ফাইল ছবি
তীব্র দাবদাহে পুড়ছে সারাদেশ। ঢাকার বাতাসে ঝরছে আগুনের ফুলকি। অসহনীয় গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। তাপমাত্রা বাড়ছে প্রতিদিনই। সোমবার (২২ এপ্রিল) নতুন করে আরও ৭২ ঘণ্টার হিট অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। এমন তীব্র দহনের মধ্যে গত কয়েকদিন রাজনীতিতে ছড়ায় পুরনো উত্তাপ। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণা আসে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির পক্ষ থেকে।
জাতীয় নির্বাচনের পর দু'দলই বড় শোডাউনের লক্ষ্যে প্রস্তুতি বৈঠক সম্পন্ন করেছে। এর মধ্যে আগামী শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ দলের কারাবন্দি নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশের ঘোষণা দলটি। পুরনো রুপে একই দিন রাজধানীতে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশের কথা জানায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এরপরই দেশের সচেতন মহল থেকে প্রশ্ন উঠে- যেখানে গরমের তীব্রতায় মানুষ মারা যাচ্ছে, স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যহত হচ্ছে সেখানে ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ দুটো সড়ক গুলিস্তান ও নয়াপল্টনে কীভাবে সমাবেশ হবে। সড়ক বন্ধ হয়ে গেলে মানুষের কষ্ট বাড়বে।
এ ছাড়া রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বাস্তবায়নে নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দিলে হার্টঅ্যাটাক হতে পারে এমন সমালোচনাও আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বেলা শেষে জরুরি বৈঠকে দুদলেরই কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা আসে।
তীব্র গরমে কীভাবে সমাবেশ হবে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ ডেইলি মেসেঞ্জারকে বলেন, গরমের কারণে সমাবেশ পেছানোর বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। আমরা সন্ধার পর মিটিংয়ে বসছি, সেখানে গরমের তীব্রতা নিয়ে আলোচনা হবে। নেতাকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়গুলো চিন্তা করা হবে। তীব্র গরম ও হিট অ্যালার্টের বিষয়গুলো আমাদের নেতৃবৃন্ধ চিন্তা করছেন। যদি সমাবেশ পেছানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় তাহলে অবশ্যই গণমাধ্যমকে জানানো হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির দপ্তর সম্পাদক সাইদুর রহমান মিন্টু ডেইলি মেসেঞ্জারকে বলেন, তীব্র গরম বাড়ছে। সারাদেশের মানুষের কথা ও দলের নেতাকর্মীদের বিষয় চিন্তা করে আমাদের জরুরি সভা হচ্ছে সন্ধ্যায়। ধারণা করছি ২৬ এপ্রিল সমাবেশের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে। শুক্রবার সমাবেশ না হলে কবে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে যৌথ সভায় সিদ্ধান্ত আসবে। এখনি বলতে পারছি না। এমন তথ্য দেওয়ার দেড় ঘণ্টা পর দলীয়ভাবে কর্মসূচি স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসে।
রাজনৈতিক সূত্রগুলো বলছে, টানা চতুর্থবার ক্ষমতায় আসার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন সম্পর্কে মানুষকে জানাতে বৃহৎ প্রস্তুতি নিচ্ছেন। শুক্রবার পূর্ব নির্ধারিত সময়ে বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ ফটকে সমাবেশ না হলেও খুব শিগগিরই এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
গত রোববার থেকেই দলের সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীর সমাবেশে উপস্থিত থাকার নির্দেশনা পাঠানো শুরু হয়েছে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ ছাড়াও থানা এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে বর্ধিত সভা করে প্রস্তুতি আরও এগিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য নতুনভাবে আন্দোলনের কথা চিন্তা করছে বিএনপি। সমাবেশের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে হাইকমান্ডের নির্দেশে সিরিজ কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। প্রতিদিনই ঘরোয়া বৈঠক ও মতবিনিময় সভাসহ নানা প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম চলছে।
রাজবন্ধিদের মুক্তি, ভোট বর্জন কর্মসূচি, শ্রমিক দিবসে কর্মসূচিসহ বেশ প্রস্তুতি চলছে দলটির।
মেসেঞ্জার/হাওলাদার