ঢাকা,  রোববার
১৯ মে ২০২৪

The Daily Messenger

২০ দিনের শ্বাসরূদ্ধকর অভিযান

টেকনাফে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করল পুলিশ

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৮:২৬, ৫ মে ২০২৪

টেকনাফে চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করল পুলিশ

ছবি : মেসেঞ্জার

কক্সবাজারের টেকনাফে চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস মোস্তাক মিয়া হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। হত্যার পর পুলিশের টানা ২০ দিনের শ্বাসরূদ্ধকর অভিযানে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা আটক হন।

জিজ্ঞাসাবাদে আটকরা মোস্তাক হত্যার আদ্যেপান্ত বর্ণনা করেছেন পুলিশের কাছে। তবে এতো কম সময়ে চাঞ্চল্যকর ক্লু লেস একটি হত্যাকান্ডের মাস্টার মাইন্ডসহ জড়িতদের আটক এবং ঘটনার রহস্য উদঘাটন করায় স্থানীয় মানুষের ভূয়সী প্রশংসা কুড়িয়েছেন পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত মার্চ টেকনাফ পৌরসভাস্থ খায়ুকখালী খালে টমটম চালক মোস্তাক মিয়ার মৃতদেহ পড়ে থাকার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে গলায় মাটিভর্তি ভারী বস্তা বাঁধা অবস্থায় মৃতদেহটি উদ্ধার করে। নিহত টমটম চালক সাবরাং ইউনিয়নে কাটাবনিয়া এলাকার নুরুজ্জামানের ছেলে।

ঘটনার পর পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। পরে টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণির নেতৃত্বে পুলিশের একটি টিম গত ২৪ মার্চ ঘটনার মাস্টারমাইন্ডসহ জড়িত ছয় আসামিকে আটক করেন।

আটককৃতরা হল- মাস্টারমাইন্ড মো: আব্দুর রহিম (১৯), আব্দুল আমিন প্রকাশ পুতিয়া (১৬), ওমর ফারুক (২৪), ফরিদ আহমদ (৫০), সাদেকুর রহমান (২১) নুরুল আমিন (৪৩)

টেকনাফ মডেল থানার (ওসি) মুহাম্মদ ওসমান গনি বলেন, মোস্তাক হত্যা একটি চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস হত্যাকান্ড ছিল। ঘটনার পরপরই আমরা পুলিশ সুপার মহোদয়ের নির্দেশনায় জড়িতদের আটক ঘটনার রহস্য উদঘাটনে তৎপর হই।

বিষয়টি অনেকটা চ্যালেঞ্জিং হলেও আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করেছি। যার প্রেক্ষিতে আমরা ওই মামলার মাস্টারমাইন্ডসহ জড়িত ছয়জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি। বিজ্ঞ আদালতে তারা স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন। সেখানে তারা মোস্তাক হত্যার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা স্বীকার করেছেন।

ওসি মুহাম্মদ ওসমান গনি আরও বলেন, মোস্তাকের হত্যাকারী সবাই জেলা টমটম ছিনতাই চক্রের সদস্য ছিল। ঘটনার দিন চক্রের সদস্য আব্দুর রহিম টমটম চালক মোস্তাকের গাড়িটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে উপরের বাজার মন্দিরের সামনে থেকে যাত্রীবেশে ভাড়া করে। গাড়িটি অলিয়াবাদ কাড়ির মাথা পৌঁছালে চক্রের আরেক সদস্য আব্দুল আমিন প্রকাশ পুতিয়া জহির গাড়িটি থামার সংকেত দেয়।

ইয়াবা তল্লাশির নামে চালক মোস্তাককে নামিয়ে ফেলে এবং পরিকল্পিতভাবে দুইজনে মিলে মোস্তাককে হত্যা করে। পরবর্তীতে মরদেহের গলায় মাটিভর্তি বস্তা বেঁধে খালে পাড়ে ফেলে দিয়ে টমটমটি নিয়ে উখিয়ায় রওনা দেয়। সেখানে চক্রের আরেক সদস্য ওমর ফারুকসহ টমটমটি কোটবাজারের ফরিদের কাছে বিক্রি করে দেয়। এভাবে করে হত্যাকাণ্ডটিতে ছয়জনের সম্পৃক্ততা পেয়েছে পুলিশ।

টেকনাফ পৌরসভার অলিয়াবাদ এলাকার বাসিন্দা আব্দুল আমিন বলেন, সবার ধারণা ছিল গরীব টমটম চালকের হত্যাকারীদের ধরতে কেউ হয়তো গুরুত্ব দেবেননা, হত্যাকারীরা পার পেয়ে যাবেন। কিন্তু টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ যেটি দেখিয়েছে সেটি টেকনাফ থানার ইতিহাসে বিরল।

নিহত টমটম চালকের পরিবারের কোন ধরনের তদবির চেষ্টা ছাড়াই ওসি মুহাম্মদ ওসমান গণির নেতৃত্বে পুলিশের চৌকষ একটি টিম একমাস না হতেই ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে সক্ষম হন।

টমটম চালক নিহত মোস্তাকের ভাই মামলার বাদি মোজাহার বলেন, আমরা গরীব মানুষ, ভাইয়ের হত্যাকারীদের বিচার দুরে থাক, তাদের পরিচয় জানতে পারবো সেটিও কল্পনা করিনি।

কারণ ঘটনাটি কুল কিনারা খুঁজে পাওয়ার মতো ছিলনা। কিন্তু ওসি সাহেব দিনরাত পরিশ্রম করে শেষ পর্যন্ত সব আসামিকে আটক করেছে। পুলিশের প্রতি আমাদের সম্মান আস্থা আরো বেড়েছে।

মেসেঞ্জার/আলতাফ/আপেল

dwl

Notice: Undefined variable: sAddThis in /mnt/volume_sgp1_07/tp4l1yw3zz9u/public_html/bangla/details.php on line 768