
কখনো কি ভাবনায় এসেছে, আয়নায় আমাদের যেমন দেখায় অন্যরাও কি আমাদের ঠিক তেমনি দেখে? গবেষণা থেকে জানা যায়, আমরা নিজেদেরকে যেমন ভাবি অন্যরা আমাদের এর চেয়ে ২০ ভাগ বেশি সুন্দর দেখে। আবার অন্য আরো এক গবেষণায় এর উল্টোটাও বলা আছে।
আয়নায় আমরা যখন চেহারা দেখি, সেখানে শুধু বাহ্যিক দিকেরই কিছুটা প্রতিফলিত হয়, বাকি দিকগুলো সেক্ষেত্রে পরিলক্ষিত হয় না, এমনকি বাহ্যিক রুপেরও সম্পূর্ণটা চোখে পরে না আয়নায়। কারণ আয়নায় চেহারা কি রকম দেখাচ্ছে, সেটাও নির্ভর করে ঠিক কতটুকু আলো আয়না থেকে প্রতিফিলিত হয়ে আমাদের চোখে পরছে তার উপর।
তাছাড়া আয়না হচ্ছে একটা দিমাত্রিক ত্বল, কিন্তু আমাদের পৃথিবীটা ত্রিমাত্রিক। অন্যরা আমাদের ত্রিমাত্রিক ভাবেই দেখে, এর ফলেও নিজেদের আয়নায় যেমন দেখি অন্যদের দেখার সঙ্গে সম্পূর্ণ তা মিলবে না। ঠিক এ কারণেই ছবি ও বাস্তবে দেখতে সবাই এক হয় না।
সৌন্দর্য শুধু বাহ্যিক চেহারায় না, বরং মন ও চেহারার মিশেল । ড.ডেব্রা এবং ড.এভা মানুষের সৌন্দর্য নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা করে ‘The Complete Formula For Looking And Feeling Beautiful' শিরোনামে একটি বই প্রকাশ করেছেন। এতে তারা বলেছেন, শুধু মুখের উপরিভাগ দিয়েই অন্যরা আমাদের সৌন্দর্য বিচার করে না, এর সঙ্গে জড়িত থাকে বেশ কিছু সাইকোলজিক্যাল ব্যাপার।
অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্যের মধ্যে থাকে মানষিক এবং ইমোশনাল দিক, আত্মসম্মান, আত্মসচেতনতা, আত্মবিশ্বাস।
স্বাস্থ্যের সৌন্দর্যের মধ্যে থাকে দেহের গঠন, ব্যায়াম, সুস্থ জীবনযাপন ইত্যাদি।
বাহ্যিক সৌন্দর্যের মধ্যে থাকে আমাদের ত্বক, চুল ,নখ, মেকআপ এসব।
মুলত অন্যরা আমাদের কতটুকু সুন্দর বলে মনে করে, সেটা নির্ভর করে আমাদের অভ্যন্তরীণ সৌন্দর্য বা মনের সৌন্দর্য, আমাদের স্বাস্থ্য, এবং বাহ্যিক/মুখের সৌন্দর্য ও একই সঙ্গে বাইরের পরিবেশেরও এতে প্রভাব থাকে।
তাহলে বলাই যায় আয়নায় আমরা বাহ্যিক চেহারা সেভাবে দেখছি না যেভাবে অন্যরা দেখতে পায়। এতে আমরা নিজের চেহারা যেমনটা দেখছি বা ভাবছি বুঝতেই পারছেন, তা অন্যদের দৃষ্টিতে আলাদা হবে।
গবেষণায় যে বলা হয়েছে, অন্যরা আমাদের ২০ ভাগ বেশি সুন্দর দেখে; এটা কতটুকু সত্য তার শতভাগ নিশ্চয়তা না থাকলেও আমরা নিজেদের যেমন দেখি অন্যরা আমাদের ঠিক এ রকমই দেখে না তা ১০০ ভাগ সত্য।