আকাশ পরিবহনে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাস্তবায়ন আজকের জাতীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পৃথিবীর মানচিত্রে বাঙ্গালীর নতুন ঠিকানা সোনার বাংলাদেশ। ১৮ দিনের ব্যবধানে বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্নের বীজ নিজ ভূমে ৪ জানুয়ারী ১৯৭২ বিমান বাংলাদেশ এর গোড়াপত্তন। শুভ জন্মদিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স।
স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু মাত্র সাড়ে তিন বছরের কিছু বেশী সময় পান দেশ গঠনে। শুন্য থেকে যার যাত্রা, সেই যাত্রায় এই স্বল্প সময়েই শত বছর সামনে পথ চলার ভিত স্থাপন করেন তিনি। আজ স্বাধীনতার একান্ন বছর অতিক্রম করছে দেশ। অথচ এখনো বাংলাদেশ যেসব নীতির ওপর পরিচালিত হচ্ছে, সেগুলোর অধিকাংশই বঙ্গবন্ধুর ঠিক করে দিয়ে যাওয়া। দেশ গঠনে সেই সময়ে ১২৬ নং আদেশ বলে রাষ্ট্রপতি বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এর যাত্রা শুরু হয়েছিলো।
আজ দেশের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে রয়েছে ২১টি আধুনিক উড়োজাহাজ। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাকে পরিপূর্ণতা দিতেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একের পর এক নতুন নতুন উড়োজাহাজ বহরে যুক্ত করে চলেছেন। একটি শক্তিশালী জাতীয় বিমান সংস্থা গঠন প্রক্রিয়ায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকেই বাস্তবে রূপ দেয়ার প্রচেষ্টায় কাজ করছেন বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।
দেশের মানুষের আকাশপথের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরো সুদৃঢ় করার জন্য জাতীয় বিমান সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারী বিমান পরিবহনের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। একটি শক্তিশালী অর্থনৈতিক অবকাঠামো গঠনে বঙ্গবন্ধু সরকারের পাশাপাশি বেসরকারী ব্যবসাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার, নব প্রতিষ্ঠিত এয়ারঅ্যাস্ট্রা বাংলার আকাশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। শুধু দেশে নয় বিদেশের আকাশে অন্যান্য বিদেশী বিমানসংস্থাগুলোর সাথে প্রতিযোগিতা করে দেশের সুনাম বৃদ্ধি করে চলেছে।
প্রায় অর্ধশতাধিক দেশের সাথে এয়ার সার্ভিস এগ্রিমেন্ট আছে বাংলাদেশের। বাংলাদেশী কমিউনিটি বসবাস করছে মদ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, আমেরিকা সহ পৃথিবীর প্রায় প্রত্যেকটি দেশে। প্রায় ১৫ মিলিয়ন বাংলাদেশী জীবিকার তাগিদে বসবাস করছে কিংবা চিকিৎসা, শিক্ষা, ব্যবসার কারনে অবস্থান করছে।
প্রায় ৩০টির মতো বিদেশী এয়ারলাইন্স বাংলাদেশে ফ্লাইট পরিচালনা করছে। সাধারনত বাংলাদেশী যাত্রীদের বহন করেই ব্যবসা পরিচালনা করছে। আন্তর্জাতিক রুটের মার্কেট শেয়ারের প্রায় ৭০ শতাংশের অধিক বিদেশী এয়ারলাইন্সের কাছে আর অবশিষ্ট ৩০ শতাংশ মার্কেট শেয়ার বাংলাদেশী এয়ারলাইন্সের কাছে। যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। এ অবস্থা থেকে পরিত্রান চায় সকলে। সেই গল্পের শুরু হতে পারে জাতীয় বিমান সংস্থার হাত ধরে। আর সেই হাতকে শক্তিশালী করতে বেসরকারী বিমান সংস্থাগুলো।
এয়ার সার্ভিস এগ্রিমেন্ট অনুযায়ী সব দেশে বাংলাদেশী এয়ারলাইন্স এর বিচরণ করতে পারছে না। আমাদের প্রত্যাশা জাতীয় বিমান সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বিশ্বের এভিয়েশন ব্যবসায় দেশকে নেতৃত্ব প্রদান করুক। আর বাংলাদেশের বেসরকারী এয়ারলাইন্সগুলো জাতীয় বিমান সংস্থার সহযোগী হিসেবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করুক।
আজ জাতির পিতার স্বপ্নে বাংলাদেশে আকাশ পরিবহনে যে শক্ত ভিত দেখতে পাচ্ছি, একটি সুসংগঠিত বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে।
বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে উন্নয়নের শিখরে পৌঁছাতে আকাশ পরিবহনে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। সকল শিল্পের গতিশীলতা বজায় রাখতে এভিয়েশকে এগিয়ে নিতে হবে, যার কোনো বিকল্প নাই।
বিমান বাংলাদেশের জন্মদিনে শুভকামনা সকলের জন্য। শুভক্ষণে প্রত্যাশা, অগ্রসর হউক দেশের এভিয়েশন শিল্প। দেশের অর্থনৈতিক শক্তি স্বাবলম্বী হউক দেশীয় বিমান সংস্থার হাত ধরে।