ঢাকা,  শনিবার
০৪ মে ২০২৪

The Daily Messenger

রংপুরে তিস্তা কৃষক সমাবেশে পুলিশের বাঁধা, ক্ষোভ প্রকাশ

রংপুর ব্যুরো

প্রকাশিত: ১৬:১৩, ৯ মার্চ ২০২৪

রংপুরে তিস্তা কৃষক সমাবেশে পুলিশের বাঁধা, ক্ষোভ প্রকাশ

ছবি : মেসেঞ্জার

তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যাসহ আট দফা দাবিতে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে বাংলাদেশ কৃষক সমিতির পূর্ব নির্ধারিত তিস্তা কৃষক সমাবেশ করতে দেয়নি পুলিশ।

শনিবার ( মার্চ) দুপুরে পুলিশ বাঁধা দিয়ে তাদের সমাবেশ স্থল থেকে বের করে দেয় কৃষক সমিতির নেতাকর্মী কৃষকদের। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সমিতি। আর পুলিশ জানিয়েছে, অনুমতি না থাকায় জনস্বার্থে এই ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ কৃষক সমিতির পূর্ব নির্ধারিত তিস্তা কৃষক সমাবেশ ছিল শনিবার বেলা ১১ টা থেকে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে। এজন্য পাবলিক লাইব্রেরীর সাহিত্যমঞ্চে ব্যানার সাটানো সহ সকল প্রস্তুতিও সম্পন্ন করেন আয়োজকরা।

সকাল ১০ টা থেকে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে কৃষক সমিতির নেতাকর্মীরা পাবলিক লাইব্রেরী মাঠে সমবেত হতে থাকেন। কিন্তু সাড়ে ১১ টায় সমাবেশের ব্যানার টাঙ্গাতে প্রথম বাঁধা দেয় পুলিশ। এ নিয়ে শুরু জয় বচসা। ধীরে ধীরে সেখানে বাড়তে থাকে পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে মাইকে কথা বলা থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়।

বেলা পৌনে টায় সমাবেশ স্থলে আসেন আরপিএমপি কোতয়ালী জোনের সহকারি পুলিশ কমিশনার মোঃ আরিফুজ্জামান। তিনি বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দনসহ নেতৃবৃন্দকে ডেকে নিয়ে লিখিত কোন অনুমতি না থাকায় সমাবেশ বন্ধ করে মাঠ খালি করার নির্দেশ দেন।

এ নিয়ে সেখানে আবারও উত্তেজনা তৈরি হলে এসি আরিফ কৃষক নেতা চন্দনকে আরপিএমপির ডিসি (সিটিএসবি) সাথে মোবাইলে কথা বলতে বলেন। এসময় কৃষক নেতা চন্দন ডিসি (সিটিএসবি) সাথে মোবাইলে কথা বলেন।

এসময় তাকে বলতে শোনা যায়, আমরা এতো বছর ধরে সংগ্রাম করছি লড়াই করছি। সমাবেশ করতে দিবেন না। আমরা তো রাস্তায় দাড়াই নি। মাঠে সমবেত হয়েছি। আপনারা মিছিলও করতে দিবেন না সমাবেশও করতে দিবেন না। তা হয় না। মিছিলে তো একটু যানজট হবেই।পরে তাদেরকে মাঠ থেকে বের করে দেয় পুলিশ।

ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ কৃষক সমিতির কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন। তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশ বলছে আমাদের লিখিত কোন পারমিশন নেই। আমরা গতকাল (শুক্রবার) পুলিশ প্রশাসনকে মৌখিকভাবে জানিয়েছি। আমরা ডিসি সাহেবকেও জানিয়েছি।

গণতান্ত্রিক দেশে এটাই নিয়ম কোন কর্মসূচি পালন করলে তা অবহিত করতে হয় পুলিশকে। সেটা আমরা করেছি। কিন্ত এখন তারা বলছেন এখানে সরকারি কর্মসূচি আছে এখানে করা যাবে না। আমরা এখানে তিস্তা পাড়ের কৃষকদের নিয়ে এসেছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে একটা স্বাধীন দেশে একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশ তো আগেই ভুলণ্ঠিত হয়ে গেছে। তার একটা নমুনা দেখলাম এখানে। কৃষকরা এখানে কোন সরকার পরিবর্তন বরতে আসে নাই। কৃষকরা এখানে তাদের ন্যায্য দাবি অধিকারের কথা বলতে এসেছিল। এটা কোন সরকার পরিবর্তনের আন্দোলন না, বা অন্য কোন বিষয় না।সেটাকেও আজকে পারমিশনের নামে বাঁধা গ্রস্ত করা হলো’।

এই প্রবীন কৃষক নেতা আরও বলেন, ‘পুলিশের বাঁধায় কৃষক আন্দোলন থেমে যাবে না। আমরা তেভাগা আন্দোলন করেছি। কৃষকদের ফসলের দামের জন্য আন্দোলন করেছি। বাঁধা দিয়ে কোন কাজ হবে না। ভবিষ্যতে আমরা অনেক বড় কৃষক সমাবেশ করবো রংপুরে’।

সমাবেশ করতে না দেয়া প্রসঙ্গে রংপুর মহানগর পলিশের সহকারি পুলিশ কমিশনার (কোতয়ালী জোন) মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, বিষয়ে এখনই আমি পরিস্কার করে কিছু বলবো না। এটা জনস্বার্থে করা হচ্ছে। নির্দেশনা যেরকম আছে। সেরকম ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এই প্রোগামের না করার ব্যপারে তাদের আগেই জানিয়েদিয়েছিলাম। কিন্তু তারা কোন ব্যবস্থা না নিয়ে প্রস্তুতি নিয়েছে। অনুমতিও নেই না। যার জন্য তাদের সংক্ষিপ্তভাবে যেভাবে করে দেয়া যায়, সেভাবে করে দিয়েছি।

প্রসঙ্গত: সমাবেশ স্থলের সামনেই শহীদ মিনার চত্বরে চতুর্পাশ প্যান্ডেল করে বিভাগীয় পিঠা উৎসব করা হচ্ছে। প্রতিদিন বেলা টার পর মেলা উম্মুক্ত থাকার কথা বলা হলেও সেই মেলায় সন্ধার পরেও তেমন একটা ভির দেখা যায় না। ৩০ টি পিঠার স্টল বানানো হলেও মাঠে মাত্র ১০/১২ টা পিঠার স্টলে পিঠা দেখা যায়।

এছাড়া সমাবেশ স্থলের উত্তরপাশে দুই বাংলার লেখকদের সম্মেলন লিটল ম্যাগ মেলা হচ্ছে। এছাড়াও শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধু শিশু কিশোর প্রতিযোগিতার বিভিন্ন ইভেন্টের বাছাই কার্যক্রম চলছে।

এদিকে সমাবেশ করতে না পারায় কৃষক সমিতি সে খান থেকে বের হয়ে নগরীর প্রধান সড়ক হয়ে শাপলা পর্যন্ত বিক্ষোভ করে। পরে শাপলা চত্বরে পথ সভায় বক্তব্য রাখেন কৃষক নেতারা।

এসময় তিস্তা নদীকে মেরে ফেলার হাত থেকে রক্ষায় তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়, তিস্তাসহ অনান্য নদী খাল বিল জলাশয় পরিকল্পিতভাবে খনন করে নাব্যতা রক্ষা, তিস্তার পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা, তিস্তার দুইপাশে সড়ক উন্নয়ন করা, স্থায়ী বাঁধ নির্মান, নদী ভাঙ্গাদের ক্ষতিপূরণ এবং জেড়ে উঠা জমি প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দেয়া, বরেন্দ্র অঞ্চলে সেচের পানি বিতরণে গভীর নলকুপের অপারেটর নিয়োগে অনিয়ম, হয়রানি এবং দুর্নীতি বন্ধের দাবি জানান।

মেসেঞ্জার/মাজহারুল/আপেল

dwl
×
Nagad

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 700