ছবি : সংগৃহীত
গত দুই সপ্তাহ ধরে ওষুধ কোম্পানিগুলোতে যেভাবে অসন্তোষ চলছে, এভাবে চলতে থাকলে কোম্পানিগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। ওষুধ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করার সুদূরপ্রসারী চক্রান্তের অংশ এ ধরনের শ্রমিক অসন্তোষ। এভাবে চলতে থাকলে দেশে ওষুধের সংকট দেখা দিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মোক্তাদির।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) তেজগাঁওয়ে মালিক সমিতির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা তিনি।
আব্দুল মোক্তাদির বলেন, ওষুধ শিল্পে অস্থিরতা নিরসনে আমরা প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছি। কিন্তু আশানুরূপ কোনও ফল দেখা যাচ্ছে না। এই শিল্পের উৎপাদন ব্যাহত হলে দেশের চাহিদার পাশাপাশি বিদেশে রফতানি বাধাগ্রস্ত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ওষুধ কোম্পানির মালিকরা বলেন, জিম্মি করে, ভাঙচুর করে দাবি আদায় করা ন্যায়সঙ্গত নয়। একটি দাবি আদায় মেনে নেওয়ার পরদিন আরও কোনও নতুন দাবি নিয়ে আসছেন শ্রমিকরা। এটি এই ফার্মাসিউটিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি ধ্বংস করার একটা চক্রান্তের অংশ কিনা বলেও প্রশ্ন রাখেন তারা।
মালিকরা জানান, অসন্তোষের কারণে আজ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত দেশের বড় ওষুধ কারখানাসহ ১৯টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে মালিক পক্ষ।
ওষুধ শিল্প মালিকেরা বলেন, ওষুধ শিল্পে বিগত ৫০ বছরে ধরে কোনও শ্রমিক উত্তেজনা বা আন্দোলন হয়নি। কিন্তু ইদানীং দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিকেরা বিভিন্ন দাবি ও আইনবহির্ভূত আন্দোলন ও ভাঙচুর করছে। তারা কারখানায় কর্মকর্তাদের ঢুকতে বাধা দিচ্ছে। এতে ওষুধ তৈরি ব্যাহত হচ্ছে। ফলে অচিরেই দেশে অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের সংকট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা করছেন তারা।
তারা বলেন, শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার পর দুই-একদিন কাজ করছে। আবার তারা ভিন্ন অযৌক্তিক দাবি উত্থাপন করছে। একটি কারখানায় বেতন বাড়ানো হলেও অন্যরা আবার সক্রিয় হয়ে উঠছে। এভাবে ওষুধ শিল্পে চরম অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় গত কয়েক দিনে তারা ১৯টি কারখানা বন্ধ করে দিয়েছেন।
ওষুধ শিল্প মালিকেরা শ্রমিকদের দাবি–দাওয়া, মিছিল, ঘেরাও কর্মসূচি বা ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ বন্ধ করে কারখানায় উৎপাদন শুরু করা অত্যন্ত জরুরি বলে মনে করছেন। তারা বলেন, শ্রমিকেরা নিত্য নতুন দাবি উত্থাপন করছে। এতে পুরো শিল্পে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
মালিকরা বলেন, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে তারা বাধ্য। কিন্তু কর্মকর্তা ও উৎপাদনকারীদের জিম্মি করে তাৎক্ষণিক দাবি আদায় কখনও সম্ভব না। শ্রমিকরা বলে, এখনই তাদের দাবি মেনে লিখিত দিতে হবে। কোনও প্রতিষ্ঠান দাবি মেনে নেওয়ার পর আবার অন্য দাবি নিয়ে হাজির হচ্ছে।
তারা জানান, এই শিল্পে কর্মরতদের কারখানা ভেদে বেতন কাঠামো ভিন্ন রয়েছে। তবে দীর্ঘদিনে এই ধরনের পরিস্থিতিতে তারা পড়েননি। দেশের শিল্পকে ধ্বংসের হাত দেখার রক্ষার দাবি জানিয়েছেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে ওষুধ শিল্প মালিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
মেসেঞ্জার/আজিজ