ঢাকা,  রোববার
১৬ জুন ২০২৪

The Daily Messenger

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হবিগঞ্জে পরিবর্তনের হাওয়া

পাবেল খান চৌধুরী, হবিগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৭:৪০, ২৩ মে ২০২৪

আপডেট: ১৮:২৮, ২৩ মে ২০২৪

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে হবিগঞ্জে পরিবর্তনের হাওয়া

ছবি : মেসেঞ্জার

৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দুই ধাপের নির্বাচন ইতোমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। দুই ধাপে হবিগঞ্জ জেলার চার উপজেলায় নির্বাচন শেষ হয়েছে। এই চার উপজেলাতেই বর্তমান চেয়ারম্যানরা পরাজিত হয়েছেন। কেউ কেউ হারিয়েছেন জামানতও। বাকী দুই ধাপে হবিগঞ্জের ৫টি উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

চুনারুঘাট উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির লস্কর নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন না। ফলে হবিগঞ্জ সদর, লাখাই, শায়েস্তাগঞ্জ ও মাধবপুর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যানরা কি টিকে থাকতে পারবেন, নাকি এগুলোতেও লাগবে পরিবর্তনের ছোঁয়া? এখন জেলার সর্বত্তই ঘুরপাক খাচ্ছে এমন প্রশ্ন।

এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপ গত ৮ মে অনুষ্ঠিত হয় জেলার হাওরাঞ্চলখ্যাত বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জে। বানিয়াচংয়ে ৩য় উপজেলা পরিষদে নির্বাচিত সাবেক চেয়ারম্যান ইকবাল হোসেন খানের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছেন চেয়ারে থাকা জেলা যুবলীগ সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী।

আর আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় শোচনীয়ভাবে হেরে জামানত হারান চেয়ারম্যানের দায়িত্ব থাকা মর্ত্তুজা হাসান। তিনিও পরাজিত হন সাবেক চেয়ারম্যান আলা উদ্দিনের কাছে।

আর ২য় ধাপে গত ২১ মে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো প্রবাসী অধ্যুষিত নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলা পরিষদের নির্বাচন। এই দুই উপজেলাতেও বর্তমান চেয়ারম্যান মো. ফজলুল হক চৌধুরী সেলিম ও সৈয়দ খলিলুর রহমান পরাজিত হন।

নবীগঞ্জে সেলিম প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকতে পারলেও বাহুবলের বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ খলিলুর রহমান মাত্র ২৬৯ ভোট পেয়ে ৭ প্রার্থীর মধ্যে সর্বশেষ অবস্থান হয়েছে তার।

সাধারণ ভোটারের মধ্যে অনেকেই বলছেন এবার অন্যান্য উপজেলাতেও পরিবর্তন হতে পারে। আবার কেউ কেউ বলছেন দুএকটিতে পরিবর্তন নাও হতে পারে। এ নিয়ে চায়ের দোকান থেকে শুরু করে হাট-বাজার-রাস্তাঘাটে চলে চুলছেড়া বিশ্লেষণ।

এবার দেখার অপেক্ষা পরিবর্তন নাকি পুরাতনে ভরসা রাখবেন সাধারণ ভোটাররা?

আগামী ২৯ মে ৬ষ্ট উপজেলা নির্বাচনের ৩য় ধাপে অগ্নিপরীক্ষায় অবতীর্ণ হবেন আরো ৩ বর্তমান চেয়ারম্যান। হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় বর্তমান চেয়ারম্যান মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, লাখাই উপজেলায় এডভোকেট মুশফিউল আলম আজাদ ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল কঠিন লড়াইয়ে পড়েছেন।

তাদেরকে টেক্কা দিতে মরিয়া হয়ে ওঠেছেন নির্বাচনে অংশ নেয়া অন্যান্য প্রার্থীরা। আর প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের চাপে হিমশিম খাচ্ছেন বর্তমান চেয়ারম্যানরা।

২৯ মে ও ৫ জুন ৩য় এবং ৪র্থ ধাপের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ওই দুইদিন ভোটের লড়াই হবে হবিগঞ্জের হাওর-টিলা-পাহাড়-বন ও চা বাগান অধ্যুষিত ভারতীয় সীমান্তঘেঁষা চুনারুঘাট, মাধবপুর, হবিগঞ্জ সদর, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায়।

চুনারুঘাট উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল কাদির লস্কর শারীরিক অসুস্থতার কারণে নির্বাচনে অংশ না নিয়ে সরে দাঁড়িয়েছেন। ফলে এই উপজেলা পরিষদের চেয়ারে সাবেক বা নতুন কোন মুখ দেখা যাবে। মাধবপুর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ শাহজাহানও এবার পড়েছেন অগ্নিপরিক্ষায়। ওই উপজেলায়ও বদলে দেয়ার সুর ওঠেছে।

হবিগঞ্জ জেলার বর্তমান ৪ চেয়ারম্যান নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পর বাকীদের ভাগ্যে কি আছে এ নিয়ে চলছে সর্বত্র আলোচনা। বাকি ৫টি উপজেলায় মোটর ভোটার রয়েছেন হবিগঞ্জ সদর উপজেলায় ২ লাখ ২৪ হাজার ৮শ ৪৫, লাখাই উপজেলায় ১ লাখ ২৫ হাজার ৬শ ৮৫, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলায় ৬৯ হাজার ৯৯, চুনারুঘাট উপজেলায় ২ লাখ ৪৩ হাজার ৪শ ৭০ ও মাধবপুর উপজেলায় ২ লাখ ৬৭ হাজার ২শ ৫০ জন ভোটার রয়েছেন।

হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোছাঃ জিলুফা সুলতানা জানান, ইতোমধ্যে জেলার ৪ উপজেলায় অত্যন্ত উৎসবমূখর পরিবেশে সুন্দরভাবে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। কোথায়ও কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্টিত হয়েছে। অবশিষ্ট ৫টি উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোট গ্রহণে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জেলা প্রশাসন ও অন্যান্য সংস্থার সমন্বয়ে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালীত হচ্ছে। নির্বাচন সুন্দরভাবে অনুষ্টানের লক্ষ্যে আমরা সকল প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা করেছি। আসা করছি বাকি নির্বাচনগুলোও সুষ্টুভাবে সম্পন্ন হবে।

মেসেঞ্জার/আপেল

Advertisement