ছবি : মেসেঞ্জার
রেলওয়ে যাতায়াতে রংপুর বিভাগ থেকে ঢাকা পর্যন্ত পূর্বের রেয়াত পদ্ধতি চালুসহ চার দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে সচেতন রংপুরবাসী। এসময় রেয়াত পদ্ধতি বাতিলকে অসাংবিধানিক অন্যায় এবং রংপুর বিভাগের সাথে বৈষম্য বাড়ানোর সামিল বলে দাবি করা হয়।
একই দাবিতে আগামী ১৭ মে পার্বতীপুর রেলওয়ে জংশনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে।
শুক্রবার (১০ মে) দুপুরে রংপুর রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে এই মানববন্ধনে অংশ নেন কয়ে‘শ মানুষ।
এসময় দাবি আদায়ে বিভিন্ন ধরনের প্লাকার্ড প্রদর্শন করে অংশগ্রহনকারীরা। তাদের সাথে সংহতি প্রকাশ করেন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন।
মানববন্ধনে উপস্থিত রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, ‘একটা আঞ্চলিক কথা আছে, যাবো আমি জোড়গাছ, আমি কেন কলাগাছ। ব্যাপারটা হয়েছে এটাই। যে আমরা যাবো ঢাকা।
আমাদের যেতে হয় নাটোর। যেতে হয় জয়পুরহাট, যেতে হয় সিরাজগঞ্জ, পাবনা। এই সব রাস্তা দিয়ে ঘুরে যাওয়া তো আমাদের কথা নয়। আমাদের দাবি হচ্ছে দুরত্বটা কমাতে হবে।
কিন্তু দুরত্ব না কমিয়ে যখন ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়। যেখানে আগের ভাড়াটাই ছিল বৈষম্যমূলক ভাড়া। রংপুর বিভাগের মানুষের জন্য অন্যায়মূলক ভাড়া। সেই জায়গায় নতুন করে রেয়াত তুলে নেয়ায় ভাড়াবৃদ্ধি হয়েছে ৩০ থেকে ৪০ ভাগ।
আমরা মনে করি এটা অসাংবিধানিক, অন্যায় এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থি। কারণ এর সব কিছুই সারাদেশের সাথে উন্নয়নের বিষয়ে বৈষম্য না কমিয়ে বৃদ্ধি করছে। সেকারণে বৈষম্য দুর করার জন্যই যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ। সেকারণে লক্ষে পৌছাতে হলে ভাড়াও কমাতে হবে। দুরত্বও কমাতে হবে।
মানববন্ধনে রেল, নৌ যোগাযোগ ও পরিবেশ উন্নয়ন গণ কমিটি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সাবেক সভাপতি কলামিস্ট নাহিদ হাসান নলেজ বলেন, ‘১৯৯২ সালে রেয়াত পদ্ধতির মাধ্যমে রেলওয়ে যাত্রী সংকট মেটানোর উদ্যোগ নিয়েছিল। সে কারণেই রংপুর বিভাগ থেকে যাতায়াতে ১২০ কিলোমিটার পথের কোন ভাড়া লাগত না। কারণ সান্তাহার নাটোর চাটমোহর হয়ে ১২০ কিলোমিটার পথ ঘুরে রংপুর বিভাগ থেকে রেলওয়ে যাতায়াত করে।
কিন্তু হঠাৎ করেই গেলো ৪ মে রেয়াত পদ্ধতি বাতিল করে ভাড়া আদায়ের কারণে রংপুর থেকে ৫০৫ টাকার ভাড়ার স্থলে ৬৩৫ টাকা গুনতে হচ্ছে এবং তিন ঘন্টা সময় বেশি লাগছে।
এসময় অবিলম্বে এই রেয়াত পদ্ধতি পুনর্বহাল, ব্রডগেজ লাইন নির্মাণ, সরাসরি রংপুর বিভাগ থেকে বালাসীঘাট হয়ে ঢাকা এবং বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জ পর্যন্ত রেললাইন নির্মাণ করতে হবে।’
নাহিদ হাসান নলেজ আরও বলেন, ‘যতদিন পর্যন্ত রেয়াত বহাল করবে না। ততদিন পর্যন্ত আমরা প্রতি শুক্রবার রংপুর বিভাগের প্রতিটি স্টেশনে স্টেশনে এই কর্মসূচি পালন করবো। আগামী ১৭ মে পার্বতীপুর রেলওয়ে জংশনে একই দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন হবে।
প্রসঙ্গত: গেলো ৪ মে রেলওয়ের ভাড়া বৃদ্ধি ছাড়াও রেয়াত পদ্ধতি তুলে দিয়ে ভাড়া আদায় করছে রেলওয়ে। ১৯৯২ সাল থেকে রংপুর বিভাগের যাত্রীরা এই রেয়াত পদ্ধতি পাওয়ায় ১২০ কিলোমিটারের ভাড়া মওকুফ পেতেন। এখন সেটি বন্ধ হয়ে গেলো। সময় ও অর্থ দুটিই বেশি দিতে হচ্ছে রংপুর বিভাগের যাত্রীদের।
মেসেঞ্জার/মাজহারুল/আপেল