ছবি : মেসেঞ্জার
খুলনার পাইকগাছার লস্কর ইউনিয়নের শিবসা নদীর আলমতলা নামক স্থানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের আঁধা কিলোমিটার ওয়াপদার ভেড়িবাঁধের ভাঙ্গন গত বুধবার থেকে আবারো ব্যাপক আকার ধারন করেছে। আতঙ্কে লস্কর, চাঁদখালী ও আমাদি ইউনিয়নের ১৯ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।
স্থানীয়রা আশংকা করছেন- যেকোন সময় বাঁধ ভেঙ্গে লবন পানিতে প্লাবিত হয়ে ভেসে যাবে ৩টি ইউনিয়নের ১৯টি গ্রাম, চিংড়িঘের, বাড়িঘর ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ক্ষতি হবে কোটি কোটি টাকার সম্পদ। তাই দ্রুত বাঁধ নির্মাণে সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, গত এক বছর আগে উপজেলার লস্কর ইউনিয়নের শিবসা নদী সংলগ্ন আলমতলা নামক স্থানে ওয়াপদার ভেড়িবাঁধে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দেয়। ওই সময় জাইকার অর্থায়নে একটি প্যাকেজে টেন্ডারের মাধ্যমে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। টেন্ডারটি পান ঢাকার উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনাল। আর উন্নয়ন ইন্টারন্যাশনালের পক্ষে কাজটি করছেন আর-রাত কর্পোরেশন নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্টান।
এলাকাবাসির দাবী ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টেন্ডার পাওয়ার পর থেকে প্রায় দেড় বছর ধরে ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় মাঝে মধ্যে কিছু জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধে চেষ্টা করে। কিন্তু ভাঙ্গন রোধে মূল কাজটি আজও শুরু করেননি বলে অভিযোগ তুলেছেন তারা।
এ বিষয়ে লস্কর ইউপি চেয়ারম্যান কেএম আরিফুজ্জামান তুহিন বলেন, আমার ইউনিয়নে শিবসা নদী সংলগ্ন আলমতলা নামক স্থানে প্রায় এক যুগ আগে ভাঙ্গন শুরু হয়। ভাঙ্গনের কারনে স্হানীয় একটি বাজার নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড কয়েকবার বিকল্প ভেড়িবাঁধ তৈরি করেছে।
সর্বশেষ বিগত ২০২৩ সালে এলাকাবাসির দাবির প্রেক্ষিতে ও কোটি কোটি টাকার সম্পদ বাঁচাতে সরকার জাইকার অর্থায়নে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়। ৫০ কোটির টাকার বরাদ্দর মধ্যে রয়েছে গড়ইখালীর খুদখালী, লস্করের বাইনতলা সুইচ গেট ও আলমতলার ওয়াপদার টেকসই ভেড়িবাঁধ নির্মান।
কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি আজও কাজ শেষ না করায় হুমকির মুখে পড়েছে তিনটি ইউনিয়নের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। পাশাপাশি এই ভাঙ্গনের পাশে রয়েছে বৃহত্তর কৃষি কলেজ ও চিত্ত বিনোদনের পার্ক। তাই ঝুঁকিপূর্ণ স্হানে বাঁধ নির্মানে সংশিষ্ঠ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের পাইকগাছা শাখার উপসহকারি প্রকৌশলী রাজু হাওলাদার জানান, আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই ভাঙ্গন কবলিত স্হানে সংশ্লিষ্ঠ ঠিকাদারের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটটি ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় গভীরতার দোহাই দিয়ে ধীর গতিতে কাজ করছে। বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ কে জানিয়েছি।
এ বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী-২ আশরাফুল আলম জানান, বিষয়টি শুনেছি ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে কথা হয়েছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকা প্রাথমিক ভাবে সংষ্কার করা হচ্ছে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে মূল কাজটি শুরু করা হবে বলে তারা জানিয়েছেন।
মেসেঞ্জার/সবুজ/আপেল