ঢাকা,  মঙ্গলবার
২১ মে ২০২৪

The Daily Messenger

যুক্তরাষ্ট্র আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখে না : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ২২:৩২, ৩০ এপ্রিল ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্র আয়নায় নিজেদের চেহারা দেখে না : প্রধানমন্ত্রী

ছবি: পিআইডি

যুক্তরাষ্ট্রে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ হত্যার জবাব চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি দেশটির দেওয়া প্রতিবেদনেরও সমালোচনা করেছেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্র চলা ইসরায়েলবিরোধী মিছিলে পুলিশের হামলার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের ওপর মানবাধিকার রিপোর্ট লেখে কিন্তু আয়নার নিজেদের চেহারা দেখে না।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আমেরিকায় ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের হামলার ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সেই দেশে মানবাধিকার কতটুকু আছে, সেটাই প্রশ্ন। কথা বলার স্বাধীনতা কতটুকু আছে, সেটাই প্রশ্ন। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার অধিকার কতটুকু আছে, সেটাই প্রশ্ন। বাংলাদেশের ওপর মানবাধিকারে রিপোর্ট লেখে, নিজেদের আয়নায় চেহারা দেখে না। তারা যেভাবে আচরণ করে, সেইভাবে আমাদের পুলিশতো করেনি। ধৈর্যের পরিচয় দিতে গিয়ে উল্টো বিএনপির হাতে মাইর খেয়েছে। আজকে আমেরিকার কোনো পুলিশের ওপর যদি কোনো দলের লোক হাত দিত তখন তারা কী করত? প্রতিনিয়ত আমাকে হত্যা করবে, আমাদের ক্ষমতা থেকে হটাবে, আবার ১৫ আগস্ট ঘটাবে। তা আমরা অনবরত শুনেই আসছি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের বাঙালি মারা গেছে। সেই দিনও দুজন মারা গেল। আমি প্রতিবাদ জানাই। তারা জীবন-জীবিকার জন্য গেছে। কিন্তু তাদের এইভাবে হত্যা করবে কেন? তারাতো কোনো অপরাধ করেনি। বাচ্চা ছেলেও তাঁদের হাত থেকে রেহাই পায় না। মাজুর ব্যক্তি যে হাঁটতে পারে না, প্রেসিডেন্টকে কী বলেছে জন্য ঘরে ঢুকে তাঁকে হত্যা করেছে। কী জবাব দেবে? যারা এখন মানবাধিকারের গীত গায় এবং বাংলাদেশের মানবাধিকার খুঁজে বেড়ায়। তারা কী জবাব দেবে। আমি সেই জবাব চাই। মানবাধিকার সংস্থা, বিচার বিভাগ, যারা আমাদের নিষেধাজ্ঞা দেয়, আমাদের ওপর খবরদারি করে, তাঁদের কাছে জবাব চাই। সেখানে আমার বাঙালি কেন মারা যাবে? ওই রকম ছোট্ট একটা শিশুকে মায়ের কোল থেকে নিয়ে হত্যা করা, শিক্ষকদের ওপর নির্যাতন করা এর জবাব আমরা চাই। এটাতো সম্পূর্ণ মানবাধিকার লঙ্ঘন করা।

গত মার্চ মাসে নিউইয়র্কের কুইন্সে পুলিশের উইন রোজারিও এক বাংলাদেশি তরুণ নিহত হয়।

বাংলাদেশের পুলিশ ধৈর্যের পরিচয় দেয় বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩-১৪ সালে পুলিশের ওপর হামলা সকলেই দেখেছে। বেশি দূর যেতে হবে না এই ২৮ অক্টোবর বিএনপি যে ঘটনা ঘটাল। মানুষ হত্যা, রেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মানুষ মারা। সেগুলোতে তারা করেছে। বেচারা পুলিশদের দোষটা কই? তাদের ওপর লাঠিসোঁটা দিয়ে হামলাতো কল্পনা করা যায় না। অ্যাম্বুলেন্স, পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন, হাসপাতালে আক্রমণ। ইহুদিরা যেভাবে ফিলিস্তিনে ঘটিয়েছে ঠিক তেমনি বিএনপি বাংলাদেশে ঘটিয়েছে। এটা ভোলা ঠিক না।

আওয়ামী লীগ সভাপতি তার বক্তব্যে বিএনপিসহ সমমনাদের সরকার বিরোধী আন্দোলনের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে, আমাদের দেশের কিছু রাজনৈতিক দেউলিয়াপূর্ণ, যারা একেবারে রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়াএদের কিছু বক্তব্য আর আমাদের দেশের কিছু আছে বুদ্ধি বেচে জীবিকা নির্বাহ করেন, সেই তথাকথিত বুদ্ধিজীবী অনবরত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে গিবত গাচ্ছে এবং বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে যে, দেশের অতি বাম, অতি ডান সবই এখন এক হয়ে গেছে, এটা কীভাবে হলো আমি জানি না। এই দুই মেরু এক হয়েও সারাক্ষণ শুনি আওয়ামী লীগ সরকারকে উৎখাত করতে হবে। অপরাধটা কী আমাদের?’

তিনি বলেন, নির্বাচন ভোটের অধিকার নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলে তাদের জন্মটাই কোথায়? অবৈধভাবে হত্যা-ক্যু, ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলকারীদের পকেট থেকে তৈরি করা যে রাজনৈতিক দল তাদের কাছে এখন গণতন্ত্রের ছবক শুনতে হয়, ভোটের অধিকারের কথা শুনতে হয়। যারা হ্যাঁ/না ভোটের মাধ্যমে মানুষের ভোট চুরি শুরু করেছিল।

বিএনপির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এখনো একটা দল যার কোনো মাথামুণ্ডু নেই। তাঁদের যিনি চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি সাজাপ্রাপ্ত আসামি। দায়িত্বপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও সাজাপ্রাপ্ত আসামি, দেশান্তরী। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি, সেই সুবাদে সারাক্ষণ অনলাইনে শুধু নির্দেশ দেয়। সেই সিদ্ধান্তেরও ঠিক-ঠিকানা নেই। আজকে এরে বহিষ্কার করে, আবার তারে দলে ভিড়াই নেয়। কালকে আবার ওরে বহিষ্কার করে দলে ভিড়াই নেয়। তাদের কোনো সিদ্ধান্তও নাই।

আওয়ামী লীগের অধীনে বিএনপি নির্বাচন বর্জনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের অধীনে নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন তোলার কে তারা? যাদের জন্মই হয়েছে ভোট চুরির মাধ্যমে তাঁরা আবার প্রশ্ন করে কীভাবে? জনগণ বলুক। দেশের মানুষতো শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পেরে খুশি। হ্যাঁ, এলাকায় এলাকায় স্থানীয়ভাবে কিছু সমস্যা হয়।

দাবদাহে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি বৃষ্টি হবে।

মেসেঞ্জার/হাওলাদার

Advertisement

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 768