তাই, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আবারও আন্দোলনে নেমেছি।’
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বোত্তম ব্যবস্থা নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আমরা পুণরায় আলোচনা করবো এবং ফলপ্রসূ সিদ্ধান্তে আসার ব্যবস্থা করবো।’
উল্লেখ্য: গত সোমবার (২২ এপ্রিল) আনুমানিক বেলা সাড়ে তিনটায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগরে বাসের ধাক্কায় নিহত হন চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইন।
এছাড়া গুরুতর আহত হন একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আরও এক শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু। সহপাঠীদের মৃত্যুর সংবাদ শুনার পর চুয়েটের শিক্ষার্থীরা সেদিন সন্ধ্যায় শাহ আমানতের চারটি বাস আটক করে।
এর মধ্যে তিনটি ভাঙচুর এবং একটিতে আগুন দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীরা আজ তৃতীয় দিনের মতো কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছেন।
মেসেঞ্জার/আফনান/আপেল