ছবি : মেসেঞ্জার
শনিবার দুপুরে লাগা আগুন রোববার (৫ মে) দুপুর ২ টায় পুরোপুরি নেভেনি। তবে সকাল থেকে নৌ, বিমান, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও বনরক্ষীদের সব ধরনের প্রচেষ্টায় আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে দাবী করেছে বনবিভাগ।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী নুরুল করিম বলেন, রোববার সকাল থেকে সুন্দরবনের আগুন পুরোপুরি নেভাতে নৌ, বিমান, কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও বনরক্ষীরা কাজ শুরু করে।
নৌ বাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের অগ্নিনির্বাপক সদস্যদের পাশাপাশি বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার দিয়ে ওপর থেকে পানি ছিটিয়েও আগুন নেভানোর চেষ্টা চালানো হয়।
তার দাবী আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। আগুন লাগার পুরো ঘটনাস্থল ঘিরে ফায়ার লাইন কাটা হয়েছে। আগুন যাতে বিস্তৃত হতে না পারে সে ব্যবস্থা করা হয়েছে।
আগুন নেভানোর কাজে অংশ নেওয়া নৌ-বাহিনীর মোংলা ঘাঁটির ইঞ্জিনিয়ার অফিসার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আরাফাতুল আরেফিন জানান, আগুন কিভাবে লেগেছে তার কারণ অনুসন্ধানের চেয়ে আগুন নেভানো জরুরি।
তাই রোববার সকাল থেকেই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে সম্মিলিতভাবে সবাই কাজ করে যাচ্ছি। এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। আগামী তিন দিনের মধ্যে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
এর আগে সকাল ৯ টা থেকে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়ার ছিলা এলাকায় লাগা আগুন নেভাতে কাজ শুরু করেন তারা। শুরুতেই নৌ বাহিনীর মোংলা ঘাঁটির ১০ সদস্যের একটি অগ্নিনির্বাপক টিম আগুন নেভানোর কাজে নেমে পড়েন।
এরপর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা পাশের ভোলা নদী থেকে পানি উঠানোর জন্য পাইপ সংযোগ দিয়ে চারদিকে ফায়ার লাইন কাটেন। সেই আগুন নেভানোর এখন পর্যন্ত অব্যাহত আছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স বাগেরহাটের উপ-পরিচালক মামুন আহমেদ জানান, রোববার (৫ মে) সকালেই সুন্দরবনের আগুন নেভাতে তাদের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসেছে। এর মধ্যে মোংলা, মোড়েলগঞ্জ ও শরনখোলার তিনটি ইউনিট কাজ শুরু করেছে। বাকি দুটি ইউনিট স্ট্যান্ডবাই রাখা হয়েছে।
পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কাজী নুরুল করিম বলেন, গতকাল নানা প্রতিকূলতায় আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা যায়নি। তবে রোববার (৫ মে) সকাল থেকে এ কাজ শুরু করা হয়েছে। এতে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌ-বাহিনী, কোস্টগার্ড ও বিমান বাহিনীর একটি হেলিকপ্টার যোগ দিয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসীরাও সব রকমের সহযোগিতা করছেন।
আগুন ব্যাপক এলাকায় ছড়িয়ে যাওয়ার আগেই পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে বলেও জানান বনবিভাগের এই কর্মকর্তা।
এক প্রশ্নে ডিএফও কাজী নুরুল করিম বলেন, কী কারণে, কিভাবে এবং আগুন লেগেছে তার এখনও সঠিক কারণ বের করা যায়নি। তবে স্থানীয়রা একেকজন একেক তথ্য দিচ্ছে।
সব তথ্যই আমলে নিয়ে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বনসংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেবকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধার স্টেশন অফিসার মোঃ ওবায়দুর রহমান এবং ধানসাগর স্টেশন অফিসার মোঃ রবিউল ইসলাম। আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে আগুন লাগার সঠিক কারণের প্রতিবেদন জমা দেবেন এই কমিটি।
মেসেঞ্জার/হাসান/আপেল