ঢাকা,  শনিবার
০৪ মে ২০২৪

The Daily Messenger

রসু খাঁ খ্যাত টি এ ফারুকের মনোরঞ্জনে আছে শতাধিক নারী

মোংলা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ২১:৫৭, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

রসু খাঁ খ্যাত টি এ ফারুকের মনোরঞ্জনে আছে শতাধিক নারী

ছবি : মেসেঞ্জার

ভাড়াটে গুন্ডা দিয়ে স্ত্রীকে পেটানোর অভিযোগ উঠছে মোংলার বহুলাালোচিত শিল্পপতি টি এ ফারুকের বিরুদ্ধে। বহুবিবাহের নায়ক এ শিল্পপতির বিরুদ্ধে নারী কেলেংকারীর নানা অভিযোগ। কখনও নিজে বিয়ের পিড়িতে বসছেন আবার কখনও অধিনাস্থ কর্মচারীদের বিয়ে করিয়ে নারীদের রক্ষিতা বানিয়ে রাখছেন তিনি।

আলোচিত এ  টিএ ফারুকের লালসার শিকার হয়েছেন সুমি আক্তার (২৫) নামে দু’সন্তানের জননী। উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের কানাইনগর গ্রামের এ নারী’র সঙ্গে বছর দুয়েক আগে টিএ ফারুকের পরিচয় হয়।

এরপর নানা প্রলোভন দেখিয়ে ওই নারীর সংসার ভেঙ্গে বিয়ে করেন তিনি। বিয়ের পর টিএ ফারুকের জলসাখানা শতরুপা বরফকলের দ্বিতীয় তলার ভবনে ওঠেন  স্ত্রী সুমিকে নিয়ে। এখানে বছর দেড়েক ভালই চলছিল তাদের সংসার।

কিন্তু সুমির চোখে ধরা পড়ে স্বামী টিএ ফারুকের বহুনারীগামিতা। আর এ নিয়ে হঠাৎ করে শুরু হয় পারিবারিক দ্বন্ধ। এক পর্যায় স্ত্রী সুমিকে তাড়াতে শুরু করেন শারিরীক ও মানুষিক নির্যাতন। 

এমনকি শনিবার (২০ এপ্রিল) দুপুরে তীব্র তাপদহের মধ্যে স্ত্রী সুমিকে রুম থেকে বের করে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে বিষয়টি স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলরের মধ্যস্থতায় সুরাহ হয় এবং ঘরে ওঠেন সুমি।

সর্বশেষ সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ১০ টায় ২৫-৩০ জনের  একদল ভাড়াটে গুন্ডা সুমির ঘরে হানা দিয়ে তাকে মারধর সহ সাদা স্টাম্পে স্বাক্ষর নেয়ার চেষ্টা করে। এ নিয়ে ঘন্টা ব্যাপী হুলুস্থল কান্ডঘটে শতরুপা বরফকলে। রাতেই প্রতিবেশীরা সুমিকে উদ্ধার করে মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।

স্বামী টিএ ফারুকের ভাড়াটে গুন্ডাদের মারধরে স্ত্রী সুমি আক্তার এখন হাসপাতালের বেড়ে কাতরাচ্ছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাতীয় পার্টির আমলে টি এ ফারুকের (তালুকদার আকতার ফারুক) উত্থান। রাজনৈতিক এ দলটির উপজেলা সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন বিগত কয়েক দশক। পরে কয়েক দফায় তিনি রাজনৈতিক খোলসও বদল করেছেন।

এখন তিনি পেশায় একজন আপাদমস্তক শিল্পপতি। কিন্তু তার নেশা মোবাইল ফোন ও দালালদের মাধ্যমে নারীদের সুকৌশলে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলা। এরপর নিজের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করা। এভাবে মুসলিম,হিন্দু ও খৃষ্টান ধর্মের অসংখ্য নারীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তুলে টক অব দ্য টাউনো পরিনত হয়েছেন টি এ ফারুক।

নারীদের সাথে সম্পর্ক করতে দিন রাত তার মোংলা পৌর শহরের শ্রম কল্যান রোডের জলসাখানায় চলে বেহায়াপনা। এনিয়ে অতিষ্ঠ তার এলকার আশপাশের লোকজন। নারীদের সাথে প্রেম অতঃপর ভোগ বিলাসের এই কাজে সহযোগিতায় তার নিযুক্ত আছেন ১৫/২০ জন দালাল সিন্ডিকেট।

মোংলা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে অসহায় গরীব পরিবারের সুন্দরী মেয়েদের বাড়ি-জমি সহ মোটা অংকের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে দালালরা নিয়ে আসেন লম্পট ফারুকের জলসাখানায়। সেই জলসাখানা ঘিরে এরই মধ্যে গড়ে উঠেছে মিনি পতিতালয়।

যেখানে ফারুকের মনোরঞ্জনে আসেন ভ্রাম্যমাণ পতিতারাও। চলে উদ্যম গান বাজনা। গান আর নাচের তালে সারারাত চলে বেহায়াপনা। এবিষয়ে কেউ প্রতিবাদ করলে তার ভাড়াটে মাস্তান বাহিনী দিয়ে দমন করা হয় তাদের। প্রশাসনও রহস্যজনকভাবে চুপ থাকায় লম্পট ফারুকের এই অপকর্ম চলে আসছে দীর্ঘ কয়েকদশক ধরে।

শতরুপা বরফকল ও হোটেল সিঙ্গাপুর ও চৌরাঙ্গী সহ একাধিক স্থানে তার এমন ঘাটি রয়েছে। টিএ ফারুকের বয়স ৭০ এর ঘরে। তবুও চোখ আর মনের নশোয়  অসংখ্য অসমবিবাহের নায়ক হয়ে উঠছেন তিনি। তার বহু নারীগামিতা নিয়ে বেশ আলোচনা ও সমালোচনা থাকলেও টিএ ফারুক সঠিক বিবাহের তথ্য কেউ নিশ্চত করতে পারেনি। 

তার সর্বশেষ স্ত্রী সুমি আক্তার জানান, এ পর্যন্ত শতাধিক বিবাহের খোঁজ পেয়েছেন তিনি। আরও শতাধিক নারীর সঙ্গে তার পরকীয়া সম্পর্ক রয়েছে।

টি এ ফারুকের হোটেল ম্যানেজার সোহাগ বলেন, তার বস যখন যা নির্দেশ করেন তখন তাই করতে হয়। এ ক্ষেত্রে তার কোন দোষ নেই। তবে টিএ ফারুকের  সর্বশেষ স্ত্রী সুমি আক্তারকে সে ম্যানেজ করে ছিলেন বলেও জানায় সে।

এ প্রসঙ্গে মোংলা পোর্ট পৌরসভার ৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরিফুল ইসলাম জানান, টিএ ফারুকের সর্বশেষ স্ত্রী সুমিকে নিয়ে পারিবারিক সমস্যার বিষয়টি নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে মোংলা উপজেলা দূর্ণীতিদমন কমিশনের সভাপতি এইচ এম দুলাল বলেন, টিএ ফারুকের বরফকলে দিনরাত উঠতি বয়সের নারীদের আড্ডাস্থল হয়ে উঠছে। এতে এলাকার সামাজিক পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। এ বিষয় প্রশাসনের নজরদারী সহ আইনী ব্যবস্থা গ্রহন জরুরী।

টি এ ফারুকের এসব অপকর্ম বিষয়ে মোংলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নিশাত তামান্না বলেন, নারীদের প্রতি তার এমন অস্মান সামাজিকভাবে নৈতিক অবক্ষয় এবং দুঃখজনক। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

টি এ ফারুকের বিরুদ্ধে স্ত্রী সুমির করা অভিযোগ পেয়েছেন স্বীকার করে মোংলা থানার ওসি কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানতে চাইলে এ বিষয়ে টি এ ফারুককে (তালুকদার আকতার ফারুক) একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে শহরের সিঙ্গাপুর হোটেলে তার অফিস কক্ষে গেলে পরে কথা বলবেন বলে দরজা বন্ধ করে দেন।

মেসেঞ্জার/হাসান/তারেক

dwl
×
Nagad

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 700