ছবি : মেসেঞ্জার
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের প্রসূতি (লেবার) ওয়ার্ডে বেড সংকটের কারণে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার প্রসূতি ও নবজাতক মেঝেতে থাকতে হচ্ছে। এতে নবজাতক ও মা উভয়ের জীবন নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।
হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, এখানে গাইনী বিভাগের অনেক ডিগ্রিধারী চিকিৎসক দায়িত্ব পালন করেন। তাদের মধ্যে সহযোগী অধ্যাপক লেবেলের চিকিৎসকও রয়েছেন। ফলে উন্নত চিকিৎসা সেবা পাওয়ার আশায় যশোর ছাড়াও আশপাশের জেলার প্রসূতিরা যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আসেন। যে কারণে এখানে শয্যার তুলনায় সব সময় রোগী বেশি থাকে।
সূত্র জানায়, রোগীর চাপ হওয়ার আরেকটি কারণ হলো বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পর্যাপ্ত চিকিৎসা-সুবিধা নেই। অধিকাংশ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গাইনী বিভাগের কনসালটেন্ট চিকিৎসক নেই। জোড়াতালি দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
ফলে বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকেও প্রসূতিদের জেনারেল হাসপাতালে পাঠান। এতে করে এই হাসপাতালে প্রসূতি ওয়ার্ডে রোগী বাড়তেই থাকে। কিন্তু রোগীর তুলনায় শয্যা সংকটে দুর্ভোগে থাকেন তারা। আবার বাড়তি রোগী সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তিনটি কক্ষ নিয়ে গঠন করা হয়েছে প্রসূতি ওয়ার্ড। এখানে বসানো অতিরিক্ত ৭টি সহ মোট শয্যা রয়েছে ২১টি। অথচ সোমবার বিকেল পর্যন্ত রোগী ৪৭ জন রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এরমধ্যে সিজারিয়ান রোগী রয়েছে ১৫ জন।
সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করা অনেক প্রসূতি ও নবজাতকদের মেঝেতে রাখা হয়েছে। অসহায়ের মত নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে ঠাসাঠাসি করে মেঝেতে রাত দিন কাটিয়ে দিচ্ছেন তারা। এতে রোগীদের প্রসব-পরবর্তী জটিলতা দেখা দেয়ার আশংকা রয়েছে।
সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার করা এক রোগীর স্বজন রহিমা বেগম জানান, বাধ্য হয়ে প্রসূতি ও নবজাতককে মেঝেতে রেখেছেন। এমন সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
এক প্রসূতি জানান, মেঝেতে থাকতে নানা সমস্যার শিকার হতে হয়। কিন্তু কিছু করার নেই। একটু কষ্ট হলেও অর্থের অভাবে সরকারি হাসপাতালের পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে হয়।
গাইনী বিভাগের একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক জানান, সিজারিয়ান অস্ত্রোপচার পরবর্তী রোগীদের পোস্ট অপারেটিভ কক্ষে না রেখে সরাসরি ওয়ার্ডে নোংরা পরিবেশে রাখা হচ্ছে। এতে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়া একজন নবজাতক পৃথিবীতে আসার পরই মেঝেতে থাকার বিষয়টি কষ্টদায়ক।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, প্রসৃতি ওয়ার্ডে সব সময় রোগী বেশি থাকে। যে কারণে সব রোগীকে শয্যায় রাখা সম্ভব হয়না। তবে তিনি এখানে যোগদানের পর রোগীদের একটু ভালো পরিবেশে রাখার জন্য প্রসূতি ওয়ার্ড আধুনিকায়ন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অস্ত্রোপচারের পর প্রসূতি ও নবজাতক মেঝেতে থাকার দৃশ্য তাকেও পিড়া দেয়। যে কারনে সমস্যা নিরসনে বিষয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন মিটিংয়ে জোরালোভাবে আলোচনা করেন।
মেসেঞ্জার/আপেল