ছবিঃ মেসেঞ্জার
নাশকতার মিথ্যা মামলায় আটককৃত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখার সমন্বয়ক মো. নূরনবী মুক্তি পেয়েছেন। রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে তাকে মুক্ত করা হয়। মঙ্গলবার (৬ আগষ্ট) বেলা বারোটার দিকে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নূরনবীর আইনজীবী মো. মুজাহিদুল ইসলাম।
(১৯ জুলাই) শুক্রবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে মিছিলের অনুমতি চাইতে ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী মো. নূরনবীসহ কয়েকজন। এসময় পুলিশ তাকে বাধা দেয়। একপর্যায়ে বেলা ১২.১১ মিনিটের দিকে ক্যাম্পাসের সামনে থেকে নূরনবীকে তুলে নেয় পুলিশ।
ঐ সময়ের ভিডিও ফুটেজ ও প্রতিবেদকের হাতে আছে। গ্রেপ্তারের একটি ভিডিও ফুটেজ প্রতিবেদকের হাতে পৌঁছেছে। তাতে দেখা যায়, নিরস্ত্র অবস্থায় বেলা ১২.১১ মিনিটের দিকে ডান হাতে ব্যান্ডেজ লাগানো নূরনবীকে তুলে নিচ্ছে পুলিশ।
তুলে নেয়ার সময় ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন উপস্থিত ছিলেন। এদিকে তাকে গ্রেপ্তারের পর কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে পরদিন সংবাদও প্রচারিত হয়। জানা যায়, নূরনবী কোটা আন্দোলনে অংশ নিয়ে দুর্বৃত্তদের হামলায় ডানহাতে আঘাতপ্রাপ্ত হন এবং তার হাত ভেঙে যায়। গ্রেপ্তারের সময়ও তার হাতে ব্যান্ডেজ লাগানো ছিল।
এদিকে সেদিন (১৯ জুলাই) কোতয়ালি থানা এলাকা (বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস) থেকে তুলে নেয়া হলেও তাকে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং শাহবাগ থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় নূরনবীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ উপাদানাবলি আইনের ৪ (খ), ৫ ও ৬ ধারায় এবং ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহার বলছে, (১৯ জুলাই) দিবাগত রাত ১.০৫ মিনিটে (২০ জুলাই) শাহবাগের শেখ জামাল জাতীয় টেনিস কমপ্লেক্সের বিপরীতের রাস্তা থেকে নূরনবীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং নূরনবীর কাছ থেকে ১২ টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে।
অথচ, নূরনবীকে গ্রেপ্তার করে নেয়ার সময়কার ভিডিও পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, তাকে ১৯ জুলাই বেলা ১২.১১ মিনিটের দিকে নিরস্ত্র অবস্থায় ক্যাম্পাস থেকে তুলে নেয়া হচ্ছে।
সে সময় তাকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে তুলে নেয়া হলেও এজাহারে তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনাস্থল উল্লেখ করা হয়েছে শাহবাগ! এমনকি নূরনবীকে নিরস্ত্র অবস্থায় তুলে নিতে দেখা গেলেও এজাহারে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, গ্রেপ্তারের সময় তার হাতে থাকা ব্যাগ থেকে ১২ টি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। অথচ গ্রেপ্তারের ভিডিওতে তার হাতে কোনো ব্যাগ দেখা যায়নি। এমনকি তাকে শাহবাগ থেকেও গ্রেপ্তার করা হয়নি!
এ বিষয়ে নূরনবীর আইনজীবী মো. মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, নির্বাহি আদেশে জামিন হয়েছে। সুনানি করে আমরা কোর্ট প্রসিডিউর এর মাধ্যমে জামিন নিয়েছি। বেলবন জমা দিচ্ছি, এটা মেজিস্ট্রেটের সিগারেটের পর তা কারাগারে পাঠানো হয়েছিলো। এরপর কারাগার থেকে তাকে ছেড়ে দেওযা হয়।
মেসেঞ্জার/ইমরান/তারেক