ছবি : সৌজন্য
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৪০ বিঘা জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিরা। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর পানের বরজে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ক্ষতিগ্রস্তরা। তারা এই পানের বরজকে ঘিরে দিনবদলের স্বপ্ন বুনেছিলেন। সব হারিয়ে সরকারি সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভেড়ামারা উপজেলার ধরমপুর ইউনিয়নের পাটুয়াকান্দী গ্রামের খুশিরপাড়ার মাঠে পানের বরজে অগ্নিকাণ্ডের এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পরে ফায়ার সার্ভিসের আরও দুটি ইউনিট এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আকাশ কুমার কুন্ডু, ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জহুরুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ফায়ার সার্ভিস, ক্ষতিগ্রস্ত চাষি ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি পানের বরজে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়। সেখান থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশের বরজে। এতে কেউ হতাহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। অগ্নিকাণ্ডে ৪০/৫০ জন কৃষকের প্রায় ৪০ থেকে ৫০ বিঘা জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এতে প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত চাষি ফরজ, রবজেল, আব্দুল, ইয়াকুব, মাইরুল, খায়রুল আলী, হোসেন, আকবর, রতন, নিহারুল, বারিক, শহিদুল জানান, ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমাদের সব স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুনে পুড়ে আমাদের প্রায় ৫০ জন চাষির প্রায় এক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। আমরা গরীব মানুষ। পুড়ে যাওয়া ফসল নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। সব স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমরা সবাই মহাবিপদে পড়ে গেছি। সরকারের কাছে সাহায্য চাচ্ছি।
তারা আরও জানান, শানিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে একটি বরজে অগ্নিকাণ্ডের সুত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যেই বাতাসের গতিতে এক বরজ থেকে আরেক বরজে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের পাশে সরকারকে থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে ধরমপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল হক বলেন, ভয়াবহ এই অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ৫০ বিঘা জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এ অগ্নিকাণ্ডে পান চাষিদের ও এলাকার মানুষের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। এই এলাকায় অর্থনীতি নির্ভর করে পান চাষের ওপর। এই ক্ষতি সহজে পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত সরকারি সহায়তা প্রয়োজন।
ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, পাটুয়াকান্দী এলাকায় পান বরজে আগুন লাগার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দ্রুত ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিস ইউনিট হাজির হয়। কিন্তু বাতাসে আগুনের লেলিহান শিখার তীব্রতা বৃদ্ধি পেলে তা আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে। প্রচণ্ড বাতাসে আগুন নেভাতে বেগ পেতে হয়েছে। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। এছাড়া আগুনে হতাহতের কোনো সংবাদ পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আকাশ কুমার কুন্ডু বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রশাসনের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে।
মেসেঞ্জার/রাজু /মুমু