ছবি : মেসেঞ্জার
কয়েকদিন পেরুলেই অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল ফিতর। দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত আদায়ের লক্ষ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এশিয়া উপ-মহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মিনার গোর-এ শহীদ বড় ময়দান কর্তৃপক্ষ।
শেষ মুহুর্তে মাঠের শুকনো জায়গা ভিজানোর কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। আর শ্রমিকেরা কাজ করছেন নামাজ আদায়ের লক্ষ্যে মুসল্লিদের দাঁড়ানোর কাতারের দাগ। জামাতে অংশ নিতে আশেপাশের জেলা থেকে আসা মুসল্লিদের জন্য দুটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি মাঠে মাটি ভরাট, ধোয়ামোছা, পানি ছেটানোসহ বিভিন্ন ধরনের সংস্কারমূলক কার্যক্রম চলছে। মুসল্লিদের নিরাপত্তা নির্বিঘ্ন রাখতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওয়াচ টাওয়ার নিমার্ণ করা হয়েছে। সুপেয় পানি ও অজুখানার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
জানা গেছে, ঈদগাহ মিনার জুড়ে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। র্যাব, পুলিশ, আনসার সদ্যসরা ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করবেন। মাঠের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য সিসিটিভি ক্যামেরার ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাঠে প্রবেশের জন্য মোট ১৯টি গেট তৈরি করা হয়েছে। এসব গেটে মেটাল ডিরেক্টর দিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এছাড়াও মুসল্লিদের অজুর করার সুবিধার্থে অজুখানা ও সুপেয় পানির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
শহরের মাতা সাগর এলাকার বাসিন্দা রাকিবুল ইসলাম জানান, আমাদের জেলায় এত বড় ইদগাহ মিনার আর এত বড় ঈদ জামাত হয় এটা আমাদের জন্য অবশ্যই গর্বের বিষয়। গোর-এ শহীদ মাঠ নিয়ে যখন আমাদের সামনে প্রসংশা করে তখন অনেক ভালো লাগে। বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে মুসল্লিরা ঈদের নামাজ পড়তে আসে, অনেকের সাথে দেখা সাক্ষাৎ হয়। আমরা আশা করি আগামীতে বাইরের দেশ থেকেও এই মাঠে নামাজ পড়তে আসবে।
আকাশ ইসলাম নামে এক মুসল্লি বলেন, এখানে এক সাথে লাখ লাখ মুসল্লি এক সাথে নামাজ আদায় করেন। আশেপাশের জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসল্লিরা এখানে নামাজ আদায় করতে আসেন। বাইরে থাকা আসা মুসল্লিদের জন্য দুটি স্পেশাল শাটল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এটা অনেক ভালো উদ্যোগ। এতে করে বাইরে থেকে আসা মুসল্লিরা সহজে যাতায়াত করতে পারবেন। একসাথে যত বেশি মানুষ নামাজ আদায় করবে তত বেশি সওয়াব পাওয়া যায়।
এশিয়া উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় মিনার ও দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠের উপদেষ্টা জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি বলেন, ২০২৩ সালে পবিত্র ঈদ-উল ফিতরে এই মাঠে একসাথে ৬ লক্ষাধিক মানুষ নামাজ আদায় করেছিল। গত ঈদ-উল আযহা থেকে আশপাশের জেলা ও উপজেলাগুলো থেকে আগত মুসল্লিদের সুবিধার্থে দুটি ষ্টেশাল ট্রেনে ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
এবার পবিত্র ঈদ-উল ফিতরেও দুটি ষ্ট্রেশন ট্রেন চলাচল করবে। বিশাল এই জামাতে দিনাজপুর ছাড়াও দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে মসুল্লিরা যেন নামাজে অংশ নিতে পারেন এ জন্য প্রচার প্রচারণা ও নিরাপত্তার বিষয়ে বরাবরের মত জোর দেয়া হয়েছে।
ঈদ স্পেশাল দুটি ট্রেনের সময়সূচী গোর-এ শহীদ বড়ময়দানে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত করার লক্ষ্যে দুটি স্পেশাল ট্রেন থাকছে। একটি ট্রেন ঠাকুরগাঁও থেকে ছেড়ে সেতাবগঞ্জ হয়ে দিনাজপুর এবং অপরদিক পার্বতীপুর থেকে ছেড়ে চিরিরবন্দর থেকে দিনাজপুর।
ঠাকুরগাঁওয়ে ঈদের দিন ভোর ৫ টায় ছাড়বে। ট্রেনটি ঠাকুরগাঁওয়ের শিবগঞ্জ, পীরগঞ্জ, দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ, মঙ্গলপুর ও কাঞ্চন ট্রেন ষ্টেশনে যাত্রা বিরতী দিয়ে সকাল সোয়া ৭ টায় দিনাজপুর ষ্টেশনে আসবে।
অপরদিকে পার্বতীপুরে সকাল ৬টায় ট্রেনটি ছেড়ে মন্মথপুর, চিরিরবন্দর, কাউগাঁওয় যাত্রা বিরতী দিয়ে সকাল পৌনে ৭টা দিনাজপুর ষ্টেশনে থামবে। অপরদিকে নামাজের পর সোয়া ৯টায় পার্বতীপুরমুখী ও সাড়ে ৯টায় ঠাকুরগাঁও মুখী ট্রেনটি দিনাজপুর ষ্টেশন ত্যাগ করবে।
মেসেঞ্জার/আপেল