ঢাকা,  সোমবার
০৬ মে ২০২৪

The Daily Messenger

তীব্র তাপপ্রবাহে মরছে মুরগি, কমছে ডিম উৎপাদন, বিপাকে খামারিরা

পাবনা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৭:৩২, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

তীব্র তাপপ্রবাহে মরছে মুরগি, কমছে ডিম উৎপাদন, বিপাকে খামারিরা

ছবি : সৌজন্য

পাবনার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মাঝারি থেকে তীব্র তাপপ্রবাহ। স্বস্তি নেই জনজীবনে। বিরূপ প্রভাব পড়েছে কৃষি, স্বাস্থ্য পোল্ট্রি খামারে। টানা পাঁচদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রয়েছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর।

প্রচণ্ড ভ্যাপসা গরম আর দাবদাহে মারা যাচ্ছে পোলট্রি খামারের মুরগি। কমতে শুরু করেছে ডিমের উৎপাদন। আর নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খামারিরা।

পোলট্রি খামারিদের ভাষ্য, প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের কারণে মুরগি মারা যাচ্ছে। কারণ প্রতিটি খামারের চাল টিনের। আর রোদের তাপ টিনে বেশি লাগে। যেকারণে মুরগির গরমও লাগে বেশি। এই গরমে দিনে পাঁচ থেকে ছয়বার মুরগির শরীরে পানি ছিটিয়েও কাজ হচ্ছে না। গরমে মুরগি ছটফট করছে। স্ট্রোক করে মারা যাচ্ছে। মুরগিকে ঠিকমতো খাবার দেওয়া যাচ্ছে না। এতে কমতে শুরু করেছে ডিমের উৎপাদন।

পাবনা সদর উপজেলার মালিগাছা ইউনিয়নের জোতগাছা গ্রামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামে অনেকগুলো ব্রয়লার লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে। খামারে মুরগি পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন কর্মচারীরা। কেউ মুরগির শরীরে পানি স্প্রে করছেন, কেউবা ডিম সংগ্রহ করছেন। অন্যদিকে খামারের ভেতর ঠান্ডা রাখতে চলছে বৈদ্যুতিক পাখা। কিন্তু তাতেও যেন কাজ হচ্ছে না। মুরগিগুলো হাঁসফাঁস করছে গরমে।

একটি পোলট্রি খামারের শ্রমিক আনিসুর রহমান জানান, গরম শুরুর পর থেকেই খামারে মুরগির ছটফটানি শুরু হয়েছে। ফ্যানের বাতাসেও ঘর ঠান্ডা হচ্ছে না। প্রতিদিন কয়েকবার করে মুরগির শরীরে পানি ছিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এরপরও মুরগি মারা যাচ্ছে। তাঁদের খামারে দুই হাজার মুরগি রয়েছে। গত এক সপ্তাহে অন্তত ৪০টি মুরগি মরে গেছে। সর্বশেষ গত শনিবার ৮টি মুরগি মারা গেছে।

চাটমোহর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের লেয়ার মুরগি খামারের মালিক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, গরম শুরুর পর থেকে মুরগিকে ওষুধ স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী খাবারও কম দেওয়া হচ্ছে। এতে ডিমের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। গরমে স্ট্রোক করে মুরগী মারা যাচ্ছে।

আটঘরিয়া উপজেলার চাঁদভা গ্রামের খামারি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এমন তাপ থাকলি মইরে শেষ হয়ে যাবো। খুব দুশ্চিন্তায় আছি। যেরমভাবে মুরগী মরতিছে, এমন গরম আরো থাকলি মুরগি টিকানো কঠিন হয়ে যাবিনি। আমারে পথে বসা লাগবিনি।'

বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা গৌরাংগ কুমার তালুকদারের। তিনি জানান, 'প্রচণ্ড গরম থেকে খামার রক্ষায় প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে লিফলেট বিতরণসহ খামারিদের বিভিন্নভাবে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।'

তিনি বলেন, 'খামার ঘরের টিনের চালে চটের বস্তা বিছিয়ে পানি ঢালা, মুরগির শরীরে পানি ছিটানো এবং মুরগিকে স্যালাইনসহ ভিটামিন সিজাতীয় খাবার বেশি দিতে বলা হচ্ছে। অন্যদিকে দুপুরে অতিরিক্ত গরমের সময় খাবার না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।'

জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জেলায় তালিকাভুক্ত লেয়ার মুরগির খামার রয়েছে ৯৭৮টি; এই তালিকার বাইরে প্রায় ৫০০ খামার আছে। অন্যদিকে ব্রয়লার মুরগির তালিকাভুক্ত খামার রয়েছে হাজার ১৩০টি। এসব খামারে মুরগি রয়েছে প্রায় ৫৫ লাখ। তবে প্রচণ্ড গরমে জেলায় এখন পর্যন্ত কি পরিমাণ মুরগী মারা গেছে তার তথ্য জেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগে নেই।

ঈশ্বরদী আবহাওয়া কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আজ সোমবার (২২ এপ্রিল) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০. ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর গতকাল রোববার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত ১৭ এপ্রিল থেকে পাবনা জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে রয়েছে।

মেসেঞ্জার/শাহীন/মুমু

dwl
×
Nagad

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 700