
ছবি : মেসেঞ্জার
মহান মুক্তিযুদ্ধের অবয়বে তৈরি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত মেইন গেট ‘বিজয় তোরণ’ ও গেট হাউজ উদ্বোধন করা হয়েছে।
৩০ জুন (রোববার) দুপুরে ফিতা কেটে ও নামফলক উন্মোচনের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।
এ সময় উপাচার্য বলেন, “খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন গেট এবং গেট হাউজ একটি আইকনিক বিষয়। এখানে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের কথা উঠে এসেছে। বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যায়ের সকল শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী যেভাবে নিবেদিত হয়ে কাজ করছেন, তাদের এই উদ্যম আমাকে আরও বেশি কাজ করার সাহস দিচ্ছে।”
উপাচার্য আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক অগ্রযাত্রার পাশাপাশি অবকাঠামোগত পরিবর্তনও আজ দৃশ্যমান। এই অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরী। তিনি বলেন, “খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় আজ নানাদিক থেকে দ্যুতি ছড়াচ্ছে। আজকের এই মেইন গেট উদ্বোধন বড় ধরনের এক ইতিহাসের অংশীদার। বিশ্ববিদ্যালয়ের সৌন্দর্য মেইন গেটের মাধ্যমে শোভা পাচ্ছে।”
রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস এর সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন স্থপতি ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক স্থপতি এস. এম. নাজিমউদ্দীন, সহযোগী অধ্যাপক মো. শেখ মারুফ হোসেন, অধিকতর অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় সংশোধিত) শীর্ষক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ড. মো. হাসানুজ্জামান, প্রধান প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) এস এম মনিরুজ্জামান। উদ্বোধনের পর দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া পরিচালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম মুফতি আব্দুল কুদ্দুস।
প্রসঙ্গত, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু হয়েছিল গল্লামারীর বধ্যভূমির উপর, যেখানে পাকবাহিনীর অত্যাচারে নিভে গিয়েছিল অনেক মুক্তিকামী মানুষের জীবন। নবনির্মিত ‘বিজয় তোরণ’ সেই শহীদদের প্রতি উৎসর্গকৃত এবং তাঁদের আত্মত্যাগে বলীয়ান হয়ে নতুন দেশ গড়ার সংকল্পবদ্ধ প্রতীক। প্রচলিত ফটকের মতো না হয়ে, এই প্রবেশপথ সর্বস্তরে মুক্তির বার্তা দেবে এবং নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের বীরদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করাবে, যা তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও মননের উন্নয়ন ঘটাবে।
মূল প্রবেশের বাঁ-পার্শ্বের আনুভূমিক লম্বিত দেয়ালটি মুক্তিযুদ্ধের স্মারক ৭টি পিলারের উপর দাঁড়িয়ে আছে এবং এটি স্বাধীনতার ভাস্কর্য ‘অদম্য বাংলা’র সাথে সংযুক্ত। বধ্যভূমির মাটিকে শ্রদ্ধা জানাতে পায়ে চলার পথ ও আনুভূমিক চত্বরগুলি কিছুটা উঁচুতে রাখা হয়েছে। প্রবেশমুখের দেয়াল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ‘কালজয়ী মুজিব’ এবং বুদ্ধিজীবী চত্বর সম্মিলিতভাবে এ স্থানকে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের স্থান হিসেবে তৈরি করেছে। দেয়ালের পরেই থাকা ৬টি পিলার নতুন প্রজন্মের রূপক, যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় তথা বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করবে।
এই প্রধান ফটকের নকশা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন ও ট্রেজারার প্রফেসর অমিত রায় চৌধুরীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়, স্থাপত্য ডিসিপ্লিনের স্থপতি এস. এম. নাজিমউদ্দীনের দর্শন ও পরিকল্পনায় এবং স্থপতি নুর মোহাম্মদ খান, স্থপতি অন্তু দাশ, স্থপতি মোঃ শেখ মারুফ হোসেন, স্থপতি ড. এ. টি. এম. মাসুদ রেজা ও প্রকৌশলী ড. খো. মাহফুজ-উদ-দারাইনের সহযোগিতায় প্রণীত হয়েছে।
মেসেঞ্জার/ফারুক/শাহেদ