ঢাকা,  মঙ্গলবার
০১ জুলাই ২০২৫

The Daily Messenger

স্বপ্নযাত্রায় স্বপ্নের বিস্তৃতি আকাশ সমান

প্রকাশিত: ১৮:১৩, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

আপডেট: ১৫:৫৫, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

স্বপ্নযাত্রায় স্বপ্নের বিস্তৃতি আকাশ সমান

আমরা সবাই ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখি, ঘুম ভাঙ্গলে চিমটি কেটে দেখি ঘুমিয়ে আছি নাকি জেগে আছি। ঘুমিয়ে দেখা স্বপ্ন ক্ষণিকের মধ্যে বাতাসে ভেসে ভেসে দূর আকাশে হারিয়ে যায়। বাংলাদেশ এভিয়েশনে একজন স্বপ্নবাজ ব্যক্তিত্ব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন জেগে জেগে স্বপ্ন দেখায় অভ্যস্ত। তিনি সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দেয়ায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।

আজ থেকে ১০ বছর পূর্বে কোনো এক নিরব নিস্তব্ধ শব্দহীন আবহে বাংলাদেশ এভিয়েশন, কন্টকাকীর্ণ আকাশ ভ্রমণ, প্রায় ১০ মিলিয়ন প্রবাসী শ্রমিক, ভাই-বোন, শত সহস্র ছাত্র-ছাত্রীদের আকাশ পরিবহনের যাত্রা, আর সারা বছরের পর্যটন পিপাসু পর্যটকবান্ধব পরিবেশ সব কিছু নিয়ে যখন অসামঞ্জস্যতা, তখনই তিনি স্বপ্নযাত্রায় এয়ারলাইন্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেন। শুধু সিদ্ধান্ত নয়, বাংলাদেশ এভিয়েশনে নতুন সূর্য হয়ে উদিত হয় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। এক বছরের মধ্যেই ড্যাশ ৮-কিউ ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে ঢাকা-যশোর রুটে বাণিজ্যিক ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেন।

প্রতি মুহূর্তে স্বপ্নের ভেলায় ভাসতে থাকেন ইউএস-বাংলার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন। দুইটি ড্যাশ ৮-কিউ ৪০০ এয়ারক্রাফট দিয়ে শুরু, বছর ঘোরার আগেই তিনটিতে রূপান্তর। এক বছরের মধ্যে দেশের অভ্যন্তরে সকল চালু বিমানবন্দরে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। যে স্বপ্ন জেগে দেখা হয় তা কি করে থেমে থাকবে। দুই বছর পূর্ণ হওয়ার পূ্র্বেই দেশের গন্ডি ছেড়ে বিদেশ বিভূঁইয়ে ডানা মেলেছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স।

সময় পেরিয়ে যায় স্বপ্ন বড় হতে থাকে। স্বপ্নের ডালপালা বিস্তৃতি লাভ করতে থাকে। স্বল্প আসনের এয়ারক্রাফটে স্বপ্নগুলোর পূর্ণতা দিতে পারছে না। তাই তিন বছরের মধ্যেই নিয়ে আসে বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট। মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করছে অসংখ্য রেমিট্যান্স যোদ্ধা। দেশীয় এয়ারলাইন্সের স্বল্পতা তাদের আকাশ ভ্রমণকে করে তুলেছে দূর্বিষহ। সেই অসহনীয় অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য জাগ্রত স্বপ্নবাজ ইউএস-বাংলাকে ধারাবাহিকভাবে মধ্যপ্রাচ্যের এয়ারলাইন্সগুলোর সাথে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত করে মাস্কাট, দোহা, দুবাই ও শারজাহ রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করেছে। 

বাংলাদেশী কমিউনিটি পৃথিবীর যেসব দেশে অবস্থান করছে, তাদেরকে সেবা দেয়ার মানসে সেসব দেশে ফ্লাইট পরিচালনার সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দৃঢ় চিত্তে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। সেই পরিকল্পনাকে বাস্তবে রূপ দিতে সিঙ্গাপুর, কুয়ালালামপুর রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে।

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সকে মানবিক এয়ারলাইন্সে রূপ দিতে গিয়ে স্বাধীনতার ৫০ বছরে প্রথমবারের মতো চিকিৎসা সেবা নেয়ার জন্য গমণকারী যাত্রীদের জন্য ভারতের কলকাতার পাশাপাশি চেন্নাই রুটে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করে। 

বাংলাদেশে প্রাইভেট এয়ারলাইন্স শুরুর পর থেকে চালু কিংবা বন্ধ হওয়া সকল এয়ারলাইন্সের উড়োজাহাজগুলোর গড় বয়স প্রায় ১৯ বছর কিংবা তার চেয়েও বেশি। যা যাত্রীদের নিরাপত্তাকে বিঘ্নিত করতে পারে। সেখানে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজগুলোর গড় বয়স হবে ১০ বছরের নিচে। যার ফলে বাংলাদেশী এয়ারলাইন্স হিসেবে ইউএস-বাংলা আস্থার প্রতীক হয়ে উঠছে। স্বপ্ন ছিলো অভ্যন্তরীণ রুটে ব্র্যান্ডনিউ এয়ারক্রাফট দিয়ে যাত্রীদের সেবা দেয়া। আর সেই স্বপ্ন পূরণে ইউএস-বাংলায় যোগ করেছে ৭টি ব্র্যান্ডনিউ এটিআর ৭২-৬০০ এয়ারক্রাফট। 

২টি ড্যাশ ৮-কিউ ৪০০ এয়ারক্রাফট নিয়ে যাত্রা শুরু করা ইউএস-বাংলার বহরে রয়েছে ১৮টি এয়ারক্রাফট। যার মধ্যে তিনটি ড্যাশ ৮-কিউ ৪০০, ৭টি এটিআর ৭২-৬০০ এবং ৮টি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ এয়ারক্রাফট। অনিন্দ্য সুন্দর মায়াবী মালদ্বীপে প্রায় লক্ষাধিক বাংলাদেশী বাস করে। ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সই প্রথম দেশীয় এয়ারলাইন্স হিসেবে মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করেছে ২০২১ সালের ১৯ নভেম্বর থেকে।

থাইল্যান্ডের সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ইউএস-বাংলা ঢাকা থেকে ব্যাংকক ফ্লাইট পরিচালনা করছে পর্যটকদের ভ্রমণকে আনন্দময় করার জন্য। আর চীনের গুয়াংজুতে ফ্লাইট পরিচালনা ছিলো অনেকটা স্বপ্নযাত্রার পথে একধাপ নিজেকে এগিয়ে রাখার জন্য। সেই যাত্রাকে সফলভাবে সম্পন্ন করেছে ঢাকা থেকে গুয়াংজু রুটে ফ্লাইট পরিচালনার মাধ্যমে।

স্বপ্ন দেখার বিস্তৃতি ঘটিয়েছেন আকাশ সমান পরিধি নিয়ে। পবিত্র মক্কা-মদিনাতে হজ্জ্ব ওমরাহ পালন করার সুবিধার্থে সৌদি আরবের বিভিন্ন গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনার স্বপ্ন বুনছে। সেই স্ব্প্নকে বাস্তবে রূপ দিতে আগামী মে মাসে ইউএস-বাংলার বহরে দুইটি এয়ারবাস ৩৩০ যোগ হতে যাচ্ছে। যা দিয়ে ঢাকা থেকে জেদ্দা, রিয়াদ ও দাম্মাম রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করবে ইউএস-বাংলা।

স্বপ্ন আর বাস্তব, পরিকল্পনা আর বাস্তবায়ন যেন একটি আরেকটির পরিপূরক হয়ে উঠছে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুনের স্বপ্নযাত্রায়।

দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে, এশিয়ার গন্ডি পেরিয়ে, প্রত্যাশার পাহাড়ে বিশ্বময় দ্যূতি ছড়িয়ে দিক ইউএস-বাংলার অগ্রযাত্রা।

ডেইলি মেসেঞ্জার/এম আই